সাভারে ৩০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করে হাতুড়িপেটা

উপজেলা প্রতিনিধি সাভার (ঢাকা) :

সাভারের চারাবাগ এলাকার এলাইন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের হাতুড়িপেটা করে বের করে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।

একই সঙ্গে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদেরকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা কারখানার সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।


শিল্প পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, এলাইন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করেন। এসব শ্রমিকদের দফায় দফায় ছাঁটাই করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে যাদের চাকরির বয়স দুই থেকে তিন মাস এমন দুই শতাধিক শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) কমপক্ষে ৪০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাই শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করে শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে শনিবার সকালে সকল শ্রমিক একযোগে কারখানার সামনের সড়ক তিন ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষুব্ধ নারী শ্রমিক শারমিন আক্তার বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো রকম কারণ ছাড়াই জোরপূর্বক ছাঁটাই করেছে। আমাদের জীবন এখন অনিশ্চয়তায়। দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে বাধ্য করে আমাদের করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে ফেলা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত না হয়েও আমাদের মাঝে এর যে প্রভাব পড়েছে তা মৃত্যুর চেয়ে বেশি যন্ত্রণাদায়ক। আমাদের দাবি একটাই কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে কাজে পুনর্বহাল করুক; না হয় শ্রম আইন অনুযায়ী আমাদের তিন মাস ১৩ দিনের বেতনসহ যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করুক।

শ্রমিকরা জানান, কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিটন আহমেদ জোরপূর্বক তাদের কাছ থেকে অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর রেখে বের করে দিয়েছেন। তিন হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়ে নতুন শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছেন তিনি। আজকে ৩০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। কিন্তু কারখানা থেকে বের হতে না চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে বের করে দেন।

ছাঁটাই ও ঘুষ নিয়ে চাকরি দেয়ার বিষয়ে জানতে কারখানাটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিটন আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর সিনিয়র এএসপি আউয়াল হোসেন বলেন, কিছু শ্রমিককে ছাঁটাই করার প্রতিবাদে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে বলি। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ আমাদের অনুরোধ মেনে নিলে সব শ্রমিক কারখানায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগদান করেন।