কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কুমিল্লার মেঘনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নিজাম সরকার হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।

বৃহষ্পতিবার দুপুরে উপজেলার চালিভাঙ্গা বাজারে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়। এসময় নিহত নিজামের পরিবারের সদস্য এবং জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা অংশগ্রহন করেন।

মানববন্ধনে সকলের সাথে প্রে-কার্ড নিয়ে অংশ নেন নিহত নিজামের শিশু কন্যা ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী নাদিয়া আক্তার, আট বছরের কন্যা তানহা, ছয় বছরের শিশু মোঃ আরাফাতসহ নিজামের ৬ সন্তান। এ সময় বাবার হত্যার বিচারের দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।

মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির, নিহত নিজাম সরকারের স্ত্রী সালমা আক্তার, স্থানীয় ইউপি সদস্য আজগর আলী, সাবেক সদস্য নূর আলমসহ অন্যরা।

সন্তানের খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে ফাঁসি দাবী করেন নিহত নিজামের মা পরী বানু। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

নিহত নিজামের স্ত্রী সালমা আক্তার বলেন, আমার স্বামী দলের জন্যে নিবেদিত ছিলেন। পরিবারের চেয়ে দলের জন্য সবসময় সময় দিয়েছেন। আমার স্বামীর খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। আমাদের বিভিন্ন হুমকী দিচ্ছে। তিনি স্বামীর খুনীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবী জানান।

মেঘনার চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির বলেন, নিজামের খুনিরা বিভিন্ন হত্যা মামলার আসামী, একসময় তারা ডাকাতিও করতো। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর তারা বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে পূর্বের অপরাধের রাজ্য গড়ে তুলে। তাদের এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় দলের একজন নিবেদিত নেতাকে খুন করে। আমি দলের সভানেত্রীর কাছে এর বিচার চাই।

নিহত নিজামের বাড়ি মেঘনা উপজেলার নলচর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মৃত আক্কাস মেম্বার। তিনি বালুর ব্যবসা করতেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ৭টার দিকে কুমিল্লার মেঘনার চালিভাঙ্গা গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নিজাম সরকার নিহত হন। এ ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হন। তাঁরা হলেন আনিস সরকার (১৮), টিটু সরকার (২৮), সুমন (২৫), দেলোয়ার (২৮), ইব্রাহিম (৩০), রমজান (৩৫), শাকিল (২২), খালেদ হাসান (১৯), হানিফ (৪৫) ও ওয়াসিম (৩৫)। আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।

কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন চেয়রাম্যান ও অপর আওয়ামী লীগ নেতা কাইয়ুম গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে তারা দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে।

খন্দকার আশফাকুজ্জামান আরও বলেন, এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।