পঞ্চগড়ের বোদায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৩ দিনব্যাপী বারুণী স্নান শুরু

এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তিন দিনব্যাপী বারুণী স্নান শুরু হয়েছে।

বুধবার (৩০ মার্চ) সূর্যোদয়ের পর থেকেই উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের বোয়ালমারী এলাকায় করতোয়া নদীর উত্তর মুখি স্রোতে এ স্নানোৎসব শুরু হয়। পুণ্যার্থী ও সাধু-সন্ন্যাসীরা করতোয়া নদীর তীরে জড়ো হন। দলবেঁধে তাঁরা করতোয়ার উত্তরমুখী স্রোতে স্নান শুরু করেন। শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলবে এই পুণ্যস্নান উৎসব।

পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার নারী-পুরুষ নিজেকে পাপ মুক্ত করা ও পূণ্যতার আশায় করতোয়া নদীর উত্তরমুখি স্রোতে দীর্ঘ তিনশ’ বছর ধরে বারুণী স্নান করে আসছেন। ব্রিটিশ আমল থেকেই চৈত্রের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর করতোয়া নদীর উত্তরমুখি স্রোতে এ বারুণী স্নান অনুষ্ঠিত হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখানে বারুণী স্নানের পাশাপাশি পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা ও নিজেদের পূণ্যলাভ ও পাপ মোচনের জন্য পূজা অর্চণা করে থাকেন। স্নান উপলক্ষে করতোয়া নদীর দুই পাড়ে বসেছে সপ্তাহব্যাপী বারুণী মেলা।

পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা এ মেলা থেকে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী কিনে থাকেন।

বোদা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালাভীরের তরুণ ঘোষ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মা মারা গেছেন। স্বর্গীয় মার সৎকার্য ও পুণ্যস্নানের জন্য এখানে এসেছি।’ ঠাকুরগাঁও থেকে আসা অরুন কুমার বলেন, ‘এখানে স্নান করলে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, এই বিশ্বাসে স্নান করতে এসেছি।’

কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মোমিন জানান, বারুণী স্নান উপলক্ষে আয়োজিত বারুণী মেলায় শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই আসেন না। এখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরও ব্যাপক সমাগম ঘটে।

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূণ্য স্নান ও মেলায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।