ফেসবুক মেসেঞ্জারে চ্যাটের মাধ্যমে সুখের প্রদীপটাকে নিভাতে চায়

নজরুল ইসলাম তোফা :

আমাদের এ সমাজকাঠামোর নানান দিক বদলায়, নানান বাঁক আর উথাল পাথালকে ছুঁয়েও যেতে হয়। এইজীবনটাকে খুব সুন্দর করতে হলে সৌন্দর্যের নিদর্শন হিসেবে লেখালেখি শিল্পটাকেই মানব জীবনের বিশিষ্ট স্থানে আসন না দেওয়াটা বোকামি।

কে বা কারে সেই যোগ্য স্থানটা করে দিবে। যে যার- নিজের স্বার্থেই ব্যস্ত। হুমায়ূন আজাদের একটি উক্তি মনে পড়ে, ”যতো দিন মানুষ অ-সৎ থাকে, ততো দিন তার কোনোই শত্রু থাকে না, কিন্তু- যেই সে সৎ হয়ে উঠে, ঠিক তখনই তার শত্রুর অভাব থাকে না।”

অ-মানুষ কি সৎ মানুষকে দিনেদিনেই শত্রুর কাতারে ফেলছে। এতো দিন ধরে বহু গণমাধ্যমের বহু লোকদের নিকটে- “ভালো লাগা কিংবা ভালোবাসার কথা অনেক শুনেছি।

বহু স্মৃতিকথা গুলো বারবারই যেন লেখালেখির মাঝে উৎসাহ যোগায়। সেই মানুষরাই যখন অতীত স্মৃতিকথা গুলোকে ভুলে বিভিন্ন নেতিবাচক কথা শুনায়, বহুত খারাপ লাগে।

লেখালেখি করলেই কি, তাদের কাছ থেকে এই ধরনের নেতিবাচক কথা গুলো শুনতেই হয়ে। কোনো মানুষের নিকটে কিছু চাওয়ার থাকে না। তবুও আঘাত পেতে হবে।

উইলিয়াম শেক্সপিয়র বলেন, ”আমি সবসময় নিজেকে সুখী ভাবি, কারণ আমি কখনো কারো কাছে কিছু প্রত্যাশা করিনা, কারো কাছে কিছু প্রত্যাশা করাটা সবসময়ই যে দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়”।

এই উক্তির সঙ্গে এজীবনের কিছুটা হলেও মিলে যায়। কিন্তু অমানুষরা কি করেই বুঝে, সুখী মানুষের সুখ যে কোনো উপায়ে নষ্ট করতে হবে।

সুতরাং এমন পরিবর্তনশীল মানুষের চরিত্রগুলো আজকে খুবই ভাবায়, বড়ই অবাক করে। বেশকিছু অমানুষ কৌশলেই ফেসবুকের ইনবক্সে ইদানিং নেতিবাচক বহু শব্দ শুনায়, আমি তাদেরকে ডব্লিউ জি নেহাম এর উক্তির সঙ্গে এক মত পোষণ করেই বলি, ‘আমি জ্ঞানী নই, কিন্তু ভাগ্যবান কাজেই আমি সর্বতোভাবে সুখী।

অনেকটা গাছে উঠলে চারপাশ যেইরকম রঙ্গিলা লাগে, ঠিক সেরকম লেখা লেখির জগৎটা ভীষণ রঙ্গিলা মনে হয়, অবশ্যই তা অনেক আগের কথা।

কিন্তু- এখন আর রঙিন লাগে না, বর্তমানে মনের গহীনে এক বিষাক্ততার রক্তিম ছোবলে সাঁতার কাটতে হয়। এখন হতাশায় বেশ বড়সড় দীর্শশ্বাস ফেলি। দুনিয়া জুড়েই কি গণ মাধ্যমের মাঝেই বিষাক্ত বাতাস ছড়িয়ে বেড়ায়।

এমন গণ মাধ্যম ও মিডিয়া জগৎটাকে কেউ কি কখনো উপলব্ধি করতে পারে না, ভালো লেখক না হলে কোনোকিছুই সৃষ্টি হতো না। এই কথাটিকে বোঝার মতো চেতনা কি কারো নেই।

কতো দিন আর সহ্য করে যাবে ভালো মানুষ। মারিয়াক তাঁর এক উক্তিতে বলেছেন,- ‘বলির পাঠারা সব সময়েই ধারন করেছে মানুষের- অত্যাচার, দুর্নীতি আর খুব কষ্ট করার হিংস্র প্রবণতাকে মুক্তি দেয়ার রহস্যময় ক্ষমতা।’

ভালো মানুষের যেন নিজস্ব কর্মে বাধা, সৃজনশীলতাকে সঠিকভাবে ভালো মর্যাদা পূর্ণ জায়গা থেকে বঞ্চিত হয়। তাদের একটা কথা বিশ্বাস করতে হবে গণমাধ্যম কিংবা মিডিয়া জগতে ভালো মানুষের অভাব।

আজ তাঁরা যদি ভালো থেকেছে কালই সব কিছুকে ভুলে চোখ পাল্টিয়ে ফেলেছে। লেখকেরা আজকের দিনে সে সব মানুষদের কাছে অবহেলিত। এমন কথা গুলো লিখতে এবং টাইপ করতে চাইনি কিন্তু বাধ্য করেছে বেশ কিছু গণমাধ্যমের মানুষ।

এই অঙ্গনের এমন হীনচরিত্রের মানুষ যে আছে, তারা এতোটা কুৎসিৎ মনের অধিকারী, আজকে গভীর কষ্টে যেন বারবার ভাবিয়ে তুলে।

লেখকরাই তো তাদের অলংকার হওয়া উচিত, তাদের স্ব স্ব জায়গাতে প্রতিটা লেখকের মনের কথা সহ নান্দনিকতার সুন্দর রুপ ফুটে ওঠে।

তাদের নিকট লেখকসমাজের জীবন কি পুরাটাই বৃথা হয়ে যাবে, গলা ফাটায়ে সমালোচনা করবে আবার সেই লেখকদের নামে বদনাম করবে।

কেউ আবার সেই লেখকের নাম পরিচয় বাদ দিয়েই লেখকদের নান্দনিক লেখাটাকে তাঁরা নিজ পত্রিকা কিংবা অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করবে। এটা খুবই দুঃখ জনক ব্যাপার, তখন কষ্ট রাখার জায়গা থেকে না।

আসলে এই লেখালেখি মানুষের সহজাত ধর্ম। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে এমন ভাবেই তৈরি করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন যে, তাদের প্রকাশের একটা নিজস্ব ভঙ্গি থাকে।

কেউবা তাকে বক্তব্যের মধ্যে ভালো প্রকাশ করে, কেউ বা লেখা লেখির মাধ্যমেই প্রকাশ করে থাকে। আবার কেউ কেউ নাচ, সাজ গোজ, আর্ট কিংবা চিত্রাঙ্কন এবং অভিনয়ের মাধ্যমেই প্রকাশ ভঙ্গি দেখিয়ে থাকে।

কেউ লিখে প্রকাশ করলে তাকে ‘অনেক ছোট’ করেই দেখা হবে কেন? যদি এলেখালেখিটা মানুষের প্রকাশের সবচেয়ে বড় ধর্ম হয়ে থাকে, তবুও সবাই লিখতে পারে না।

এটি অবশ্য একটি অনন্য গুণ, যা চর্চা করতে হয়। আপাতত সৃষ্টিতে লেখা- লেখিকে বিশ্বাসের ভিত্তিভূমি বানিয়েই বুকের মধ্যে যেন আগলে রেখেছিলাম, তা আজ কেমন যেন আলগা হয়ে গেলো।

কি করে পৌঁছে গেলাম- এই পচনশীল সমাজের অসৎ মানুষের কাছে, আজ শুধু মাত্রই তাদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে নির্বোধ থাকতে হয়। সমস্ত আবেগকে যেন নিরাশ্রয় করা একজন শূন্যতাবোধের মানুষ আমি।

তবে এখন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই না, সময় ও সুযোগ পেলে লিখনিতেই তাদের যথাযথ জবাব দেওয়া হবে। যা অসুন্দর, যা কদর্য, যা কুৎসিৎ, যা কদাকার সে সবকে কোনো-না-কোনো উপায়ে জীবন থেকে তাড়াতে হবে।

খুব সত্য যেমন বাঞ্ছনীয় জীবনের অপরিহার্য এক অঙ্গ, শ্রেয় যেমন বাঞ্ছনীয় এ জীবনের অপরিহার্য একটি অঙ্গ, সুন্দরও তেমনি সেই বাঞ্ছনীয় জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ। কিছু মানুষ, মানুষকেই চিনছে না। মানুষের মধ্যেই সত্য, সুন্দর বা মঙ্গল বোধের এতোই অভাব।

ভালোটাও ভালো লাগে না। বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ আজকের এ দিনে হিংসায় লিপ্ত। নিন্দা করা ছাড়া যেন তাদের মগজ কাজ করেই না।

সুতরাং উইলিয়াম শেক্সপিয়রের মতের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলা যায়,- ”তারাই সুখী যারা নিন্দা শুনে এবং নিজেদের সংশোধন করতে পারে”।