‘কচুরিপানা’ নিয়ে সংঘর্ষের সংবাদটি ভুয়া

জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ :

২৩ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার একটি জলমহালকে কেন্দ্র করে পূর্ববিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় ছবিটি তোলা।

‘সুনামগঞ্জে কচুরিপানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একটি সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হলেও বাস্তবে ওইদিন এ সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার একটি জলমহালকে কেন্দ্র করে পূর্ববিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনাকে কচুরিপানা নাম দিয়ে ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে কয়েকটি গণমাধ্যম।

http://picasion.com/

 

স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের উপ্তিরপাড় গ্রামের পাশে মনুকাটা জলমহাল নিয়ে মো. আলী আহমদ ও ফারুক আহমদদের সঙ্গে মনুকাটা জলমহাল নিয়ে একই গ্রামের মো. আমির আলী ও হযরত আলীদের বিরোধ চলছিল। বেশ কয়েকমাস ধরেই এ জলমহাল নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে টান টান উত্তেজনা চলে আসছিল। যার রেশ ধরে ২৩ জানুয়ারি বিরোধকে কেন্দ্র করেই এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এতে উভয়পক্ষের ২৫ জন আহত হন।

এদিকে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ২০ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। এটা একটি ভুয়া সংবাদ। এক মাস আগের জলমহালকে নিয়ে সংঘর্ষকে কচুরিপানার নাম দিয়ে একটি চক্র পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে হাসির পাত্র বানানোর চেষ্টা করছে।

২৩ জানুয়ারি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হওয়া হয়রত আলী বলেন, আমাদের সংঘর্ষ হয়েছিল এক মাস আগে। এটাকে ওই সময় জলমহাল থেকে উঠে আসার সময় সংবাদকর্মীরা ছবিটি তুলেন এবং পরবর্তীতে এটি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। কিন্তু গতকাল থেকে দেখলাম এটি কচুরিপানা নিয়ে সংঘর্ষ বলা হচ্ছে কিন্তু বিষয়টি ভুয়া।

পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের উক্তিরপাড় এলাকায় কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। গণমাধ্যমে যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে সেটি একমাস আগের একটি সংঘর্ষ। এ সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে, আসামি আটক হয়েছে এবং হাজত হয়ে এখন জামিনে মুক্ত হয়ে তারা ভালোভাবে চলাচল করতেছে।

gif maker

 

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ বলেন, আমরা এমন কোনো সংঘর্ষের ঘটনার কথা শুনিনি। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটতো তাহলে আমরা গণমাধ্যমকর্মীরা জানতাম। মূলত ঘটনাটি একমাস আগের এবং এটি একটি জলমহাল নিয়ে ছিল। এ সংঘর্ষের সঙ্গে কচুরিপানার কোনো সম্পর্ক নেই।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি এক মাস আগের। আমরা এ ঘটনায় আসামিদের আটক করে আদালতে প্রেরণও করেছি। ২০ ফেব্রুয়ারি এমন কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে কাজ বস্তুনিষ্ট ও সত্য সংবাদ তুলে ধরা। কিন্তু অন্য একটি সংঘর্ষের ছবি ব্যবহার করে সংবাদ প্রকাশ করা ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং মিথ্যা।