মনপুরা প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা, বেড়েছে ভোটারদের কদর

রাকিবুল হাসান,মনপুরা প্রতিনিধি :

আগামী ৯মার্চ ভোলার মনপুরা উপজেলার ২ টি ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতির বাণী। নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা জুড়ে বইছে উৎসাহ-উদ্দীপনাও। নির্বাচনকে সামনে রেখে পাশের ইউনিয়নের লোকের মাঝেও বইছে আনন্দ ।

ভোটের তারিখ ঘোষণার পর সরব হয়ে উঠেছেন চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের প্রার্থীরা। নির্বাচনী তারিখ ঘোষণার পর লাগানো হচ্ছে পোস্টার, করা হচ্ছে উঠান বৈঠক। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে শুরু করেছেন অনেকেই। হাট-বাজারের চায়ের দোকানগুলো নির্বাচনী আলাপে মুখর হয়ে উঠছে।

সরেজমিনে উপজেলার ১নং মনপুরা ও নব ঘটিত কলাতলি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থান পোস্টারে ছেয়ে গেছে। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বাজছে নির্বাচনী নানান সঙ্গীত ও গান। প্রার্থীরা ভোটের জন্য ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।

তবে এই নির্বাচনে দেখা মিলছে ভিন্ন চিত্র । নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ইউনিয়ন বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দলবদ্ধ নারীদের প্রচারণা এবার চোখে পড়ার মতো। চেয়ারম্যন, মেম্বার, মহিলা মেম্বার পদে প্রার্থীদের পক্ষে বিপুলসংখ্যক নারী কর্মীর প্রচারণা এবারের নির্বাচনে ভিন্ন আমেজ এনে দিয়েছে। চেয়ারম্যানদের উঠান বৈঠকেও নারীদের ব্যাপক উপস্থিতি ।

এলাকাবাসী জানায়, অতীতের নির্বাচনগুলোতেও প্রচারণায় নারী কর্মীরা মাঠে ছিলেন। কিন্তু এবারের মতো এত ব্যাপক সংখ্যায় নয়।

এবার বেশির ভাগ প্রার্থীই টিম করে, সভা করে, পরিকল্পনা করে নারী কর্মীদের প্রচারণায় রেখেছেন। প্রার্থীরা বলেন, ভোটের প্রচারণায় পুরুষ কর্মীদের কারো কারো বিরুদ্ধে কাজে ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ থাকলেও নারী কর্মীদের বিরুদ্ধে তা নেই। অনেক বাড়িতে মহিলা ভোটাররা পুরুষ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। নারী কর্মীরা নমনীয়তার সঙ্গে ভোট প্রার্থনা করেন।

নদীতে ও কৃষি কাজে মাঠে পুরুষরা বাড়িতে না থাকলেও সেই বাড়ীতে নারী কর্মীরা ঢুকে ভোট চাইতে পারেন। এসব কারণে ভোট চাওয়ার ব্যাপারে নারী কর্মীদের ওপরই প্রার্থীদের আস্থা বেশি।

উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউনিয় ১নং মনপুরা । এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আমানত উল্ল্যাহ আলমগীর, উপজেলা আওয়ামীলীগের কোষাধক্ষ লোকমান হোসেন হাওলাদার আনারস প্রতীক নিয়ে, ১নং মনপুরা ইউনিয়ন আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মিঞা চশমা প্রতীক নিয়ে,মোঃশরফি হাওলাদার রজনীগন্ধা ও সাহাবুদ্দিন করছে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন দুই পাতা প্রতিক নিয়ে ।

তবে ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এই ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ আলমগীর এবং লোকমান হোসেন হাওলাদার এর মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নিজের অবস্থানকে শক্ত করতে দিনরাত কাজ করে চলেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ।

বর্তমান চেয়ারম্যান আমানতউল্ল্যাহ আলমগীর বলেন,‘আমি চেয়ারম্যান হিসেবে গত ৭ বছর এই ইউনিয়নের মানুষের সেবা করা সুযোগ পেয়েছি। এবারও আমাকে সেবা করার সুযোগ দিলে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত থাকবে। মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবার সুযোগ পাবো।

আনারস প্রতিক এর প্রার্থী লোকমান হাওলাদার বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এলাকার মানুষের উন্নয়নের জন্যই নির্বাচনে আমার অংশ নেয়া। মানুষের পাশে থেকে এই ইউনিয়নের জন্য কাজ করে যেতে চাই। ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করলে নতুনকরে মডেল ইউনিয়ন উপহার দেবো।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকালে ১নং মনপুরা ইউনিয়নের নতুন রামনেওয়াজ,তুলাতলি,চৌধুরী বাজারসহ বেশ কিছু এলাকায় দেখা গেছে, মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আমানতউল্ল্যাহ আলমগীর এর পক্ষে নারী কর্মীরা ভোট চাইছেন।একই এলাকায় দেখা গেছে, আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী লোকমান হাওলাদার এর পক্ষের নারী কর্মীদের। চেয়ারম্যন প্রার্থীদের পাশাপাশি সদস্য প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে কাজ করছে নারী কর্মীরা ।

৫নং কলাতলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যন পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতে আলাউদ্দিন হাওলাদার নির্বাচিত হয়েছে। তবে সদস্য প্রার্থীদের ভোট নিয়ে রয়েছে নির্বাচনী মাঠ সরমগম । নবগঠিত কলাতলি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মোঃ হান্নান বলেন, নারী কর্মীরা সকাল থেকেই প্রচারণায় বের হন। তাঁর পক্ষে ওয়ার্ডে ২০-৩০ জনের নারী কর্মী কাজ করছে। তিনি বলেন, কাজের ব্যাপারে নারী কর্মীরা আন্তরিক এবং দায়িত্বশীল। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, তাঁর পক্ষে ১২ জন নারী কর্মী মাঠে আছেন,তাঁর নারী কর্মীই বেশি।

মনপুরায় ২ টি ইউনিয়নে বিছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়াই সুস্থ ভাবে চলছে নির্বাচনী প্রচারনার কাজ । এতে করে জয়ের ব্যাপারে আসা করছেন সকল প্রার্থী ।

স্থানীয় সচেতন মনে করেন, ‘নারীরা খুবই সুশৃঙ্খল এবং আন্তরিকতার সঙ্গে ভোট চান। যা প্রার্থীদের জন্য সুফল বয়ে আনে।’ এদিকে এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে কাজ করছেন নির্বাচন কমিশন ।