যৌনকর্মীর জানাজা দেয়া ওসির অনুরোধ ‘স্যার ডাকবেন না’

জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী :

কয়েকদিন আগে একটি ভিন্নরকম বিষয়ে সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান।

দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর এক যৌনকর্মীর জানাজা-দাফন ও কুলখানি করে বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনায় আসেন তিনি। বড় বড় আন্তর্জাতিক মিডিয়া এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। কারণ ওই যৌনপল্লীর যৌনকর্মীদের কখনও দাফন-কাফন করা হতো না। ওসির উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো ওই যৌনকর্মীর জানাজা ও কুলখানি করা হলো।

এবার নিজ কার্যালয়ের সামনে একটি ব্যানার টাঙিয়ে আলোচনায় এসেছেন ওসি আশিকুর রহমান। সেখানে তিনি পুলিশকে স্যার না ডাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে পুলিশের স্লোগান, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার।’ আশিকুর রহমান যেন বিষয়টিকে বাস্তবে পরিণত করলেন। গোয়ালন্দঘাট থানার ফেসবুক আইডিতে নিজের অফিস কক্ষের দরজার সামনে টাঙানো একটি ব্যানারের ছবি পোস্ট করেন ওসি আশিকুর।

এতে লেখা রয়েছে, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার। এটি একজন গণকর্মচারীর অফিস। যেকোনো প্রয়োজনে এ অফিসে ঢুকতে অনুমতির প্রয়োজন নেই। সরাসরি রুমে ঢুকুন। ওসিকে স্যার বলার দরকার নেই।’

http://picasion.com/
এ বিষয়ে ওসি আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমি তো বলব এটাই হওয়া উচিত। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয়। সুতরাং জনগণকে সেবা দেয়াই আমাদের কাজ। স্যার বলার প্রশ্নই আসে না।’

তিনি আরও বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক জনগণ। মালিক তার কর্মচারীকে স্যার বললে একটা শূন্যতা থেকে যায়। জনগণ যদি আমাকে মনের কথা বলতে না পারে সেক্ষেত্রে সেবা দেয়া খুব কষ্টকর। স্যার বললে দূরত্ব তৈরি হয়। আমি চাই জনতা বিপদে-আপদে পুলিশের কাছে ছুটে আসুক। এজন্য ওসিকে স্যার না বলার অনুরোধ আমার।

এদিকে আশিকুর রহমানের পোস্ট করা সেই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আজকের যুগে পুলিশের প্রতি মানুষের যে বিরূপ একটি মনোভাব রয়েছে, তা আশিকুর রহমানের মতো কর্মকর্তাদের জন্য অনেকটাই দূর হয়ে যাবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। এমন জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ নেয়ার জন্য আশিকুর রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০