শিশু ধর্ষণ : অমানুষের পরিচয়

সম্পাদকীয়…

গত ১২ জুলাই ২০২০ চাঁদপুর সদরের তরপুরচন্ডি ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকায় ঘটে যাওয়া শিশু ধর্ষণের খবরটি সবার চোখে পড়েছে। মর্মান্তিক ও লজ্জাজনক একটি ঘটনা। এসব ঘটনা আমাদের অরুচির পরিচয় প্রদান করে। সমাজে কিছু অমানুষ যে রয়েছে, যাদের পরিচয় মধ্যযুগের নিষ্ঠুর ও বর্বর হত্যাকারীদের মতো। অথবা ১৯৭১ সালের ধর্ষণের ঘটনাগুলোকে আমাদের মনে করিয়ে দেয়। যে বর্ণনা আমাদের এখনো কাঁদায়। আমাদের গায়ের লোক শিউরে উঠে। এমন নির্মম জঘন্য অপরাধীদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। সেই শাস্তি যেন দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে অন্যদের ভয়ের কারণ হিসেবে গা শিউরে উঠে। এরপর যেন অন্যরা এ রকম ঘটনা আর না ঘটায়। কিন্তু সে রকম শাস্তি হয়তো হয় না, সেজন্যে অপরাধীরাও ভয়ে কাঁপে না। তাই নিজের মেয়ের বয়সী মেয়েদের দিকে কাম উত্তেজকভাবে দৃষ্টি দিয়ে হীনস্বার্থ চরিতার্থ করে।

ধর্ষণের দিক দিয়ে আমাদের সমাজ কলুষিত হয়ে গেছে। প্রায় দিনই আমাদের খবরের কাগজে এ ধরনের লোমহর্ষক ঘটনা পড়তে হয়। আর পড়তে পড়তে বর্তমানে হয়তো, আমাদের অনুভূতি এ বিষয়ে ভোঁতা হয়ে গেছে। সেখান থেকে বের হয়ে আসাটা আমাদের জন্যে কঠিন হবে; যদি না এসবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হয়। এখন প্রশ্ন জাগে, আমরা কি আমাদের রুচিবোধ হারিয়েছি? নাকি লজ্জাযুক্ত মনুষ্যত্ববোধ হারাতে বসেছি? অথবা আমাদের বিবেক অবশ হয়ে গেছে। ফলে ধর্ষণের মতো এমন জঘন্য ঘটনা ঘটাশে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়।

সত্যিকারে কিছু লোকের মনুষ্যত্ববোধের লোপ পেয়েছে দারুণভাবে। আর বিবেক, সে তো অবশ হয়ে আছে। তাই নির্মম ঘটনা ঘটাতে মানুষের বিবেক একটুও কাঁপে না।

প্রতিটি শিশুই তার প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের বিশ্বাস করে। এটা তাদের শিশুসুলভ বৈশিষ্ট্য। আর তারা একেবারে পরিচিতদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় বেশি। খবরটি পড়ে যা বোঝা গেলো, এই ঘটনাটিতেও তাই হয়েছে। আর বেশির ভাগ ঘটনা ঘটে শিশুরা যখন খেলতে যায় এবং মা বাবার থেকে দৃষ্টির আড়াল হয় তখন। এখানে শিশুটি বাড়ির পাশে খালপাড়ে খেলতে গিয়েছিলো। তখনই সুযোগ পেয়ে নরপশু তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে আরো কয়েকবার। তারপর ঘটনার মোড় যে দিকে যাওয়ার সেদিকে চলে যায়। কিন্তু ক্ষেত্রে বিশেষে এ সমস্ত ঘটনায় সমাজের কিছু মানুষ কেনো অপরাধীকে বাঁচানোর জন্যে চেষ্টা করে সেটাই বোধগম্য হয় না। এই ঘটনার ক্ষেত্রে দরিদ্র পরিবারের শিশুটির শ্রমজীবী বাবা মা ন্যায় বিচার পাবে-সেই প্রত্যাশা নিশ্চয় সকলেই প্রত্যাশা করে!