মনপুরায় উদ্ভোধনের অপেক্ষায় ১১০ টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

রাকিবুল হাসান,মনপুরা সংবাদদাতা :

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ আধা-পাকা ঘর পেয়ে খুশি ভুমিহীন গৃহহীন পরিবারগুলো। আশ্রয়ন প্রকল্পের নির্মিত তৃতীয় পর্যায়ের ২১০টি ঘরের মধ্যে ১১০টি ঘর উদ্ভোধনের অপেক্ষায়। আগামী ২৬শে এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় ধাপে নির্মিত ঘরগুলো উদ্ভোধন করবেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ভোলার মনপুরায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ২শত ৫০ ভূমিহীন ও গৃহহীণ পরিবারের জন্য নির্মিত হয়েছে আধা-পাকা টিনের ঘর । প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকারী খাস জমিতে এসব ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার নির্মানাধীন ঘরগুলো ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে বিনা মূল্যে বিতরন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার (ঘর) পেয়ে বসবাস করছেন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।

উপজেলার হাজির হাট ইউনিয়নের জংলারখাল সংলগ্ন আশ্রয়ন প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে আশ্রয় পাওয়া পরিবারগুলো জানান, তারা কোন দিন ভাবেননি মাথা গোঁজার মতো নিজেদের একটি ঠিকানা হবে। আজ আমরা অসহায় পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকি,আর আমাদের কোন কষ্ট নেই। অগে খুব কষ্টে ছিলাম। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে খুব কষ্ট করেছি। এখন খুব আরামে থাকি। ঘর বরাদ্ধ পেয়ে আমরা খুব খুশি।

প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বরাদ্ধ পেয়ে খুব খুশি ভ্যানগাড়ী চালক আব্দুর রহমান। অভাবের সংসার। ভ্যানগাড়ী চালিয়ে সংসার চালায়। তার ৩ ছেলে । কোন জায়গা জমি নেই। আগে অন্যের বাড়ীতে থাকতেন। এখন প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বরাদ্ধ পেয়ে খুব খুশি।

মা বাবা ও স্মামী নেই প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বরাদ্ধ পাওয়া শিল্পী বেগমের। স্মামী পরিত্যাক্তা শিল্পী বেগম। ২ ছেলে নিয়ে থাকতেন অন্যের বাড়ীতে ঝুপড়ি ঘর উঠিয়ে। ঘর বরাদ্ধ পেয়ে ঘরে উঠে চোখে মুখে খুশির ঝিলিক দেখা যায়। জানতে চাইলে দুহাত উঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেন। বলেন স্মামী অনেক আগে আমাকে ছেড়ে চলে গেছেন। ছোট ২টি ছেলে নিয়ে অন্যের বাড়ীতে কাজ করে জীবনটা কাটিয়ে দিচ্ছি ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে। টাকা পয়সার অভাবে ঘর করতে পারিনি। বর্ষা ও শীতে অনেক কষ্ট করেছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকছি আর কষ্ট হবেনা।

উপজেলা দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেঘনা পাড়ে বসবাস করতেন নুপুর বেগম। তার স্মামী নেই।স্বামী দীর্ঘদিন কোন খোঁজ নিচ্ছেন না। হাঁস,মুরগী পালন করে কোন মতে অভাবের সংচার চালান। ৩ ছেলে নিয়ে অনেক কষ্ট করে কোন মতে জীবন যাপন করেন। এখন ৩ ছেলেকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকবে এই আশা নুপুর বেগমের ।

প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়ে খুব খুশি ৬০ বছর বয়সী মিনারা বেগম। প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়ে আনন্দিত। চোখে মুখে শুধু হাসির ঝিলিক। ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার কেউ নেই। সরকার আমাকে একটা ঘর দিয়েছে। আমি নামাজ পড়ে দোয়া করি। এখন আমার কোন চিন্তা নাই। শেখ হাসিনার প্রতি আমরা খুশি।

আশ্রয়ন প্রকল্পে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়ে খুব খুশি রিকসা চালক মোঃ নুরআলম। আজ আমরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরে থাকব। আমরা নদী ভাঙ্গা মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় মানুষের জন্য বিনা মূল্যে ঘর করে দিয়েছেন। আজ আমরা বউ বাচ্চা নিয়ে নিরাপদে থাকব। আমাদের কোন কষ্ট হবেনা। আমরা খুব খুশি। প্রায় প্রতিদিন আমাদের খোজ খবর নেওয়ার জন্য ইউএনও স্যার আসেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে আমরা খুব ভালো আছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা অক্লান্ত পরিশ্রম করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘরগুলো নির্মান করে উপকার ভোগীদের মাঝে বুঝিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরগুলোতে বসবাস করছেন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মানুষ। ঘর পেয়ে খুব খুশি উপকার ভোগীরা। তৃতীয় ধাপেও নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো এখন উদ্ভোধনের অপেক্ষায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াছ মিয়া জানান, প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমি বরাদ্ধ দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় ধাপে মোট ২১০টি ঘর নির্মান করা হবে। এর মধ্যে ১১০টি ঘর সম্পুর্ন করা হয়েছে। নির্মিত ১১০টি ঘর এখন উদ্ভোধনের অপেক্ষায়। নির্মিত ঘরগুলো বাথরুম , গোসলখানা, বারান্দাসহ ২ কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধা-পাকা ঘরের নির্মান ব্যয় ২ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা বলেন, তৃতীয় ধাপে আশ্রয়ন প্রকল্পের ২১০টি ঘরের মধ্যে ১১০টি ঘর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রধানমুন্ত্রীর উপহার ঘর নির্মানের কাজ শেষ হয়েছে। ঘরগুলো উদ্ভোধনের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৬শে এপ্রিল নির্মিত ঘরগুলো উদ্ভোধন করবেন। উদ্ভোধন শেষে আমরা উপকারভোগীদের জমির কবুলত রেজিঃসহ নির্মিত ঘরগুলো হস্তান্তর করব।
পিক ঃ ১,২,৩ মনপুরা উপজেলার হাজির হাট ইউনিয়নের জংলারখাল সংলগ্ন প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বরাদ্ধ পেয়ে খুশি আশ্রয়ন প্রকল্পের উপকারভোগীরা।