চাঁদপুরে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জের উপস্থিতিতে বিয়ে ! জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে :

বৈশ্বিক মহামারী করোনা দুর্যোগে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জের উপস্থিতিতে বিয়ের ঘটনায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেশব্যাপী মানবিক পুলিশের ভূমিকার বিপরীতে চাঁদপুরে লোক সমাগমে বিয়ের ঘটনায় শহরবাসী হতবাক হয়েছেন।

করোনাকালীন সময়ে ঘটা করে লোকসমাগম করে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ ও বিয়ে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে সরকার। কিন্তু ঐ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ হোসেনের উপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়।


চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক লকডাউন এখনো বলবৎ থাকলেও পুরান বাজারে ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ফারুক ছৈয়াল তার মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেন। বিয়েতে প্রায় ৪শ’ অতিথিকে দাওয়াত দিতে আপ্যায়ন করা হয়। এভাবে পুরানবাজারে ঘটা করে বিয়ের অনুষ্ঠান করায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশের ভূমিকায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার(১১জুন) রাতে পুরান বাজার বউবাজার এলাকায় ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ফারুক ছৈয়ালের বাড়িতে তার মেয়ে বৃষ্টির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে রাত ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ হোসেন উপস্থিত থেকে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

পরদিন শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ইন্সপেক্টর মাসুদ হোসেনের নেতৃত্বে বিয়ে সমাপ্ত হয়। এ সময় বর ও কনে পক্ষের প্রায় ৪শ’ অতিথি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আপ্যায়নে অংশ নেন।

স্থানীয়রা জানান, বিয়েতে যাতে কোন ধরনের বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়, সে জন্যে ফাঁড়ির ইনচার্জ উপস্থিত থেকে নিজ দায়িত্বে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরান বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ হোসেন যোগদান করার পর থেকে কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে দহরম-মহরম সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যা সাধারণ মানুষের কাছে দৃষ্টিকটু মনে হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হওয়ায় অযথা হয়রানির ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।

এ বিষয়ে পুরান বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ হোসেন বলেন, চাঁদপুরে এখন লকডাউন নেই , তাই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে। আমন্ত্রণ পেয়ে সেখানে গিয়েছি । তবে লোক সমাগম কম হয়েছে।

জানা গেছে, ফারুক ছৈয়াল ফাঁড়ির অনেক পুলিশ সদস্যকে তার মেয়ের বিয়েতে আমন্ত্রণ জানালেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত হবে, এই ভেবে ইন্সপেক্টর মাসুদ ছাড়া অন্য কেউ অংশগ্রহণ করেননি।

চাঁদপুর সদর এএসপি সার্কেল জাহেদ পারভেজ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি।