করোনা ঠেকাতে আশার আলো দেখাল এইডসের ওষুধ!

নিউজ ডেস্ক :

করোনা ভাইরাস-কোভিড-১৯। প্রাণঘাতী এ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

বিজ্ঞানীরা মরিয়া হয়ে ভয়ানক এই ভাইরাসের উপযুক্ত চিকিৎসার পথ খুঁজছেন। এবার তাদের সেই প্রচেষ্ঠায় আশা আলো দেখা দিয়েছে। কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় এইচআইভি বা এইডসের ওষুধ কার্যকর হতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে।

চীনের উহান শহরের গুরুতর করোনভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় এইডসের ওষুধ ‘ক্যালেট্রা’ ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন দেশটির চিকিৎসকরা। তাদের এই দাবি নিয়ে অনেকে সংশয়ে থাকলেও এবার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে তাদের সেই দাবির সত্যতা মিলেছে।

gif maker

উহানের জিনিন্টান হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট ডা. ঝাং ডিঙ্গ্যু বলেন, তারা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অ্যাবভি কোম্পানির উৎপাদিত এইডসের ওষুধ লোপিনাভির/রিটোনাভিয়ারের অফ পেটেন্ট সংস্করণ ক্যালেট্রা এবং একই সাথে দ্বিতীয় ওষুধ হিসাবে বিসমাউথ পটাসিয়াম সাইট্রেট লিখছেন। এতে দারুণ সুফলও মিলেছে।

বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) ক্যালেট্রা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, এই ওষুধ গ্রহণ করা উপকারী। অনেক রোগী এই ওষুধ ব্যবহারে সেরে উঠেছেন। এটা ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত।

তিনি বলেন, জিনিন্টন হাসপাতালের চিকিৎসকরা ৬ জানুয়ারি থেকে করোনা রোগীদের জন্য এই দুটি ওষুধের কথা লেখা শুরু করেছিলেন। ডিসেম্বরে উহানে করোনভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর প্রথম যে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেয়া শুরু হয়েছিল তার মধ্যে এটি একটি।

জিনিন্টানের এই হাসপাতালে মহামারিটির সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাবের সময় ৫০০ করোনা রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালটিতে এখনও ১২৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত মাসে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের উহানের গবেষকরা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ওপর ‘লোপিনাভির’ ও ‘রিটোনাভির’ নামক দুটি এইডসের ওষুধের প্রভাব পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল হতাশাজনক হয়েছে।

তবে গত মাসে ইসরায়েল করোনার চিকিৎসায় এইডসের ওষুধ ‘ক্যালেট্রা’ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে ডা.ঝাং বলেছিলেন, নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণার মাধ্যমে যে তথ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে সেসব রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা মারা যাওয়ার আগে ওষুধ নেননি এবং অন্য যারা ছিল তাদের ডাক্তাররা এটির ব্যবহারের নির্দেশ দেননি।

তিনি বলেছিলেন, যে তিনজন চিকিৎসা কর্মী ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশিত হওয়ার ২-৩ দিনের মধ্যে ‘ক্যালেট্রা’গ্রহণ শুরু করেছিলেন। তারা সবাই সুস্থ হয়েছেন। ওষুধটি খাওয়ার শেষের দিকে তাদের ফুসফুসের যে পরিবর্তনগুলি হয়েছিল তা সত্যিই দুর্দান্ত ছিল।