

ছাত্রের প্রতি শিক্ষকের দায়িত্ব হলো তার গুণাবলি প্রকাশ করা, তার দোষত্রæটি গোপন রাখা এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা। আর কেউ শিক্ষককে অপমান করলে তাকে প্রতিরোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সকলের জন্যে অবশ্য কর্তব্য। তাছাড়া শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রতি গুরুদায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু দৈনিক শিক্ষাডটকম সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় ‘দেরিতে আসেন শিক্ষকরা, ফিরে যান শিক্ষার্থীরা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা হতাশ হয়েছি।
প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, “ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে রয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার সময় স্থানীয় এক বাসিন্দা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষকরা এসেছেন কি না জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা উত্তরে জানায়, কোনো শিক্ষক আসেননি। আর একই সময় শিক্ষকদের কক্ষ তালাবদ্ধ দেখা যায় ওই ভিডিওতে।” অবশ্য এ সংবাদটি আমাদের সকলের জন্যে হতাশাজনক ও মর্মাহত হওয়ার বিষয়। বাস্তবিক সকাল ৯টার আগেই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বইপত্র নিয়ে উপস্থিত হলেও সকাল ১১টার আগে কোনো শিক্ষক বিদ্যালয়েই আসেন না। যার ফলে বিদ্যালয়ের গেট তালাবদ্ধ দেখে বাড়ি ফিরে যান অনেক শিক্ষার্থী। বেশির ভাগ শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসতে চান না। এলেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে গড়িমসি করেন। বহিরাগত সোহাগ নামে একজনকে দিয়ে পাঠদান করান ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক মহেন্দ্র চন্দ্র সরকার।’

প্রকৃত শিক্ষক তিনিই যার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান মানুষ গ্রহণ করে থাকে। প্রকৃত শিক্ষক ব্যতীত কোনো পেশাজীবী ও বিশেষজ্ঞ তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। একজন আদর্শ শিক্ষকই ব্যক্তি ও সামাজিকভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞান, নীতি-নৈতিকতা ও মানবিকতার বিকাশ ঘটাতে পারেন। একজন শিক্ষকই জাতির বিবেকবোধ তৈরির কারিগর। তার হাত ধরেই আদর্শ আলেম, দাঈ, বিচারক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, উদ্ভাবক, আবিষ্কারক, সৈনিক, কৃষক, প্রস্তুতকারক ও অন্যান্য পেশাজীবী তৈরি হয়ে থাকে।
শিক্ষা কার্যক্রম তখনই সফল হয় যখন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে, সফলতার সাথে শিক্ষক তার দায়িত্ব পালন করে এবং খুব দক্ষতার সাথে তার বার্তা ছাত্রদের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। একটি শিক্ষা কার্যক্রম তখনই সফলতা পায় যখন শিক্ষক তার মহান দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন থাকেন। নিশ্চয়ই শিক্ষাদান একটি শিল্প যা সুনির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। শিক্ষকগণই হচ্ছেন উত্তম আদর্শ, যারা তাদের ছাত্রদের জীবনে বড় প্রভাব রাখেন। তিনি প্রকৃত পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পারেন, বাস্তবতা বুঝতে পারেন।
তিনি পাঠদানের বিষয় সম্পর্কে দক্ষ, সহনশীল, উদার, নমনীয়, ধৈর্যশীল এবং সকল পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম। একজন যোগ্য শিক্ষক স্বীয় পাঠদানের বিষয়ে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হবেন। তিনি স্বীয় দায়িত্ব ও কর্ম সম্পর্কে সচেতন হবেন, ভালো আচরণের দিক দিয়ে একজন আদর্শবান, চরিত্রবান, ন্যায়পরায়ণ এবং আমলে মধ্যপন্থি হবেন। প্রতিদিন সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস হচ্ছে, তবে কীভাবে হচ্ছে তা আমরা কয়জনে জানি।
শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে তো সব প্রতিষ্টান দেখা সম্ভব না। তবে প্রতিটা জেলায় জেলায় যে সকল উচ্চ কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের তো মনিটরিং করা সম্ভব। প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় একটি একটি করে দল কাজ করবে। তবেই শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। নিয়মিত মনিটরিং এবং খোঁজ খবর রাখলে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ঠেকাতে কেউ পারবেনা। শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকরা কি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে তা খবর নেওয়া এবং সরজমিনে দেখা। তবেই শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালনে আরো দৃঢ় হবে। কোনো শিক্ষার্থীদের মনে যেনো শিক্ষকদের প্রতি ঘৃণা না থাকে সেভাবেই শিক্ষকদের এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা যেনো শিক্ষক আজীবন বেঁচে থাকে, সেভাবেই শিক্ষকদের চলতে হবে। শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা নয় সম্মান আর ভালোবাসাই যেনো পেতে চায় সকল শিক্ষক। এ নীতি নিয়েই যেনো গড়ে ওঠেনা আগামী দিনের শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?
ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ
শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা
যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
চর্মরোগ দাউদ একজিমা বিখাউজের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
