চান্দিনায় প্রথম করোনায় রোগী শনাক্ত : ৭ পরিবার লকডাউন

টি. আর. দিদার, চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :

কুমিল্লার দেবীদ্বারের উপজেলা নবীয়াবাদে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর রক্ত সংগ্রহ করে নিজেই আক্রান্ত হলো চান্দিনা উপজেলার এক ডায়গনষ্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনেশিয়ান। চান্দিনায় করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সারা দেশে ২০৯জন এবং কুমিল্লার ৯জন করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত রোগীর মধ্যে চান্দিনার প্যাথলজি টেকনেশিয়ান এক নারীর (১৯) নাম রয়েছে।

ওই নারী উপজেলা সদরের দত্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনেশিয়ান। তিনি চান্দিনা উপজেলার এতবারপুর উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

কোভিড-১৯ পরীক্ষায় তার রিপোর্ট পজেটিভ আসার মধ্য দিয়ে করোনা আক্রান্ত উপজেলার সাথে যুক্ত হলো চান্দিনা। তবে করোনা আক্রান্ত ওই রোগীর কোন উপসর্গ দেখা দেয় নি।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে পজেটিভ ফলাফল আসার পর ওই নারীর বাড়িসহ আশ-পাশের ৬টি এবং তাকে বহনকারী পার্শ¦বর্তী মধুসাইর গ্রামের এক রিক্সা চালকের বাড়িসহ ৭টি বাড়ি লকডাউন করেন উপজেলা প্রশাসন। লকডাউনে থাকা সবগুলো পরিবারের খাবারের দায়িত্ব নেয় উপজেলা প্রশাসন।

রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দত্ত মেডিকেল হল নামের একটি ফার্মেসীও লকডাউন করা হয়। এর আগে ১১ এপ্রিল শনিবার মেয়েটির কর্মস্থল দত্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার লকডাউন করে প্রশাসন। রবিবার (১২ এপ্রিল) মেয়েটিসহ ওই ডায়াগনস্টিকের ৪জন কর্মীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ¯েœহাশীষ দাশ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. আবুল ফয়সল।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাযায়, পাশর্^বর্তী দেবীদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ গ্রামের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী জীবন কৃষ্ণ সাহা মৃত্যুর আগে গত ৪ এপ্রিল চান্দিনার দত্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কয়েকটি পরীক্ষা করিয়েছিলেন। এসময় ওই মেয়েটি পরীক্ষার জন্য রোগীর রক্ত সংগ্রহ করেছিল। ৪ এপ্রিল করোনা রোগীর রক্ত পরীক্ষা করার পর ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দত্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা ছিল।

এই সময়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার শত শত রোগী ও মানুষ আসা-যাওয়া ও পরীক্ষা করিয়েছেন। ফলে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত মেয়েটি বাড়ি থেকে চান্দিনা আসা-যাওয়া করেছে। তার ব্যবহৃত যানবাহন ও সাথের যাত্রীদের মধ্যেও করোনা ছড়িয়ে পরার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ¯েœহাশীষ দাশ জানান- আক্রান্ত রোগীর বাড়িসহ ৭টি পরিবারকে লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া দত্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও দত্ত মেডিকেল হল নামের দুটি প্রতিষ্ঠানও লকডাউন করা হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে লকডাউন করা পরিবারগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করবেন।