সম্পাদকীয়
গত ২৫ নভেম্বর ২০২৪ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ‘দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁয়’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম নওগাঁতে শীতের তীব্রতা বেশি। এ তীব্রতা আরো নিম্ন হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নওগাঁয়।
এ জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে শীতের তীব্রতা ছিলো। যা চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সোমবার (২৫ নভেম্বর ২০২৪) সকাল ১১টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। দেখা গেছে সন্ধ্যা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত শীতের প্রকোপ থাকছে বেশি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরমের দাপট থাকছে বেশ। আর এজন্যে বিশেষ করে বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুদের সহ্য ক্ষমতা কারো ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আমরা জানি, নওগাঁ সবজি উৎপাদনে বৃহৎ জেলা। এ জেলায় উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানি হয় দেশের বিভিন্ন বাজারে। কিন্তু এ বছর মাঠে কাজ করা চাষীদের পক্ষে কঠিন হচ্ছে; সকাল থেকেই কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে চাষীরা মাঠে যেতেই পারছে না। এরই মধ্যে অনেক চাষীদের ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগতে দেখা যাচ্ছে। সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি লেগেই আছে। অপরদিকে শীত আগমনে জেলার হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক মানুষ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে এ সময়টাতে শিশু এবং বয়স্কদের প্রতি বাড়তি নজর রাখতে বলা হচ্ছে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে।
ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে বিভিন্ন এলাকা। এর সঙ্গে বয়ে চলা উত্তরের হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন সড়কে ধীরগতিতে যান চলাচল করতে দেখা গেছে। কিছু কিছু যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে ঘন কুয়াশার চাদরে প্রকৃতি ঢাকা পড়লেও জীবিকার তাগিদে সাত সকালেই বের হন খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা। জমিতে কাজ করতে না পারায় বাজারে শাকসবজির আমদানি কম হচ্ছে ও তা’ দামে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে তীব্র শীত আর কুয়াশার কারণে চরম দুর্ভোগের সাথে প্রতিনিয়তই ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও প্রবীণরা।
জেলা সদরসহ ১১ উপজেলায় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা স্বাভাবিক হলেও বিশেষ করে বেশ কিছুর ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এলাকার মানুষজন সকাল থেকে কুয়াশায় কিছু দেখা যাচ্ছে না। কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। তারা বেশ কষ্টের মধ্যে আছি। গবাদিপশুও নিয়েও বড় বিপদে পড়েছে মানুষজন। তাদের লালন পালন ঠিকমতো করতে পারছে না।
বাজারের সবজি বিক্রেতাদের অবস্থা আরো করুণ। বিকেলে জমি থেকে সবজি কিনে নওগাঁ শহরে বিক্রি করে। কিন্তু প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশায় কয়েকদিন থেকে ঘরের বাইরে ঠিকমতো বের হওয়া যাচ্ছে না। ঠিকমতো সবজি বিক্রি করতে না পারায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়ছে কোনো কোনো সবজি বিক্রেতা। কনকনে ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ কষ্টে দিন পার করছেন। কুয়াশায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। সব থেকে চরম বিপদে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রচণ্ড শীতের কারণে তারা বোরো বীজতলা ও আলুসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
শীতজনিত কারণে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। তাছাড়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহে অনেকটাই বিপর্যস্ত এখানকার জনজীবন। সূর্যের লুকোচুরিতে শীত নিবারণে পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষেরা পড়ছেন বিপাকে। আয়-রোজগারে শীতের প্রভাব পড়ায় কষ্টে আছেন দিনমজুর, শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা। খুব সকালের দিকে ঠান্ডা বাতাস ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে বেগুন ও কাঁচামরিচ খেতের পরিচর্য়া করতে হচ্ছে কোনো কোনো কৃষক। হতদরিদ্র কৃষকের পরিবারগুলো ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। আবার স্বল্প আয় থাকায় গরম কাপড় কেনা তাদের অধিকাংশেরই সামর্থ্যের বাইরে। শীত নিবারণে এসব পরিবার সদস্যরা ঘরের ভেতরে ও বাইরে খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শরীরে গরমের ভাপ লাগান। হাসপাতালগুলোতে শিশু বিভাগে রয়েছে উপচেপড়া ভিড়। তীব্র শীতের দাপটে শ্বাসকষ্টজনিত রোগসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে।
ফলে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর অবস্থা আরো নাজুক। প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে তারা ঠান্ডায় পারছে না কাজ করতে। গ্রামের লোকজন দিনের বেলায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?
ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ
শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা
যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায় কি?