চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নার্স-আয়াদের রমরমা বাণিজ্য : টাকা ছাড়া মেলে না চিকিৎসা সেবা

চাঁদপুর রিপোর্ট ডেস্ক :

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্সরা রোগীদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই হাসপাতালে নার্সদের টাকা না দিলে কোন ধরনের সেবা মিলছে না ।

রোগীদের স্যালাইন ও ইনজেকশন শরীরে পুশ করতে ক্যানোলা পড়ানো জন্য নার্সদের দিতে হয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। নার্সদের চাহিদামতো টাকা না দিলে শুরু হয় অসহায় রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার ও সেবা থেকে বঞ্চিত রোগীরা।

ভুক্তভোগী শিকার বেশ কয়েকজন রোগী অভিযোগ করে বলেন, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এর পূর্বে অনেক ভালো সেবা ও চিকিৎসা দেওয়া হতো।

http://picasion.com/ বর্তমানে হাসপাতালে জরুরী বিভাগ থেকে শুরু করে সবগুলো বিভাগে দায়িত্বে থাকা নার্সরা টাকা ছাড়া কোন সেবা দেয় না। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তারদের প্রশ্রয় পেয়ে দায়িত্বরত নার্সরা এভাবে প্রকাশ্যে রোগীদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

আবার টাকা না দিলে হাসপাতালে সিট থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে নিচে মেঝেতে নোংরা বিছানায় দিচ্ছেন।

সদর হাসপাতালে শিশু বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা তিন বছরের শিশু আফরিনের বাবা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানায়, প্রচন্ড জ্বর ও ঠান্ডা জনিত কারণে শিশু আফরিন কে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এসময় আফরিনের শরিরে ইঞ্জেকশন ও ওরস্যালাইন দেওয়ার জন্য ক্যানোলা ঢুকাতে কর্তব্যরত নার্সকে অনুরোধ করা হয়।

এ সময় শিশু বিভাগের দায়িত্বরত নার্স কোহিনুর তার সহযোগী অন্য একজন নার্সকে পাঠিয়ে ৫০০ টাকা দাবি করে। তাদেরকে অবশেষে ৩০০ টাকা দেওয়ার হলে শরীরে ক্যানোলাটি ঢুকিয়ে দেয়।

টাকা কম দেওয়ায় নার্সরা খুব দুর্ব্যবহার করে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ফরিদগঞ্জ থেকে আসা দুই বছরের শিশু সায়েম চিকিৎসার জন্য আসলে তার পরিবারের কাছ থেকে একই কায়দায় নার্সরা টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা না দেওয়ায় সিট থাকা সত্ত্বেও শিশুকে মেঝেতে নোংরা বিছানায় শুয়ে রাখে। শিশু সায়েমের মা ফরিদা বেগম জানায়, এই হাসপাতালে টাকা দিলেই মিলে চিকিৎসা সেবা। হাসপাতাল থেকে কোন ধরনের ওষুধ দেওয়া হয় না, সব ওষুধ বাহির থেকে কিনে আনতে হয়।

gif maker

হাসপাতালে ঔষধ তারা অন্য জায়গায় পাচার করে। শিশুকে একটিমাত্র ক্যানোলা পায়ের ঢুকাতে গিয়ে দায়িত্বরত নার্সকে টাকা দিতে হয়েছে। টাকা না দিলে তারা খুব দুর্ব্যবহার করে। হাসপাতালে শিশু বিভাগের দায়িত্বরত নার্স কোহিনুর জানায়, ইনডোর থেকে যেসকল রোগীরা আসেন তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়।

হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় না যদি কেউ খুশি হয়ে টাকা দেয় তাহলে নেই। টাকা নেওয়ার বিধান নেই তা সত্য তবে ইনডোর থেকে আসা রোগীদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হয় তা নার্সরা ভাগ করে নেয়। এদিকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সদর উপজেলার সহ অন্যান্য জায়গা থেকে যেসকল অসহায় রোগীরা এই হাসপাতালে এসে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নেয় প্রথমত সেখানেও টাকা দিতে হয়।

তারপরে ওয়ার্ডগুলোতে ভর্তি করা হলে সেখানে দায়িত্বরত নার্সরা টাকার জন্য খুব দুর্ব্যবহার করে। এছাড়া হাসপাতালের ডাক্তারদের সকল ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর জন্য তাদের নির্দিষ্ট কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের পাঠিয়ে থাকে। সদর হাসপাতালের সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষার না করিয়ে তাদের মালিকানাধীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেগুলো করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এছাড়া রোগীদের ঠিকমতো ডাক্তাররাও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে না।

হাসপাতলে দিনদিন দুর্নীতি বেড়েই চলছে এসকল দুর্নীতিবাজ ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।