নওগাঁয় এবার এসএসসিতে খারাপ রেজাল্ট

সম্পাদকীয়

এবার নওগাঁয় ২১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেনি কোনো পরীক্ষার্থী। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে সকলে মনে করছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই এমপিওভুক্ত এবং মাদরাসা। গত ১০ জুলাই সারা দেশের ন্যায় নওগাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এই তথ্য জানা যায়। জেলার ১১টি উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মোট ৭৭৩টি।

এর মধ্যে একটি পরীক্ষার্থীও পাশ করেনি ২১৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, নওগাঁ জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার ৭৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কমসংখ্যক পরীক্ষার্থী পাশ করেনি ৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে, মহাদেবপুর উপজেলার ৮১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩২ টি প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেনি কমসংখ্যক পরীক্ষার্থী।

এছাড়াও বদলগাছী উপজেলার ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫টি, ধামইরহাট উপজেলার ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১টি, পতœীতলা উপজেলার ৮০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৭টি, সাপাহার উপজেলার ৭৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টি, পোরশা উপজেলার ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪টি, নিয়ামতপুর উপজেলার ৭৫ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টি, মান্দা উপজেলার ১১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টি, রাণীনগর উপজেলার ৪০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮টি এবং আত্রাই উপজেলার ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কমসংখ্যক পরীক্ষার্থী পাশ করেনি ২০ টি প্রতিষ্ঠান থেকে। এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুসারে, কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত অবস্থায় থাকতে হলে প্রতি বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হার নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকতে হবে। পাসের হার বা শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হলে সেই প্রতিষ্ঠানটির এমপিও স্থগিত বা বাতিল করা যেতে পারে।

আমরা মনে করি, বিরাট অঙ্কের পরীক্ষাথী ফেল করার কারণ রয়েছে। তবে এর পেছনে দায় শুধুমাত্র শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেয়া যুক্তিযুক্ত নয়। আমরা একথা বলতেই পারি যে, যদি শিক্ষক যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করেন, শিক্ষার্থী পিছিয়ে পড়তে বাধ্য এটা স্বাভাবিক। তাছাড়া অভিভাবকের উদাসীনতাও কোনো অংশে বাদ দেয়া যায় না। সন্তান কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, পড়াশোনায় ক্লাসে মতোটুকু মনোযোগী-সেটাও দেখা অভিভাবকের দায়িত্ব। সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি বাবা-মা অথবা অভিভাবকের অমনোযোগিতা বা উদাসীনতা। এর কারণে শিশুরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ে এবং তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অপরদিকে শিক্ষার্থীর নিজ দায়িত্ববোধের অভাবÑপড়াশোনায় আগ্রহ না থাকলে, সুযোগ পেলেও সে ভালো করবে না। কিন্তু আমরা পরস্পরের দিক থেকে শুধু দোষারোপই করে যাচ্ছি। তবে দোষারোপের আগে আমাদের উচিত নিজ নিজ অবস্থান থেকে আত্মসমালোচনা করা।

তাছাড়া বাড়িতে সন্তানদের পড়াশোনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি না করা: যেমন-পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা না থাকা, পড়ার জন্য উপযুক্ত টেবিল-চেয়ার না থাকা, অথবা পড়ার সময় শব্দ দূষণ হওয়া ইত্যাদি। বিশেষ করে অসচেতন পরিবারগুলোতে শিশুরা ভালো পড়াশোনা করতে পারে না। যেমন-হোমওয়ার্ক বা অ্যাসাইনমেন্ট তৈরিতে সাহায্য না করা, পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করে না। অপরদিকে বড় একটি কারণ হিসেবে আমরা মনে করি, সন্তানদের অতিরিক্ত মোবাইল ফোন বা অন্যান্য গেজেট ব্যবহারের সুযোগ দেয়াতেও শিশুদের পড়াশোনার মনোযোগ নষ্ট হয়। অনেক সময় অভিভাবকরা সন্তানদের লেখাপড়ার চাপ দিতে চান না, যা তাদের পড়াশোনায় অমনোযোগী করে তোলে। মনোযোগের অভাবে শিশুরা ক্লাসে পিছিয়ে পড়ে ও পরীক্ষার ফলাফল খারাপ করেছে। এতে করে পড়াশোনায় অমনোযোগিতা এবং খারাপ ফলাফলের কারণে শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব আরো বেড়ে যাচ্ছে।

অতএব, আমরা মনে করি, অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হওয়া এবং তাদের পড়াশোনার খোঁজ রাখা। সন্তানদের পড়াশোনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা এবং তাদের পড়াশোনায় উৎসাহিত করা। সন্তানদের মোবাইল ফোন বা অন্যান্য গেজেট ব্যবহারের প্রতি নজর রাখা এবং তাদের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করা। সন্তানদের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না করে, তাদের আগ্রহ ও প্রয়োজন অনুযায়ী পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দেওয়া। পারিবারিকভাবে সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া, যা তাদের ভবিষ্যতে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। আরেকটি বিষয় বলতেই হয় যে, একটি জেলার মধ্যে এতোগুলো স্কুলের সকলেই ফেল করা দুঃখজনক। সে হিসেবে যথাযথ কতৃপক্ষের আরো বেশি যতœশীল হওয়া দরকার।

বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

অনলাইনে সংবাদ জনপ্রিয় করবেন যেভাবে

ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়

সোরিয়াসিস হলে কী করবেন?

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

চর্মরোগ দাউদ একজিমা বিখাউজের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

চর্মরোগ দাউদ একজিমা বিখাউজের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

শেয়ার করুন

You might like

About the Author: priyoshomoy