ইজিবাইকের চালকের লাইসেন্স থাকা কি দরকার নাই?

সম্পাদকীয়

সমস্ত যানবাহনেরই লাইসেন্স আছে; কিন্তু ইজিবাইকের চালকদের লাইসেন্স নাই কেনো? নাকি থাকার দরকার নেই?-এমন প্রশ্ন এখন সচেতন মহলের বলে আমরা মনে করছি। কেননা ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের চালকরা ইচ্ছামতো বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে থাকে। তারা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। যা তাদের বেপরোয়া চালানো ও এর ফলে দুর্ঘটনার হার বেড়ে যাওয়া আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

প্রিয় সময়ে প্রকাশিত ‘মাদারীপুরে ইজিবাইকের চাপায় শিশুর মৃত্যু’ শিরোনামের সংবাদটি তেমনই একটি মর্মান্তিক মৃত্যু! এসব চালকরা এলোপাতাড়ি গাড়িয়ে চালিয়ে থাকে। তাদের কোনো ভয় নেই, নির্ভয়ে ইচ্ছামতো গাড়ি চালায়। তাদের দ্বারা অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। কেউ পঙ্গু হচ্ছে, কেউ হারাচ্ছে জীবন। যেমন শিশু সাইম মিয়ার মাত্র তিন বছর বয়স। এ বয়সেই পৃথিবীকে ভালোভাবে উপলব্ধি করবার আগেই ইজিবাইক তার জীবন কেড়ে নিলো। অপরদিকে তার মা বাবাকে কাঁদিয়ে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেলো।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, ছোট শিশু সাইম সেদিক মায়ের হাত ধরে সকালে রাস্তার পাশ ধরে হাঁটছিলো। দৃশ্যটি সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা ও দায়িত্বের সাধারণ একটি চমৎকার চিত্র। ছোট শিশু সাইম হাঁটার সময় হঠাৎই মায়ের হাত ছেড়ে দিয়ে হয়তো আরো একটু সামনে এগিয়ে গিয়েছিলো। এটাও একটি শিশুর দূরত্বপনার সাধারণ দৃশ্য-যা আমরা ছোট বেলায় সবাই করেছি। কিন্তু তখনই দুর্ঘটনা যে তার জীবন কেড়ে নিবে সেটা কে জানতো? একটি ইজিবাইক শিশুটিকে চাপা দিলে ঘটলাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সাথে সাথে আকাশ বাতাস ভারী করে মায়ের আর্তচিৎকার! লোকজন জড়ো হতে থাকে। এমন মৃত্যু কোনো শিশুর মা মেনে নিতে পারে না। মেনে নিতে পারি না আমরা নিজেরাও।

এখন আমাদের প্রশ্ন, এসব ইজিবাইক চালকদের নিয়মনীতির বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার আছে বলে মনে করছি। তাদেরকে গাড়ি চালানোর প্রতি আরো সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। একটা নিয়মের মধ্যে তাদেরকে নিয়ে আসা উচিত। কয়েকদিন ইজিবাইক চালানোর প্র্যাকটিস করেই তারা সরাসরি রাস্তায় চলে আসে। কেননা তাদেরকে কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স দরকার হয় না। এ কারণেই তারা বেপরোয়া গতিতে ও নিয়ম বহির্ভুতভাবে গাড়ি চালিয়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনাগুলো ঘটায়।