মাঠেই কাঁদে কৃষকের স্বপ্ন

হুমায়ুন কবির বেপারী :

শ্যামল বাংলা মানেই অপরূপ বাংলাদেশ। কৃষক মানে দেশের সোনার ছেলে। তাইতো যত দূর চোখ যায় দেখি সবুজে ঘেরা ফসলের মাঠে আমার রূপসী বাংলার মুখ। এ মাঠে শষ্য আর ধান ফলে সোনালী রং মেখে। বাতাসে দোল ছড়ায় নবান্নের সুগন্ধ। বাড়ী ভরা সবুজ বনায়ন।

ফলাদি ভরা গাছ। পুকুর ভরা মাছ। গোয়াল ভরা গরু। এই তো আমার কৃষি নির্ভর সোনালী বাংলাদেশ। কৃষকের রৌদ্র পোড়া ও বৃষ্টি ভেজা দেহ মাখিয়ে কৃষক ফলায় সোনার ফসল। তাইতো কৃষক মানেই আজ খাদ্য উৎপাদনের নিরব কান্ডারী। কৃষক মানেই অন্যের মুখের খাবার সন্ধানী। কৃষক মানেই দেশের অলংকার।

আফসোস কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে কৃষক যেন এক হতভাগা নাম। ওরা রৌদ্রে পুড়ে ফসল উৎপাদন করে। মাঠের ফসল ঘরে তোলার আগেই মুনাফা ভোগীরা কৃষকের উপর জুলুমের হাত চালিয়ে দেয়। নিমিশেয় চুরমার হয়ে যায় তাদের দীর্ঘ শ্রম ও ঘামের মূল্য। কে করিবে নিষ্ঠুর এ মুনাফা ভোগীর বিচার।


সব বিবেচনা করে দেখা যায় কৃষকরা নিয়মিত অধিকার বঞ্চিত। তাদের জন্য নেই সুদ মুক্ত ঋণ সুবিধা। নেই বণ্যা বা জলোচ্ছ্বাসে ফসলি জমির ক্ষতিপূরণ সুবিধা। কৃষক পায়না উৎপাদনের ন্যায্য মূল্য সুবিধা। সরকারের নজরদারীর অভাবে একটি মুনাফাভোগী চক্র মৌসুমে হাতিয়ে নেয় তাদের লভ্যাংশ। তখনি কৃষক কাঁদে মাঠে। ধীরে ধীরে কৃষক হারায় তাদের সোনালী স্বপ্ন। দেশে তৈরি হয় খাদ্য সংকট।

তবে দেশে সরকার আছে। কৃষি মন্ত্রণালয় আছে। কিন্তু কৃষকরা আর্থিক সংকটে কৃষি উপকরণ ক্রয় করতে পারে না। তারা সার, বীজ ও গবাদিপশুর খাদ্য সংকটে রয়েছে । এক দিকে কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না অন্যদিকে পেলেও বেশি পারিশ্রমিক গুনতে হচ্ছে। যা কৃষকের উৎপাদনের খরচের সাথে সাংঘর্ষিক।

কৃষক ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় মাঠে নষ্ট হচ্ছে ধানের বাম্পার ফলন। সুতরাং কৃষি উৎসবে মাঠেই কাঁদে কৃষকের স্বপ্ন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কৃষকের জন্য এগিয়ে আসুন। মনে রাখবেন কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আজ হয়তো মানবিক কারণে কৃষকের ধান কেটে রাজনীতিক নেতারা ফটোসেশন করছে। কিন্তু এভাবে আজীব চলবে না। আপনি অবিলম্বে কৃষকের কৃষি সুবিধা গুলো বন্টন করুন। কৃষকের জন্য কৃষি প্রণোদনা ঘোষণা করুন।

লেখক : হুমায়ুন কবির বেপারী, নির্বাহী সম্পাদক, সাপ্তাহিক সাদা কাগজ।