জাহান্নাম ও তার শাস্তির বর্ণনা

রফিকুল ইসলাম (রানা) :

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার।আর এজন্যই আমরা তার প্রশংসা করি। তার নিকট সহায্য,ক্ষমা,প্রার্থনা এবং সর্বদা তাহারই উপর ভরসা রাখি।আমরা মহান প্রভুর নিকট আশ্রয় কামনা করছি।আমাদের নফসের অন্যায় আচরণ এবং খারাপ আমলের অনিষ্ট হতে।

বস্তুতঃ-মহান আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারেনা।আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন পৃথবীতে এমন কেউ নেই যে তাকে হেদায়েত করবে।

হে প্রিয় বন্ধুগণ!
মহান আল্লাহ আপনাদেরকে জাহান্নাম হতে ঐ রূপ দূরত্বে রাখুন,যেমন দূরত্ব রয়েছে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মাঝে। আপনারা আল্লাহর আদেশ সমূহ প্রতিপালন ও নিষেধ সমূহ বর্জন করে,জাহান্নাম হতে পরিত্রাণের চেষ্টা করুন। জাহান্নামের ভয়ানক অবস্থা ও কঠিন শাস্তির ব্যাপারে বহু সংখ্যক আয়াত ও বিভিন্ন হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সেগুলো নিম্নরূপ উল্লেখ করা হলোঃ-

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ- নিশ্চয়ই জাহান্নাম অপেক্ষায় থাকবে-সীমালঙ্ঘনকারীদের আশ্রয়স্থল-রূপে!তারা তথায় শতাব্দীর পর শতাব্দী অবস্থান করবে! তারা তথায় কোন শীতল এবং পানীয় আস্বাদন করবে না! কিন্তু,ফুটন্ত পানি ও পুঁজ পাবে।
(সূরা নাবাঃ- ২১-২৫)।

আর যারা বলে হে আমার পালনকর্তা!
আমাদের কাছ থেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও,
নিশ্চয়ই এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ।
বসবাস ও অবস্থানস্থল হিসেবে তা কতই না নিকৃষ্ট জায়গা।
(সূরা ফুরকানঃ৬৫-৬৬)।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণিত,রাসূল (সাঃ)-বলেনঃ-
হতভাগা ছাড়া কোন ব্যক্তি দোযখে যাবে না।
রাসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, হতভাগ্য কে?

তিনি বলেনঃ-যে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য অনুগত্য করে না এবং তার নাফরমানীর কাজ বর্জন করে না। (ইবনে মাজাহ)।

হযরত নো’মান ইবনে বশির (রাঃ)-হতে বর্ণিত,রাসূল (সাঃ)-বলেনঃ- দোযোখবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ঐ ব্যক্তির হবে যাকে আগুনের ফিতাসহ দু’খানা জুতা পরানো হবে।
এতে তার মাথার মগজ এমনিভাবে ফুটতে থাকবে, যেমনি ভাবে গরম পানিতে পাত্র ফুটতে থাকে। সে ধারণা করবে তার চেয়ে অধিক কঠিন আজাব আর কেউ ভোগ করছে না,অথচ সে হবে সবচেয়ে সহজ শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তি।
(বোখারী-মুসলিম)।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণিত,রাসূল (সাঃ)-বলেনঃ- দোযখের আগুনকে প্রথমে এক হাজার বছর প্রজ্বলিত করা হয়েছে,এতে তা লাল রং ধারণ করেছে,তারপর এক হাজার বছর প্রজ্বলিত করা হয়েছে ফলে তা সাদা রং ধারণ করেছে।
তারপর এক হাজার বছর প্রজ্জ্বলিত করা হয়েছে অবশেষে তা কালো রং ধারণ করেছে।সুতরাং এখন তা ঘোর অন্ধকার কালো অবস্থায় রয়েছে।
(তিরমিজি)।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)-হতে বর্ণিত,রাসূল (সাঃ)-বলেনঃ-দোযখীদের গলিত-কদর্য পুজের এক বালতি দুনিয়াতে ঢেলে দেওয়া হয়,তাহলে তা গোটা দুনিয়াবাসীকে দুর্গন্ধময় করে দিবে।
(তিরমিজি)।

সুতরাং আমাদের উচিত মহান আল্লাহ তায়ালা কে যথাযথভাবে ভয় করা,এবং পরিপূর্ণ দ্বীনের পথে অবিচল থেকে পূর্ণাঙ্গ মু’মিন হয়ে মৃত্যুর স্বাদ নেওয়া। তাহলেই আমরা জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি পাবো ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহুম্মা আমিন।

You might like