পঞ্চগড়ে সংঘর্ষ: মামলা বেড়ে ২৫, গ্রেফতার ১৯৩

এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানী) বার্ষিক সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরও দুইটি মামলা নিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার সংখ্যা দাঁড়ালো ২৫টি। এসব মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন জনসহ মোট ১৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

২৫ টির মধ্যে পঞ্চগড় সদর থানায় ২০টি এবং বোদা থানায় ৫টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখসহ নাম না জানা আসামি করা হয়েছে প্রায় ১১ হাজারেরও বেশি মানুষকে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস. এম সিরাজুল হুদা এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এখনো জেলা জুড়ে বিরাজ করছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক। গ্রেপ্তার আতঙ্কে জেলা সদরের আহমদ নগরের আশপাশের কয়েকটি গ্রাম ও বোদা উপজেলার কিছু গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পুলিশের পাশাপাশি গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে র‍্যাব ও বিজিবি।

পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে প্রকৃত জড়িত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

গত ৩ মার্চ (শুক্রবার) আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানী) বার্ষিক সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দেওয়ায় শুরু হয় সংঘর্ষ। পুলিশকে লক্ষ করে মুসল্লিরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও অসংখ্য টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় দুইজনের প্রাণহানি ঘটে।

সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারী জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় চালায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর, ট্রাফিক পুলিশের অফিসে অগ্নিসংযোগসহ জেলা শহরের আহমদিয়াদের চারটি দোকানে আগুন ও বেশকিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এসময় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা পঞ্চগড়। সেদিন রাত ৯টার দিকে জলসা স্থগিত ঘোষণা করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

৪ মার্চ শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যার পর আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পঞ্চগড় শহর। গুজব ছড়িয়ে পড়ে ‘আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানী) লোকজন দুজনকে গলাকেটে হত্যা করেছে। এমন গুজবে বিক্ষুব্ধ হয়ে কিছু মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাটসহ শহরের ট্রাক-টার্মিনালে একটি মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দেয় তারা।