রাগ নিয়ন্ত্রণের ১০টি কৌশল জেনে নিন

সুখ-দুঃখ, ভালোবাসা-ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ ইত্যাদির মতোই রাগ একটি আবেগ- যা মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে বিদ্যমান। অনেকেই বলেন আমার কোনো রাগ নেই! আমি রাগ করি না। কিন্তু একজন সুস্থ মানুষের মধ্যে রাগ থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

রাগ আমাদের স্বাভাবিক আবেগগুলোর মধ্যে একটি। রাগ না থাকলে আমরা টিকতে পারতাম না, রাগ না হলে আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারব না। কাউকে রাগ করতে দেখলে সেটা অন্যদের জন্য একটা সতর্ক সংকেত এবং বোঝার উপায় যে কিছু একটা ভুল হয়েছে।

রাগ কি!
রাগ একটি স্বাভাবিক আবেগ। যে কোনো বিপদ, অসন্তুষ্টি, বিরক্তি, শত্রুতা এবং সমস্যার প্রতি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সাড়া প্রদানকে রাগ বলে। এটা হতে পারে নিজের প্রতি, হতে পারে অন্যের প্রতি কিংবা অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের কোনো ইস্যু নিয়ে। আবার এ ইস্যুটা হতে পারে বাস্তব কিংবা কল্পনায়।

রাগের সময় আমাদের মধ্যে অনেক রকম লক্ষণ দেখা দেয় যেমন

শারীরিক লক্ষণ- রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, নিঃশ্বাস ছোট হয়ে আসা, পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, হাত কাঁপা, শরীর ঘামা, বিভিন্ন স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।

আচরণগত লক্ষ্মণ- যেমন দ্রুত কথা বলা, সমালোচনা করা, চিতকার দেয়া বা নিশ্চুপ হয়ে যাওয়া, ভাংচুর করা, অন্যকে আঘাত করা, নিজেকে আঘাত করাসহ আরও অনেক লক্ষ্মণ দেখা যায়।

রাগ কখন সমস্যা
যেমনটি বললাম রাগ সবার মধ্যেই আছে যেহেতু এটা একটি স্বাভাবিক আবেগ কিন্তু রাগ নিম্নোক্ত কারণগুলোর জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, তখন তাকে আগ্রাসন বলা হয়।

১। রাগ যখন তীব্র থেকে তীব্রতরভাবে অনুভূত হয়
২। রাগ যখন খুব ঘনঘন অনুভূত হয়
৩। রাগ যখন আক্রমণাত্মক বা অনুপযুক্তভাবে প্রকাশিত হয়।
৪। যখন রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং ধ্বংসাত্মক হয়ে যায়।

মানুষের আচরণের মধ্যে তিন রকমের আগ্রাসন দেখা যায়

১. প্যাসিভ অ্যাগ্রিসিভ: এখানে ব্যক্তি রাগ করলেও সেটা প্রকাশ করেন না, মনে মনে রাগটা পুষে রাখেন, কাউকে বুঝতে দেন না যে সে রেগে আছেন। কিন্তু এটার প্রভাব বিকল্পভাবে প্রকাশিত হয়ে থাকে এবং সেটা নেতিবাচক। আমাদের আশপাশে অনেকেই আছে যারা সচরাচর রাগে না, কিন্তু একবার রাগলে সেটা ভয়ংকরভাবে প্রকাশ পায়।

যেমন- অফিসের বসের ওপর কোনো কারণে আমরা রেগে গেলে সেটা প্রকাশ করতে পারি না। সবকিছু ঠিক আছে এ রকম একটা ভাব করে অবস্থান করার চেষ্টা করি। কিন্তু এ রকম করে রাগ পুষে রাখতে রাখতে একটা পর্যায়ে গিয়ে মারাত্মক এবং ধ্বংসাত্মকভাবে রাগটা প্রকাশিত হয়ে যায়।

২. ওপেন অ্যাগ্রিসিভ: এখানে ব্যক্তি কোনো রাখঢাক না করে আক্রমণাত্মকভাবে রাগ প্রকাশ করেন। শারীরিকভাবে, মৌখিকভাবে এরা খুবই আক্রমণনাত্মক হয়ে উঠে নিজেকে বা অন্যকে আঘাত করে। ঝগড়া করা, হুমকি দেয়া, অভিযোগ করা, চিতকার চেঁচামেচি করা, কটাক্ষ ও সমালোচনা করা, ব্লাকমেইলিং করা ইত্যাদি আচরণের মাধ্যমে এ ধরনের আগ্রাসন প্রকাশ পায়।

৩. অ্যাসারটিভ অ্যাংগার: রাগ প্রকাশের স্বাস্থ্যের উপায় এটা। নিজের রাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে আত্মবিশ্বাসী হয়ে রাগটা প্রকাশ করা। রাগের কারণটা ইতিবাচকভাবে অন্যকে বলতে পারা, আক্রমণাত্মক না হয়ে অন্যকে সম্মান করে রাগের কারণটা খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করা। ‘তুমিও ঠিক আমিও ঠিক’। এ রকম চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে এখানে। এতে করে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায়। এতে করে আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কগুলো সুন্দর থাকে।

অতিরিক্ত এবং অনিয়ন্ত্রিত রাগের জন্য অনেক নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায়। কথায় বলে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। অতিরিক্ত রাগের কারণে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অনেক ক্ষতিসাধন হয়ে থাকে। তাই রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের প্রত্যকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কিছু মানুষ অন্যদের চেয়ে বেশি রাগী কেন?

১। হতাশা সহ্য করতে না পারা
২.। বংশগত কারণ
৩। দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক সমস্যা
৪। দক্ষতার অভাব
৫। নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা
৬। ব্যক্তি মনে করে তার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে
৭। বাবা মা রাগী স্বভাবের হলে সেটা সন্তানদের মধ্যে ও প্রভাবিত হতে পারে।
৮। সামাজিক সাপোর্ট কম থাকা
৯। মাদকের ব্যবহার
১০। দুশ্চিন্তা এবং বিষন্নতা
১১। অর্থনৈতিক সমস্যা
১২। দাম্পত্য কলহ এবং যৌন হতাশা
১৩। উচ্চ বিলাসি, প্রতিযোগি মনোভাবাপন্ন, অধৈর্য ব্যক্তি
১৪। দীর্ঘ মেয়াদি চাপ যেমন বর্তমান করোনা অবস্থান

রাগের নিয়ন্ত্রণ

অতিরিক্ত এবং অনিয়ন্ত্রিত রাগ, জেদ, আগ্রাসনে মানব আচরণের ভয়ংকর দিক। রাগের বশবর্তী হয়ে একজন আরেকজনকে যেমন হত্যা করে তেমনি নিজেও আত্মহত্যা করতে পারে, নিজের হাত বা শরীর জখম করতে পারে, জেদের বশবর্তী হয়ে একটা সম্ভাবনাময় সম্পর্কের অবনতি বা যে কোনো ভালো সম্পর্ক খুব বাজেভাবে শেষ হয়ে যেতে পারে, আগ্রাসনের কারণে ভাংচুর করে সম্পদের বিনষ্ট হতে পারে। তাই এই অতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণ করাটা খুবই দরকার।

একজন ব্যক্তি কোন কোন জায়গায় কার কার সঙ্গে, কেন রাগ করে এ বিষয়গুলো বুঝতে পারলে রাগ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়ে যায়। রাগের সময় আমাদের স্বাভাবিক চিন্তা-ভাবনা কাজ করে না, ভালোমন্দ বোধটা থাকে না, কিন্তু রাগ স্বাভাবিক হয়ে গেলে তখন ব্যক্তি বুঝতে পারে যে রাগ করে যা করলাম তা সঠিক ছিল না।

জ্ঞানীয় এবং আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

জ্ঞানীয় চিকিৎসা

১. প্রস অ্যান্ড কনস (সুবিধা-অসুবিধা)

রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। এটা আমরা প্রায়ই বলে থাকি। আপনাকে রাগের ঘটনার পর চিন্তা করে দেখতে হবে যে আপনার রাগের কারণে কি কি লাভ হচ্ছে আর কি কি ক্ষতি হচ্ছে। ঠাণ্ডা মাথায় এটা চিন্তা করে আপনি সিদ্ধান্ত নেন রাগ করে আপনার সুবিধা হয় নাকি অসুবিধা হয়। স্বভাবতই আপনি দেখবেন যে অসুবিধাটাই বেশি। এটা বুঝতে পারলে পরবর্তীতে যেসব অবস্থানে বা যেসব ব্যক্তির সঙ্গে যেসব ইস্যু নিয়ে রাগ করেন সেটা সুন্দরভাবে এসারটিবলি ডিল করার চেষ্টা করতে পারবেন।

২. নিজের চিন্তাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করা

রাগ করার জন্য বা রাগ করাটা যৌক্তিক মনে করে আপনার নিজের কাছে নিজস্ব কিছু চিন্তা-ভাবনা বা কারণ আছে। ঠাণ্ডা মাথায় পরবর্তীতে ওই চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করুন। অন্যের অবস্থান থেকে সে চিন্তার সাথে কথোপকথন করুন। চিন্তাকে আপনি নিজেই অন্যের অবস্থানে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করুন। ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আপনার নিজস্ব চিন্তাকে পুনরায় আরেকবার লক্ষ্য করুন। আপনি যেটাকে সিক্স প্রত্যক্ষ করেছেন সেটা অন্যের অবস্থান থেকে নাইন হতে পারে। এভাবে চিন্তা করলে অন্যের মতামতের প্রতি ও সম্মান চলে আসবে যাতে করে পরবর্তীতে রাগের বহিঃপ্রকাশ ইতিবাচক হবে।

৩. বিকল্প চিন্তা-ভাবনা

বিকল্প চিন্তা করুন। আপনি যেটা চিন্তা করছেন বা আপনি নিজে যেভাবে ঘটনা প্রত্যক্ষ করছেন সেটা ভিন্নভাবে চিন্তা করলে হয়তোবা আপনার রাগের পেছনে যৌক্তিক কোনো কারণ নাও থাকতে পারে। একই ঘটনার পেছনে একাধিক ইতিবাচক বা নেতিবাচক কারণ থাকতে পারে। বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ বিভিন্নভাবে একই ঘটনাকে ব্যাখ্যা করবে। কাজেই আমি যা চিন্তা করছি সেটাই যে একমাত্র চিন্তা সেটা মনে করা সমীচীন নয়। তাই বিকল্প চিন্তা করে রাগের ঘটনার সামগ্রিক দিক দেখতে পারলে পরবর্তীতে সেটা নিয়ে রাগের আক্রমণাত্মক বহিঃপ্রকাশ কমে আসবে।

৪. অন্যদিকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়া

কোন ঘটনায় কোন ব্যক্তির সঙ্গে যখন রাগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তখন নিজের মনোযোগ বা চিন্তাকে অন্যদিকে ধাবিত করা। অর্থাৎ মানসিকভাবে আপনার চিন্তা-ভাবনা বা মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে নিজেকে দূরে রাখা। এখানে আপনি ছাড় দিচ্ছেন কিন্তু ছেড়ে দিচ্ছেন না। শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিজের মনোযোগ অন্যদিকে ধাবিত করছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঠাণ্ডা মাথায় এ ইস্যু নিয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে আপনার মতামত বা আপনার অবস্থান শেয়ার করলে সে হয়ত তার ভুল বুঝতে পেরে আপনাকে সরি বলতে বাধ্য হবে।

৫. সমস্যার সমাধান

এটা হলো কোনো একটা সমস্যায় পড়লে সে সমস্যার সমাধানের জন্য নিজের দক্ষতাগুলো কাজে লাগানো। সমস্যা চিহ্নিত করা, সমস্যার ধরণ বোঝা, সমস্যার যথাযথ মূল্যায়ন করা, বিকল্প সমাধানের পথ চিন্তা করা এবং সে অনুযায়ী ঠাণ্ডা মাথায় সে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা। নিজে সমস্যাটা না বুঝতে পারলে বিশ্বস্ত কারও সহযোগিতা নেয়া। অর্থাৎ আপনার মনোযোগ ব্যক্তিকেন্দ্রিক না হয়ে সমস্যা কেন্দ্রিক হলে রাগের আক্রমণাত্মক বহিঃপ্রকাশ ঘটবে না।

আচরণগত কিছু পদ্ধতি

১. রিলাক্সেশন

রিলাক্সেশনের মাধ্যমে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রাগের সময় আমাদের শরীরের কিছু স্ট্রেস হরমোন নিসৃত হয়। রিলাক্সেশন করলে সেটাতে সামঞ্জস্যতা চলে আসে। সাধারণত তিনভাবে রিলাক্সেশন করা যায়, সহজটা হলো শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে রিলাক্স হওয়া। যে অবস্থায়ই আপনি থাকুন না কেন এ পদ্ধতিতে চেষ্টা করতে পারেন। সেটা হলো নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস টেনে পেটের দিকে নিয়ে ৪-৫ সেকেন্ড ধরে রেখে পরে দুই ঠোঁটের মাঝ দিয়ে আস্তে আস্তে নিশ্বাস ছেড়ে দেয়ার অভ্যাস করা।

এরপরে আরেকটা পদ্ধতি হলো মাংস পেশির পর্যায়ক্রমে শিথিলকরণ। আরামদায়ক পজিশনে বসে মাথা থেকে পা পর্যন্ত মাংস পেশিগুলোকে শক্ত করে ৪-৫ সেকেন্ড পর স্বাভাবিক করা এবং দুই অবস্থার পার্থক্য অনুভব করা।

২. যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ানো

যারা রাগী মানুষ তারা সাধারণত অন্যের কথা শুনতে চায় না। কেউ কথা শেষ করার আগেই রাগী ব্যক্তি একটা নেতিবাচক সিদ্ধান্তে চলে আসে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে যেটা তাকে আরও রাগিয়ে তোলে। তাই মানুষের কথা আগে পুরোটা শুনতে হবে, মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। আগেই কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। কেউ আপনার সম্পর্কে খারাপ বলছে। এটা শুনেই রেগে না গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন।

কী বলল, কেন বললো, বলার উদ্দেশ্য কী সেটা জানার চেষ্টা করুন। কেউ যদি আপনাকে মিথ্যা অপবাদ দেয় তাহলে ২টা কারণ থাকতে পারে। এক. ওই ব্যক্তি আপনার সম্পর্কে না জেনে অসত্য কথা বলেছে। দুই, আপনার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। এখানে ওই ব্যক্তির দোষ। আপনার নয়। তার দোষে আপনি কেন রাগ করবেন? সবসময় নিজের আবেগ নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণের চাবিটা নিজের হাতেই রাখুন। অন্য কাউকে আপনার আবেগকে রেগুলেট করতে দেবেন না।

৩. রসবোধে বাড়ান

সবসময় সিরিয়াস না থেকে মাঝে মাঝে মজা করুন, কৌতুক করুন, পরিবেশকে হালকা করুন। রাগের একটা অবস্থান তৈরি হচ্ছে বুঝতে পারলে সেটা স্বাভাবিক করার জন্য মজার কিছু করার চিন্তা করুন। যে ব্যক্তির উপর রেগে আছেন তাকে মনে মনে কোনো একটা কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে কল্পনা করুন। এতে করে আপনার রাগটা কমে আসবে।

৪. পরিবেশ পরিবর্তন করা

সম্ভব হলে দ্রুত রাগের পরিবেশ থেকে নিজেকে আলাদা করুন। যদি বুঝতে পারেন আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে তখন দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করুন। এটা অনেকটা নিজেকে টাইম আউট করার মতো।

৫. মেনে নেয়া

সব সমস্যার সমাধান হয় না, কিছু প্রশ্নের উত্তর হয় না, কিছু ঘটনার ব্যাখ্যা হয় না, যে চলে যাবার সে যাবেই। তাই মেনে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ান। মেনে নেয়া মানেই হেরে যাওয়া নয়। মন যেহেতু আছে তাই মাঝে মাঝে মন খারাপ হতেই পারে। এটা মেনে নিন। আমাদের জীবনে অপ্রাপ্তির পাশাপাশি অনেক প্রাপ্তি ও আছে, সেদিকে মনোযোগ দিন। আশা করি মন ভালো থাকবে।

৬. রাগ না হওয়ার প্রতিজ্ঞা করুন

যাই কিছু হোক বা না হোক। আমি রাগবো না। এ প্রতিজ্ঞাটা নিজেই নিজের কাছে করুন। যখন রাগের কোনো পরিস্থিতি তৈরি হবে তখন মনে মনে নিজেকে ম্যাসেজ দিতে থাকুন যে আমি রাগবো না, আমি শান্ত থাকবো। আশা করা যায় নিজেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকলে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

৭. ইতিবাচক চিন্তা করুন

প্রতিটি ঘটনার একটা ভালো দিক আছে সেটা চিন্তা করে বের করুন। গ্লাসের যে অর্ধেক পানি নেই সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে যতটুকু পানি আছে সেটা দিয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করুন। যাই কিছু ঘটুক তার নেতিবাচক দিক না খুঁজে ইতিবাচক দিক খেয়াল করুন। জীবনের প্রতিটি ঘটনাই কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতায় যুক্ত হয় যেটা পরে ঠিকই কাজে লাগবে।

৮. ক্ষমা করে দিন

ক্ষমা মহৎ গুণ, এটা আমরা সবাই জানি। প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কখনও ভালো কিছু হয় না। যার উপর আপনি রেগে আছেন সে হয়ত আপনাকে নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয়। অথচ আপনি সেই ব্যক্তিকে নিয়ে নিজের মনে রাগ পুষে রেখে নিজেই কষ্ট পাচ্ছেন। তাই মনে রাগ হিংসা বিদ্বেষ পুষে না রেখে মন থেকে ক্ষমা করে দিন, এতে করে আপনি নিজেই শান্তি পাবেন।

৯. সংখ্যার গণনা করা

কোনো কারণে রেগে গেলে বা রাগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মনে মনে উল্টো করে সংখ্যা গণনা করতে পারেন। যেমন ১০০, ৯৯, ৯৮… এতে করে আপনার মনোযোগ ওই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে সরে আসবে।

১০. মনোবিজ্ঞানীদের সাহায্য নেয়া

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো চেষ্টা করেও যদি রাগ নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারেন তাহলে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানীদের সহায়তা নিতে পারেন। সাইকোথেরাপির মাধ্যমে রাগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল আয়ত্ব করতে পারবেন।

শারীরিক অক্ষমতার কারণ ও প্রতিকার

পুরুষের শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতা অথবা পুরু/ষত্ব হীনতা আজকাল প্রকট আকার ধারণ করছে। একদম তরুণ থেকে শুরু করে যে কোন বয়সী পুরুষের মাঝে দেখা যাচ্ছে এমন যৌ/ন সমস্যা।

অনেক পুরুষ অকালেই হারিয়ে ফেলছেন নিজের সক্ষমতা, উঠতি বয়সের যুবকরা রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়ছেন। বাড়ছে দাম্পত্যে অশান্তি, সন্তানহীনতার হার এবং সত্যি বলতে কি বাড়ছে ডিভোর্সও।

 

কিন্তু কারণ কি পুরুষদের এই ক্রমশ শারীরিকভাবে অক্ষম বা দুর্বল হয়ে যাওয়ার পেছনে? কারণ লুকিয়ে আছে আমাদের বর্তমানের আধুনিক জীবনযাত্রার মাঝেই।

হ্যাঁ, আপনার প্রতিদিনের স্ট্রেসভরা অস্বাস্থ্যকর জীবন, আপনার নিজের কোনও একটা ভুলই হয়তো আপনাকে ক্রমশ ঠেলে দিচ্ছে পুরুষত্বহীনতার দিকে। অথবা হতে পারে আপনার শরীরে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে যৌ/ন হরমোনের পরিমাণ, যা আপনার সংসারকে করছে অশান্তিময়।

কেন এমন হচ্ছে সেটা জানার আগে জানতে হবে পুরুষের একান্ত দুর্বলতাগুলো কী কী বা কেমন হতে পারে। তা জেনে নিলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, আপনার সমস্যাটা কোথায়।

শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতার বিষয়টিকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-

১. ইরেকশন ফেইলিউর : পুরুষ লি/ঙ্গের উত্থানে ব্যর্থতা। এতে করে লিং/গের উত্থানে সমস্যা তৈরি, যাতে করে দীর্ঘদিন যাবত লিং/গ গরম হয় না এবং সহ/বাসের উপযোগী হয় না।

২. পেনিট্রেশন ফেইলিউর : লি/ঙ্গের যো/নিদ্বার ছেদনে ব্যর্থতা, বা যো/নিতে প্রবেশের মত পর্যাপ্ত উথিত না হওয়া। এতে করে মাঝে মাঝে লিং/গ উত্থিত বা গরম হয় আবার গরম হয়েও শীতল হয়ে যায়। আবার গরম হলেও স্ত্রী যো/নীতে প্রবেশ করা মাত্রই তা নরম হয় যায়, ফলে সংসারে বাড়ে অশান্তি। বিবাহ বিচ্ছেদ বাড়তে থাকে।

৩. প্রি-ম্যাচুর ইজাকুলেশন : সহ/বাসে দ্রুত বী/র্য-স্খলন, তথা স্থায়িত্বের অভাব। এতে করে পুরুষের লিং/গ গরম হলেও তা খুব দ্রুতই পতন হয় বা বী/র্য আউট হয়ে যায়। তাতে নারী এবং কেউ পরম সুখলাভ করতে পারে না।

এ সমস্যার জন্য নাইট কিং পাউডার ও সিরাপ বেশ কার্যকরী ঔষধ। এই ঔষধ সেবনে উপরোক্ত সমস্যার সমাধান হবে, ইনশাল্লাহ।

কারণগুলি কি কি হতে পারে ?

প্রাকৃতিক বা শারীরিক কারণগুলোর মাঝে মুখ্য হলো-

১. ডায়াবেটিস,

২. লি/ঙ্গে জন্মগত কোনওপ্রকার ত্রুটি,

৩. সে/ক্স হরমোনের ভারসাম্যহীনতা,

৪. গনোরিয়া বা সিফিলিসের মত যৌ/নরোগ ইত্যাদি।

তাছাড়াও প্রাকৃতিক শারীরিক সমস্যা ছাড়াও প্রচণ্ড কাজের চাপ, মানসিক অশান্তি, দূষিত পরিবেশ, ভেজাল খাওয়া দাওয়া, কম বিশ্রাম ও ব্যায়াম ছাড়া অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ইত্যাদি অনেক কারণই আছে ক্রমশ যৌ/ন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পেছনে।

আবার অতিরিক্ত যৌ/ন সম্পর্কে যাওয়া, অতিরিক্ত মা/স্টার/বেট বা হ/স্তমৈ/থুন করা, যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হাবিজাবি ওষুধ সেবন ইত্যাদি কারণকে অবহেলা করলেও চলবে না।

এছাড়া বয়স জনিত অসুস্থতা, সঙ্গিনীর সাথে বয়সের পার্থক্য বা সঙ্গিনীকে পছন্দ না করা, এইডসভীতি, পর্যাপ্ত যৌ/ন জ্ঞানের অভাব, ত্রুটিপূর্ণ যৌ/নাসনও অক্ষমতা বা দুর্বলতার জন্য দায়ী হতে পারে।

কী কি করবেন ?
প্রথমেই যা করবেন, সেটা হলো নিম্নোক্ত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। লজ্জা না করে নিজের সমস্ত সমস্যা খুলে বলুন ও ডাক্তারের পরামর্শ মত প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা নিন।

এতে লজ্জার কিছুই নেই। একটাই জীবন। লজ্জার চাইতে নিজেকে সুস্থ ও সক্ষম রাখা জরুরী। তাই দ্বিধাহীন চিত্তে যোগাযোগ করুন। আপনার সমস্যা অনুসারে আপনাকে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হবে।

আপনার ডায়াবেটিস থাকলে প্রয়োজনীয় সকল নিয়ম কানুন মেনে চলুন।
নিজের জীবনধারাকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনে বদলে ফেলুন। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান, চেষ্টা করে কাজের চাপের মাঝেও বিশ্রাম নিতে। আপনার শরীর যখন সুস্থ ও সক্ষম থাকবে, যৌনজীবনও থাকবে সুন্দর।

সঙ্গীর সাথে রোমান্টিক জীবনের উন্নতি করুন। এক ঘেয়ে যৌ/ন জীবনে নানান রকমের চমক ও আনন্দ নিয়ে আসুন। তাঁকেও বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন যে নতুন চমক এলে আপনার মানসিকভাবে সাহায্য হবে। রোমান্টিক বেডরুম, আকর্ষণীয় অন্তর্বাস, সে/ক্স টয় ইত্যাদি এসব ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।

যদি সঙ্গীকে অপছন্দ করার কারণে সমস্যা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন সঙ্গীকে ভালবাসতে। তার সাথে দূরে কোথাও নিরিবিলি বেড়াতে যান, তাঁকে গভীর ভাবে জানার চেষ্টা করুন। আস্তে আস্তে তার প্রেমে পড়ার চেষ্টা করুন।

মানসিকভাবে প্রেমে পরলে শরীরটাও সাড়া দেবে। একটা জিনিষ মনে রাখবেন, বাস্তবের নারীর সাথে সিনেমার নায়িকা বা প/র্ণ স্টারদের মিল খুঁজতে যাবেন না। নিজের দিকে তাকান, নিজের সাধারণত্ব দেখুন। দেখবেন, সঙ্গীকেও আর খারাপ লাগছে না।

কী করা উচিত নয় ?
অতিরিক্ত মাস্টারবেট করার অভ্যাস অবিলম্বে ত্যাগ করুন। আর যাদের স্ত্রী আছে তাঁরা স্ত্রীর সাথেই যৌ/নজীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন।

বাজারে সাময়িকভাবে যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর কিছু ওষুধ পাওয়া যায়, যেগুলো সেবনে ২৪ ঘণ্টার জন্য যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ে। এইধরনের ওষুধ মোটেও ব্যবহার করবেন না। এতে সাময়িক ক্ষমতা বাড়লেও, ক্রমশ আসলে ক্ষমতা কমতেই থাকবে।

যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। তাই প্রথমেই আমাদেরকে বুঝতে হবে যৌ/ন রোগ কী?

যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমন :

১. সহ/বাসে অসমার্থতা।

২. দ্রু/ত বী/র্যপাত।

৩. অসময়ে বী/র্যপাত।

৪. সহ/বাসের আগেই বী/র্যপাত। অর্থাৎ নারীদেহ কল্পনা করলেই বী/র্যপাত হয়ে যাওয়া।

৫. প্রস্রাবের সাথে বী/র্যপাত।

৬. প্রস্রাবের বেগ হলেই বী/র্যপাত। স্বপ্নদোষ। মেহ রোগ।

৭. যৌ/নবাহিত রোগ। যেমন. গনোরিয়া, ক্লামিডিয়া, হার্পিস ইত্যাদি।

ওপরের ছয় নম্বর পর্যন্ত রোগের চিকিৎসা এক প্রকারের। আর তা হচ্ছে : নাইট কিং নিয়মিত সেবন করা। কয়েক মাস সেবন করলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

নাইট কিং খুব ভালো মানের ঔষধ। যা সেবন আপনি দ্রুত বী/র্যপাত থেকে মুক্তি পাবেন। আর সাত নম্বর রোগগুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে দীর্ঘদিন যাবত ঔষধ সেবন করতে হবে।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে ঔষধ ডেলিভারী দেওয়া হয়।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

হাকীম মিজানুর রহমান 

(ডিইউএমএস)

হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার

একটি বিশ্বস্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।

মুঠোফোন🙁চিকিৎসক)

01762-240650

(সকাল দশটা থেকে রাত্র দশটা। নামাজের সময় কল দিবেন না।)

ই-মেইল : ibnsinahealthcare@gmail.com

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

শ্বেতীরোগ একজিমাযৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

আরও পড়ুন: বীর্যমনি ফল বা মিরছিদানার উপকারিতা

আরো পড়ুন : অর্শ গেজ পাইলস বা ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা

আরো পড়ুন :  নারী-পুরুষের যৌন দুর্বলতা এবং চিকিৎসা

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকারে শক্তিশালী ভেষজ ঔষধ

আরো পড়ুন : দীর্ঘস্থায়ী সহবাস করার উপায়