করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোরবানির পশুরহাট স্বাস্থ্য বিধি ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আতংক

 

আনিছুর রহমান সুজন:
শহর ছেড়ে করোনা ভাইরাস(কোভিড-১৯) এখন গ্রামে ঢুকে পড়েছে। প্রতিনিয়মিত বাড়ছে সামাজিক সংক্রমণ। ফলে বাড়ছে আতংক। যদিও উপজেলা সদরের গণ্ডি পেরিয়ে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরার বালাই নেই সেখানে।

এই চিত্র চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতেও। এদিকে কয়েকদিন পর থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে ও সড়কের পাশে বসছে কোরবানির পশুর হাট। ফলে কঠোর ভাবে স্বাস্থ্য বিধি না বলে ঈদ-উল আযহার পরে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা ভাইরাস। অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পশুর হাটের পর নোংরা আবর্জনায় দূষিত হয়ে উঠতে পারে পরিবেশ।

জানাগেছে, বৃহৎ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এবছর পৌর এলাকার দুটিসহ উপজেলায় ৩৬টি কোরবানীর পশুর হাটের ইজারা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এসব হাটের অধিকাংশই গুলোই স্থানীয় সড়কের পাশে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে হবে। এর মধ্যে উপজেলা রূপসা আহাম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, গৃদকালিন্দিয়া শিক্ষা কমপ্লেক্স মাঠ, খাজুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, মুন্সীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয়, প্রত্যাশী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ অন্যতম।

এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিগত বছর গুলোতে কোরবানীর পশুর হাট বসলেও হাট শেষে নিয়মানুযায়ী পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার বালাই ছিল না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বারংবার এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানালেও হাটের ইজাড়াদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় সেগুলো বাস্তবায়ন আর হয় না।

এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই প্রতিষ্ঠান গুলোর মাঠে কোরবানির পশুরহাট বসলে, হাটের পরের অবস্থা কি হবে তা অনুমেয়। তাছাড়া হাটে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক। এসব স্থানে স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব না মানলে কোরবানির পর করোনা সংক্রমণ আরো তীব্র হতে পারে। উপজেলার করোনা পরিস্থিতি অনুযায়ী করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শহরের চেয়ে গ্রামে আশংকাজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন বাজার গুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আসা লোকজনের শতকরা ৯৫ ভাগের মুখেই মাস্ক নেই। ফলে কোরবানীর পশুর হাটগুলোতে একই অবস্থা হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

এব্যাপারে রূপসা আহাম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও দাতা সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসান চৌধুরী জানান, ইতিপূর্বে কোরবানির পশুর হাটের পর বারবার হাটের জন্য ব্যবহার করা বিদ্যালয় মাঠ পরিস্কার করার জন্য বললেও কেউ কর্ণপাত করেনি। ফলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই এসব আবর্জনা পরিস্কার করতে হয়েছে। এবছর বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সাথে করোনা পরিস্থিতির কারণে হাট শেষের পরিবেশ ভয়াবহ অবস্থায় পতিত হতে পারে।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সচিব এ কে এম খোরশেদ আলম জানান, পৌরসভার দুটি হাটে স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিকিকিনি করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফ আহমেদ চৌধুরী চাঁদপুর রিপোর্টকে জানান, কোরবানির হাটে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানলে করোনা পরিস্থিতি আরো তীব্র হতে পারে।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শিউলী হরি চাঁদপুর রিপোর্টকে জানান, এবছর করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি ভাবে কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্য বিধি মানা এবং হাট শেষে হাটের স্থান পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ইজাড়াদাদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। না মানলে জরিমানাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি।