

সম্পাদকীয়
সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো ভালোভাবে চলে না : দ্রুত পদক্ষেপগ্রহণ জরুরী
গত ২১ নভেম্বর ২০২৪ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো ভালোভাবে চলে না-প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ জানতে পেরে আমরা মর্মাহত হয়েছি। পাঠকমাত্রই বিষয়টি নিছক বিষয়টি নতুন নয় বলে জানিয়েছেন।

আর প্রকাশিত সংবাদের নিচে মন্তব্যে ক’জন সংবাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, ‘বিদ্যালয়ের সময়সূচি পরিবর্তন করে সকাল ৯.৩০ থেকে ৪.০০টা পর্যন্ত করলে গ্রামের ছেলেমেয়েরা খাবার খেয়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারবে।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘এদেশে একজন ব্যক্তিকেও খুঁজে পাবেন না, যিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিন্দা ছাড়া প্রশংসা করেন। এটা আজ একটা ডায়লগ। বলিহারি, থার্ড ক্লাস পদবীর শিক্ষক দিয়ে এরচেয়ে বেশি কী আশা করতে পারে জাতি!’
সত্যিই আমাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর করুণ অবস্থা। যেমনি পরিবেশের দিক দিয়ে; তেমনি আবার পড়াশোনায়ও ত্রাহী অবস্থা। অঙ্কুরেই যদি শিশুরা ভালো শিক্ষা না পায়, তাহলে তারা বড় হয়ে ভালো কিছু করতে পারে না। ভালোভাবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে না। মূলত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা শিশুর হাতেখড়ি। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিষয়। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক লক্ষ্য হচ্ছে, শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ এবং প্রাথমিক শিক্ষায় প্রবেশের প্রস্তুতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের শিক্ষার অধিকার পূরণ করে শিক্ষার সুযোগগুলো থেকে পুরোপুরি সুফল অর্জন এবং মানব সম্ভাবনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৃদ্ধি ও বিকাশে তাদের সক্ষম করে তোলা।
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নানাবিধ। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা শিশুর শিক্ষার গাঁথুনি তথা ভীত তৈরির জন্য কাজ করে। শিশুর মস্তিস্ক তথা ব্রেনের বিকাশের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাস্তর হলো উলেল্গখযোগ্য সময়, যা শিশুর পরবর্তীকালের শিক্ষার ভিত রচনা করতে সহায়তা করে। এ বয়সে শিশুর মস্তিস্ক শেখার জন্য দ্রæত কাজ করে এবং বেশি সক্রিয় থাকে।
আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সরকারি স্কুলের শিশুরা ঝরে পরেছে কোভিডের সময়টায় বেশি। কোভিডের সময় সরকারি স্কুলগুলো বন্ধ থাকলেও অন্যান্য স্কুলগুলো খোলা ছিল। এছাড়া অনেকগুলো জায়গা রয়েছে যারা সরকারি চাকুরি করেন তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে নিয়ে আসার যে সময়টা প্রাইমারী স্কুলের সময়ের সাথে তাদের মিলে না। এর ফলে তারা অন্য প্রতিষ্ঠানে দিয়ে দেন, যেখানে বাচ্চাদের রাখার সুযোগ রয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, যেসব সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো ভালোভাবে চলে না; এ বিষয়ে ক্ষতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা মনে করি এবিষয়ে দ্রæতই পদক্ষেপগ্রহণ জরুরী।
আমরা মনে করি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়ালেখার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের কিছু কিছু বিষয়ে আরো তোড়জোড় করতে হবে। যেমন-
১. পাঠটিকা ব্যবহার করতে হবে।
২. উপকরণ নিয়ে ক্লাসে ঢুকতে হবে।
৩. শিশুদের ধমক বা কটুক্তি করা যাবে না।
৪. শিশুরা ক্লাসে মারামারি করলেও কিছু না বলে আদর ভালোবাসা দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে।
৫. শিশুরা ক্লাসে শিক্ষককে সালাম না দিলে ও নিজের দিতে হবে।
৬. শিশুরা পড়াশোনা না করলেও পাশের সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
৭. শিক্ষকরা ক্লাসে মোবাইল নিয়ে যাওয়া যাবে না।
৮. শিশু বিদ্যালয়ে না আসলে তাদের বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। সম্ভব হলে কিছু খাবার নিয়ে যেতে হবে।
৯. শিশুদের প্রতিদিন হাতের লেখা দিতে হবে।
১০. শিশু গরিব হলে তার জামাকাপড়,খাতা কলম কিনে দিতে হবে।
১১. সঠিক সময়ে ক্লাস যেতে হবে এবং আসতে হবে।
১২.আঞ্চলিক ভাষা পরিহার করে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হবে।
১৩. বই দেখে দেখে সকল শিশু পড়তে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
১৫. অভিভাবক তথা মা-বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে।
অতএব, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এসব বিষয়ে মনোনিবেশ করলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আরো উন্নতি করতে পারবে।
রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?
ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ
শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা
যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায় কি?
