সম্পাদকীয়
শিক্ষা গুরুর মর্যাদা কবিতাটি অনেক আগেই আমরা পড়েছিলাম, যা’ পাঠ্য হিসেবে একসময় ছিলো। মর্যাদা ও সম্মানের আসনে আমরা শিক্ষকদেরকে রাখি। সময় চলে যায়, যুগেরও চাহিদা পাল্টায়। তাই বলে পরস্পরের প্রতি সম্মান মর্যাদাবোধ কেন হারিয়ে যায়। তার উপর একজন শিক্ষকের, যিনি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেন মানুষের মাঝে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকের চেয়ার বসে আছে ১৪-১৫ বছর বয়সী এক ছেলে। সোশ্যালে মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরপরই ছবিটি ভাইরাল হয়। গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।
আমরা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম, বুধবার বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে দেবীদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধানশিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে। পরে প্রশাসনের সহায়তায় বিদ্যালয় ত্যাগ করেন প্রধানশিক্ষক। এর পরপরই ইকরামুল হাসান নামের এক ছাত্র প্রধানশিক্ষকের চেয়ারে বসে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যায়, প্রধানশিক্ষকের টেবিলের ওপর থাকা নেমপ্লেট হাতে নিয়ে তার চেয়ারে বসে আছে ইকরামুল। ওই সময় তার পরনে স্কুল ড্রেস ছিলো না। এছাড়া ছবিতে তাকে ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি। পরে ওই ছবি সে নিজের ফেসবুকে আপলোড করলে তা’ পরবর্তীতে ভাইরাল হয়। সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞানবিভাগের ছাত্র ইকরামুলের এমন কাণ্ড নিয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ। এ ঘটনায় শুক্রবার ঐ ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
তিনি বলেন, প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। কিন্তু প্রধানশিক্ষক অফিস থেকে বের হওয়ার পর তারই ছাত্র চেয়ারে বসে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেয়ার যে ক্ষমাহীন ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেবো। এমন আচরণ মেনে নেয়া যায় না। কোনো বিবেকবান ও সুস্থ ছাত্র এটা করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার মুখে নিজের ফেসবুক থেকে ছবিটি সরিয়ে ফেলেছে ছাত্র ইকরামুল হাসান। সেই সঙ্গে এমন ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে ইকরামুল বলেন, ‘সবাই অফিস কক্ষ ত্যাগ করার পর আবেগে চেয়ারে বসে ছবি তুলি, এটা আমার ঠিক হয়নি। সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’
আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের এমন দৃষ্টতা নিয়ে নেটিজেনরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এটাকে আমরা কারো ইন্ধন হিসেবেও নিতে পারি। অথবা চারিদিকে আন্দোলনের কারণে প্রশ্রয় পেয়ে এভাবে শিক্ষকদের অপমান করার মতো দু:সাহস দেখিয়েছে। কেননা অভিযোগ তদন্তের আগেই পদত্যাগে বাধ্য করা দেশে এখন যেন একটি রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে আমরা প্রতিনিয়ত সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারছি।
আমাদের কথা হলো, কোনো শিক্ষক যদি অপরাধে জড়িত থাকে তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীরা বা ছাত্র-ছাত্রীদের ইন্ধন দিয়ে এভাবে অপমান করার প্রতিফলন ভবিষ্যতে শিক্ষক সমাজের জন্যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। তাছাড়া এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে অপমান করা হলে শিক্ষক সমাজের সম্মান থাকবে না। অপরদিকে ছাত্র-ছাত্রীরাও শিক্ষকদের মান্য করবে না বা সম্মানের জায়গায় রাখবেন না। পরিণতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়তে পাড়ে বলে আমরা মনে করছি।
মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪
স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?
ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ
শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা
যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায় কি?