রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে চলছে শীত নিবারণ

মাজহারুল ইসলাম (রুবেল) :

শৈতপ্রবাহ আর কনকনে হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে মাদারীপুর। স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের দৈনন্দিন কাজ। তবে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে কাজে বের হয়েছেন শ্রমজীবীরা। অনেকে শীত নিবারণ করছে রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে।

জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। দিনের বেশিরভাগ সময় কুয়াশায় ঢেকে থাকে রাস্তাঘাট, ফসলি জমিসহ চারপাশ। কুয়াশার চাদরে চারপাশ ঢেকে থাকায় স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটছে। গ্রামগঞ্জে ও শহরে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস থাকায় কষ্ট বেড়েছে জনজীবনে।

এদিকে তাপমাত্রা কমতে থাকায় বিপাকে পড়েছেন পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদী এলাকার সাড়ে পাঁচ শতাধিক চরের মানুষ।

এর মধ্যে শিবচর উপজেলার কাঠালবাড়ি, সন্যাসীরচর, চরজানাজাতের মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছেন। তাই সরকারিভাবে শীতবস্ত্র দাবি করেছেন এসব অঞ্চলের লোকজন।

সরেজমিনে জেলার পৌর মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তীব্র শীতে রাস্তায় পাশে কাঠ ও কাগজ দিয়ে আগুন জ্বালিয়েছেন বেশ কিছু লোকজন। রাস্তায় চলতি পথে আগুন পোহাতে রিকশাচালক ও দিনমজুররা ভিড় জমিয়েছেন। হাড়কাঁপানো শীত ও কুয়াশা থাকায় রাস্তায় তেমন মানুষের আনাগোনা ছিল না।

রিকশাচালক মামুন বলেন, হাত-পা আর চলে না। ঠাণ্ডায় সব কিছু জইম্মা আইতাছে। ঘরে বসে থাকলে আবার খাওন জুটবো না। রিকশাডা লইয়া বাইর অইছিলাম, কিন্তু প্যাসেঞ্জার পাই না। এইহানে আগুন জ্বালানো দেইক্ষা নামলাম।

রাজু আহমেদ নামের এক সংবাদ ক্রমী বলেন, অনেক বছর পর এমন শীত পড়ছে। শীতে একদম কাবু করে দিচ্ছে। শুনলাম আরও কয়েকদিন এমন শীত থাকবে। বাড়িতে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে অনেক সমস্যা পড়েছি। এই অবস্থায় সরকার থেকে বেশি বেশি শীতবস্ত্র দেওয়া দরকার।

মাদারীপুর কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জৈষ্ঠ্য পর্যবেক্ষক আব্দুর রহমান সান্টু বলেন, আজ শনিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত কয়েকদিনের তুলনায় এটাই জেলার সবচেয়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। কয়েকদিন পর তাপমাত্রা বাড়লেও পুরো জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবারো শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।

জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, জেলায় ইতোমধ্যে ৩১ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে নতুন করে আরও এক লাখ ২০ হাজার কম্বল চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। এগুলো জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।