

সম্পাদকীয়
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘আমরা কি শিক্ষকের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারছি!’-এ কথাটি আসতেই পারে। কেউ কেউ মনে করছেন, অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষক সঙ্কটে ভুগবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষক পেশায় এগিয়ে আসবে না মেধাবীরা। এমনিতেই আমরা চারিদিকে দেখতে পাচ্ছি যে, শিক্ষক সঙ্কটে প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন বছর পড়ে আছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে ১০ জন শিক্ষকের জায়গায় দুই/তিন জন শিক্ষক দ্বারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলছে। এটাকে আমরা ক্রান্তিকালও বলতে পারি!
অপরদিকে শিক্ষকদের যেভাবে অপদস্তের মতো ঘটনা ঘটছে, তাতে সামনের দিনগুলোতে আরো শিক্ষক সঙ্কট দেখা দেবে-তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা জানি, শিক্ষকরা হলেন সমাজ সংস্কারক। তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজকে আলোকিত করেন। দরিদ্রের কষাঘাতে মানবেতর জীবনযাপন করলেও তারা গড়ে তোলেন শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। এভাবে তৈরি হয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, বড়-ছোট আমলা, ডাক্তার, প্রকৌশলী, বিচারক, উকিলসহ স্বনামধন্য ব্যক্তিরা। ইদানিং শিক্ষকদের মারধর, হাতুড়িপেটা, জুতার মালা পরিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করার কিছু ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন স্থানে।

শিক্ষকরা এ সমাজেরই মানুষ। তাদের দোষ-ত্রæটি থাকা অস্বাভাবিক নয়। রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে বিচার না করে শিক্ষার্থী তথা বখাটে জনগোষ্ঠী দ্বারা মতাদর্শের কারণে তাদের অপমান করা কাম্য নয়। রাষ্ট্রের সচিব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সর্বস্তরের কর্মচারী যখন যে সরকার আসে তাদের অনুগত থাকা ছাড়া পেশাগত দায়িত্ব নির্বিঘেœ পালন করতে পারেন না। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা যে দল বা গোষ্ঠীর, শিক্ষকরা তার অনুগত না হলে স্বভাবতই পেশাগত দায়িত্ব পালন করা তাদের পক্ষে কঠিন হয়।
আমরা বলতে পারি যে, শিক্ষকদের অপমান করে স্কুল থেকে বের করে দেয়া কতোটা যুক্তিযুক্ত! যে কেউ হোক না কেনো যে কাউকে দেশের প্রচলিত আইনে বিচারের মুখোমুখি করে শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু সেখানে বখাটে অথবা ছাত্রদের দ্বারা শিক্ষক লাঞ্ছিত হবেন এটা কতোটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে! শিক্ষকদের সম্মানের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে এনে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
অতএব, এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার অভাবে ভুগবে জাতি-আমরা সে পর্যায়ে যেতে চাই না। আমরা চাই, মেধাবীরাই থাকুক শিক্ষক হিসেবে। আর তারাই মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে উঠুক!
আমরা চাই, রাজনৈতিক বলয় থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা শিক্ষকদের মুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হোক। শিক্ষকরা দেশ ও জাতি গড়ার কারিগর। চরম অপমানে আজ তাদের কারও কারও মর্যাদা ভ‚লুণ্ঠিত। এটা দেশ ও জাতির জন্যে একটি অশনিসংকেত বৈকি!
শিক্ষকদের মর্যাদা ফিরে পেতে হলে অহেতুক তোষামোদি বন্ধ করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল থেকে দূরে রাখতে হবে। তারা দেশ ও জাতির সম্মানিত ব্যক্তি। সব শিক্ষকের মর্যাদা হোক প্রথম শ্রেণির। আজকের দিনে শিক্ষকদের মনোকষ্টের কারণ হলো এই অপমান, ঘৃণ্য কর্মের প্রতিবাদে শিক্ষক সমাজের নীরবতা। চেতনা ফিরে আসুক শিক্ষকসহ গোটা জাতির, এটাই প্রত্যাশা।
বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?
ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ
শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা
যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায় কি?
