প্রিয় সময় নিউজ ডেস্ক :
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?
ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ
শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা
যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায় কি?
ভয়ে ভুয়া সার্টিফিকেটধারীরা
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিতে কারা, তথ্য দিচ্ছে না কিছু মন্ত্রণালয়-বিভাগ
স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় গ্রেড অনুযায়ী কতজন সরকারি চাকরি পেয়েছেন এ সংক্রান্ত তালিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হলেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের সহযোগিতা পাচ্ছে না মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি পাওয়াদের তথ্য দিতে কিছু মন্ত্রণালয়/বিভাগ গড়িমসি করছে। এতে করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে বিড়ম্বনা। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের চাহিদা অনুযায়ী ৬২টি মন্ত্রণালয়/বিভাগে চিঠি দিলেও এ পর্যন্ত ৫২টি থেকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যও কাক্সিক্ষত ছক অনুযায়ী পাঠায়নি অনেকে। তবে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়ার পর কেউ ভুল তথ্য বা ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করে চাকরি নিলে তাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়।
সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরির সংখ্যা কত এবং এখানে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর উদ্যোগ নেয় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ আগস্ট সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবহার করে কতজন চাকরি পেয়েছেন, সে তালিকা চেয়ে সব মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সব মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তরে চিঠি দিয়ে কোটায় চাকরিপ্রাপ্তদের ক্যাডার-নন ক্যাডারসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা চাওয়া হয় চিঠিতে। মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ৫২টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ থেকে ২০ হাজারের বেশি চাকরিদাতার তথ্য পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়।
মূলত মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের তথ্যভিত্তিক পরিসংখ্যান তৈরি, অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে বীর মুক্তিযোদ্ধার নথি যাচাইসহ একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধ না করে যাঁরা মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। একটা নির্ভুল ডেটাবেজ সম্পন্ন করতে চায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, অনেকেই বিগত দিনে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বা ভুয়া সার্টিফিকেটে সরকারি চাকরি নিয়েছেন। মূলত সেসব চাকরিজীবীই সরকারের এমন সিদ্ধান্তে ভয়ে আছেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-২) মো. আবু আউয়াল স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে একটি ছক উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তির নাম, পদবি ও শ্রেণি উল্লেখসহ বিস্তারিত তথ্য দিতে বলা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম গত ১৪ আগস্ট দায়িত্ব নিয়ে সেদিনই মুক্তযোদ্ধা কোটার আওতায় চাকরি পাওয়াদের তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ দেন। এরপর প্রথম দফায় চিঠি দিলেও কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যায়নি অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ক্ষেত্রে। পরে গত ২৯ আগস্ট ফের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে তাগিদ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও নির্দিষ্ট সময়সীমার এক মাস পরও সব মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে বিষয়টি তদারকি করতে আট সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের সদস্যরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে বারবার তাগিদ দিচ্ছেন।
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি তথ্যের অগ্রগতি সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা দুই দফায় সব মন্ত্রণালয়-বিভাগসহ ৬২টি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরির তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এ পর্যন্ত মন্ত্রণালয়-বিভাগের ৫২টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছি। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরও আমরা তাদের তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্বভাগ করে দিয়েছি যেন তারা ফোনে যোগাযোগ রেখে তথ্যগুলো সংগ্রহ করে নিতে পারে। আর বিসিএস কর্মকর্তাদের মধ্যে ২২ ব্যাচের আগেরগুলো ম্যানুয়ালি তথ্য সংগ্রহ করা হতো, সেগুলো এখনো পাইনি। তবে ২২ ব্যাচের পর থেকে ৩৯ পর্যন্ত তথ্য পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব বলেন, এটা একটা ভালো উদ্যোগ এ কারণে এতে একটা হিসাব থাকবে। কোটা ইস্যুতে একটা আন্দোলন হলো। এই তথ্য পেলে জানা যাবে মোট কতজন এই কোটায় চাকরি পেয়েছে। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন বলেই আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। কোটার ইস্যুতে নানারকম কথা হয় বিষয়টি আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যও অসম্মানজনক। তবে ডেটাবেজ হলে তখন বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার। কারও নামে অভিযোগ উঠলে বা মিথ্যা সার্টিফিকেটের তথ্য পেলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এ বিষয়ে সচিব আরও বলেন, আমরা সর্বদা এসব বিষয়ে সতর্ক থাকি, ব্যবস্থা নেই। এই তথ্যটা পূর্ণাঙ্গ আসার পর কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম বা ভুয়া সনদে চাকরিপ্রাপ্তির বিষয়টি প্রমাণ হলে আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করব। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্যাডার-নন ক্যাডারদের একটি বড় তালিকা সরবরাহ করছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। প্রতিষ্ঠানটির সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের ২২ ব্যাচের আগের কোটায় হওয়া কর্মকর্তাদের তালিকা ম্যানুয়ালি হওয়ায় একটু সময় লেগেছে। তবে দু-এক দিনেই এটি পাঠানো হবে, শেষ পর্যায়ে আছে। পিএসসির যুগ্মসচিব আনন্দ কুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের সব কাজ গুছিয়ে এনেছি। ইতোমধ্যেই কিছু তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নন-ক্যাডারও শেষ করেছি। ক্যাডার কর্মকর্তাদের তালিকা কিছু দেওয়া হয়েছে বাকিগুলো দ্রুতই যাবে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে আসা তথ্য নিয়ে ডেটাবেজ তৈরির কাজ চলছে। যাদের তথ্য এসেছে সব ডেটাবেজ হওয়ার পর পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবে মন্ত্রণালয়।