সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরল শিশুপুত্র, কিন্তু বাবা

নিউজ ডেস্ক :

করোনা জয় করে অবশেষে ঘরে ফিরল জয়পুরহাটের ৭ বছরের সেই শিশুটি। তবে যে বাবা সন্তানের মঙ্গলের জন্য স্বেচ্ছায়পুত্রের সাথে আইসোলেশনে ছিলেন তার আর ঘরে ফেরা হয়নি।

কারণ পজেটিভ রোগীদের সাথে থাকার কারণে তার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলেও এখনো রিপোর্ট আসেনি। এ নিয়ে জেলায় করোনায় সুস্থ হলেন মোট ২৯ জন।

জানা যায়, মাত্র ৭ বছর বয়সের ছোট শিশুটি দরিদ্র মা-বাবা ও আরো দুই ভাইবোনের সঙ্গে ঢাকার নারায়ণগঞ্জেই থাকতো। এরই মাঝে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে অনেকটা লুকোচুরি করেই পরিবারের সঙ্গে চলে আসে গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটের পুরানাপৈল ইউনিয়নের হেলকুন্ডা গুচ্ছগ্রামে।

এরই মাঝে ২৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) স্থানীয় এক স্বাস্থ্যকর্মীর সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ ফেরত ওই পরিবারটির সব সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় একটি ল্যাবে।

পরে ২৯ এপ্রিল (বুধবার) রাতে স্থানীয় সিভিল সার্জনের মাধ্যমে জানানো হয়, ওই পরিবারের সব সদস্যের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও, দুর্ভাগ্যবশত শিশুটির রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে।

সেই সময় সংবাদটি শোনার পরই যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে দরিদ্র মা-বাবার। কিভাবে তাকে ছেড়ে থাকবে তারা। এর আগে কখনোই সে কোথাও একা রাত কাটায়নি। এমন চিন্তায় যখন দিশেহারা পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

ঠিক তখনই জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন চন্দ্র রায় এগিয়ে আসেন পরিবারটির পাশে।

তিনি বৃহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তুলসী চন্দ্র রায় ও পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকতকে নিয়ে ওই শিশুটির বাড়িতে যায়।

সেখানে তাদের বুঝিয়ে এবং শিশুটির সঙ্গে আলাদা রুমে তার বাবাকে রাখার শর্তে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে আক্কেলপুর উপজেলার গোপিনাথপুর এলাকায় আইএইচটির আইসোলেশনে পাঠিয়ে দেন। এ সময় শিশুটির বাড়িসহ পাশের ৪টি বাড়িও সম্পূর্ণরুপে লকডাউন করা হয়েছিল।

সবশেষ জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপিনাথপুর আইএইচটি’র আইসোলেশনে ১৫ দিন চিকিৎসা শেষে (১৫ মে) রাতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় খুশি শিশুটির পরিবারের সদস্য, পাড়া-প্রতিবেশী, স্বজন ও জয়পুরহাটবাসী।