ফরিদগঞ্জের জাহাঙ্গীর দু‘ হাত হারিয়ে জীবন যুদ্ধে এখনও টিকে আছে

মো. মহিউদ্দিন, ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি : :
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪ নং ফরিদগঞ্জ (দক্ষিন) ইউনিয়নের দক্ষিন চর রামপুর গ্রামের গাজী বাড়ির মো: জাহাঙ্গীর (৫০) দু‘হাত হারিয়ে এখনও টিকে আছে জীবন যুদ্ধে।

সরেজমিন ঘটনার বিবরণে জাহাঙ্গীর জানায়, আমি একজন রড মিস্ত্রী ছিলাম। আমার ছিল সচল দু‘হাত। ১৯৯৯ সনে একদিন কাজ করতে গিয়ে রড বিদ্যুতের হেভী লাইনে লেগে গিয়ে শর্ট খেয়ে ছিঁটকে পড়ি।

দু‘হাত মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশ বিশেষ পুড়ে যায়। চিকিৎসা নিতে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে বেঁচে থাকার তাগিদে দু‘হাতের কনুই এর উপর পর্যন্ত কেটে ফেলতে বাধ্য হই।

তারপরেও বেঁচে আছি। আমার দু‘হাত হারানোর পরেও ২০০০ সনে একটি মেয়ে আমাকে ভালোবেসে দেখেশুনে পছন্দ করে বিয়ে করেছে। শুরু হলো সংসার জীবন। সংসার জীবনে আমার ১ ছেলে ও ৩ মেয়ে জন্ম নিলো। চলছে কোন রকম সংসার তার পরেও আমারা খুবই সুখী ছিলাম। কিন্তু মহান প্রভু ২০১৫ সনে স্ট্রোকজনিত কারণ দেখিয়ে নিয়ে গেল আমার ১ম স্ত্রীকে এখন আমি কি করি ? দু’ হাতের অভাবে না পারি কিছু ধরতে না পারি কিছু মুখে দিতে। সর্ম্পূণ অচল আমি অন্যের সাহায্য ছাড়া।

এরই মাঝে কেটে গেল ৭টি মাস। স্ত্রী হারানো ব্যথা আর ৪টি সন্তানের ছায়া দিয়ে রাখা কত যে নিদারুণ কষ্টের কেউ জানেনা। কিন্তু যিনি এ ধরায় পাঠিয়েঠেন তিনিতো জানেন আমার ব্যথা।

সে মহান প্রভুর ইচ্ছায় পূর্বের ন্যায় ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার কেরোয়া গ্রামের এক বিধবা মেয়ে আমার অবস্থা অবলোকন করেও আমাকে বিয়ে করতে সম্মত হওয়ায় আবার শুরু হলো পূর্বের সন্তানদের নিয়ে দ্বিতীয় নতুন সংসার জীবন। আর্থিক অনটনে হলেও সুখেই কাটছে আমার সংসার জীবন। বাড়ির আঙ্গিনায় একটি চায়ের স্টল দিয়ে ছেলেকে সাথে নিয়ে যা হয় বেচা-বিক্রি তা দিয়ে অতি কষ্টে চলছে আমার সংসার জীবনের চাকা।

আমি একমাত্র প্রতিবন্ধি ভাতা ছাড়া আর কোন সুবিধা পাইনি। আমার ৩ টি মেয়ে ১ টি ছেলে আর আমরা দু‘জন মিলে ৬ সদস্যের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে বিধায় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার প্রত্যাশা করছি। আমার সন্তান আর সংসার যেন স্বাভাবিক ভাবে চালাতে পারি।

জাহাঙ্গীরের ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোন নাম্বার হচ্ছে ০১৭৬৩৪৮৪৮৯৪। কেউ যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন তাহওে তার সাতে সরাসরি কথা বলে সাহায্য পাঠাতে পারেন।