হাজীগঞ্জে নিজের চিকিৎসা খরচ চালাতে শিশু সন্তানকে বিক্রি করলেন বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে নিজের চিকিৎসা খরচ চালাতে ১৩ মাসের কন্যাসন্তানকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন এক বাবা। গতকাল সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে শিশুটিকে বিক্রি করা হয়।

হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ধেররা-বিলওয়াই গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

শিশুটির বাবা মো. বশির জানান, ২০১৬ সালে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর চিকিৎসাজনিত কারণে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি টাকার অভাবে চিকিৎসা এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। এছাড়াও তিনি অসুস্থতার কারণে আয়-রোজগার করতে পারছেন না।

তিনি বলেন, আমার সাড়ে তিন বছর ও ১৩ মাস বয়সী দুটি কন্যা শিশু রয়েছে। টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা, ঋণ পরিশোধ ও বাচ্চাদের খাবার কিনতে পারছি না। অসুস্থতার কারণে কাজও করতে পারছি না। তাই ছোট মেয়েকে ‘দত্তক’ দিয়ে দিয়েছি। বিনিময়ে তারা আমার চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা দিয়েছে।

শিশুটির মা আছমা আক্তার বলেন, মেয়ের জন্য পরান পোড়ে (মায়া লাগে)। কিন্তু কী করব, আমার স্বামীর চিকিৎসা দরকার। তিনি অসুস্থতার জন্য কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। তিনি সুস্থ থাকলে আমাদের খাওয়া-পরা চলবে। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েটারে ‘দত্তক’ দিয়েছি।

হাজীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মহসিন ফারুক বাদল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখব।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য আমি একটি বিশেষ টিম ঢাকায় পাঠিয়েছে। তারা শিশুটিকে উদ্ধার করতে গেছে। দত্তক নেওয়ার কিছু আইনগত বিধান রয়েছে। সেগুলো মানা হয়নি।

হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।