শখের মোটর সাইকেল চালাতে গিয়ে …

সম্পাদকীয়

সন্তানদের সব চাহিদা পূরণ করতে হয় না, এটা বাস্তবতা আমাদের শিক্ষা দেয়। হতে পারে আমাদের পরিবারগুলোর ক্ষমতা আছে, তবুও সন্তান যখন যা চাইবে তা আমাদের পূরণ করা উচিত নয়। সেটা অভিভাবক হিসেবে ভাবা উচিত যে, সন্তানের সেই জিনিসটা আদৌ দরকার কি না। তার জন্যে সেটা সত্যিকারে উপকারে আসবে কি না সে দিকটা ভালো করে খেয়াল করতে হবে। অথবা যদি সামর্থ না থাকে তাহলে সে বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়াটা খুবই সহজ হয়। কিন্তু কিছু কিছু অভিভাবক ধারদেনা করেও সেই শখ পূরণ করে থাকেন ও সন্তানকে সেটা দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে বিপত্তিটা বেশিই হয়ে থাকে।

প্রিয় সময়ে ‘শখের মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে প্রাণ গেল দুই কিশোরের’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি মর্মান্তিক ঘটনার কথা! যা আদৌ হওয়ার কথা ছিলো না, যদি একটু সতর্কতা অবলম্বন করা হতো। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। দুর্ঘটনায় সবকিছু তছনছ হয়ে গেলো।

সন্তানের শখ পূরণ দোষের কিছু নয়। সেটা আমরা বলছিও না। তবে হিসাবের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছি। উঠতি বয়সী তরুণরা একটু অন্যরকম হয়ে থাকে-সেটা অভিভাবক মাত্রই বুঝেন। বলছি, সেদিকটা আমাদের সবচেয়ে বেশি চিন্তা করা উচিত সবসময়ের জন্যে। আমাদের সন্তানদের যদি আমরা একটু বোঝাতে পারি তাহলে অনেক দুঃখ থেকে আমরা বেঁচে যেতে পারি।

প্রকাশিত সংবাদে আমরা জানতে পেরেছি যে, শখের মোটরসাইকেল চালাতে গিয়েই কাভার্ডভ্যানের চাপায় প্রাণ হারিয়েছে দুই শিক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটার সাথে সাথে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের গজরা এলাকায় মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে! আমরা হারিয়েছি দুই মেধাবী শিক্ষাথী! হতেও তো পারতো ঐ দুই শিক্ষার্থী বেঁচে থাকলে একদিন বাংলার সোনার ছেলে হতো। অথচ একটু অসাবধানতার কারণেই তারা হারিয়ে গেছে।

আমরা বলতে চাই যে, আমাদের পারিবারিক পরিকল্পনাগুলো সঠিক মাপের হোক। তাহলে আমরা আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে পারবো। ওরা যখন যেটা ইচ্ছা চাইলেই তাদের দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারি। কিন্তু সমস্যাটা হয় অন্য জায়গায়, সেটা হলো বন্ধুদের কেউ মোটর সাইকেল নিয়ে শখ মেটাচ্ছে, তখনই মনের মধ্যে শখ চেপে বসে। আর বায়না ধরে মা বাবার কাছে। সেক্ষেত্রে অনেক সময় মা বাবার কিছুই করার থাকে না। অথবা কোনো কোনো মা বাবা ইচ্ছাকৃতভাবেই সন্তানদের এমন শখ পূরণ করে থাকেন। সেক্ষেত্রে তার সঙ্গীরাও তার মতো চাহিদা চাপিয়ে দেয় মা বাবার কাছে। এক্ষেত্রে ঐ অভিভাবকেরও কিছু করার থাকে না। তবে সব অভিভাবকের ক্ষমতা ও সামর্থ এক রকম থাকে না। আর তখনই ঐ পরিবারের জন্যে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। হতে ধারদেনা করে হলেও সেটা পূরণ করে থাকে। আর তখনই দুঃখজনক ঘটনা ঘটে যায়।

আমরা বলতে চাই যে, উঠতি বয়সী সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের একটু বেশি নজর দেয়া উচিত। তাদের বিশেষ যতœ নেয়া দরকার ও তাদের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত। তাদের সঠিক জ্ঞান দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রি. ২৫ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২০ মুহররম ১৪৪২ হিজরি, বুধবার

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না