কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করলেন স্বামী

 

নিউজ ডেস্ক :
নওগাঁর সাপাহারে স্বামীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জেসমিন (৩৩) নামে এক গৃহবধূর উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে মাথার চুল কেটে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী রফিকুল ইসলাম (৪০) ও শাশুড়ি রাজিয়া বেগম (৭০) পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হাপানিয়া গ্রামে।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম এর সাথে নির্যাতিতার প্রায় এক বছর আগে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর দু’তিন মাস ভালো ভাবেই কেটেছে তাদের দাম্পত্য জীবন। এর পর থেকেই শুরু হয় স্বামী ও শাশুড়ির শারীরিকসহ নানা ধরনের পাশবিক নির্যাতন।

গত ২৩ মে পার্শ্ববর্তী এক ধনাঢ্য ব্যক্তিকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট কুৎসা রটানোর জন্য ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেন তার স্বামী রফিকুল ইসলাম। যার কারণে তার উপর চালানো হয় পৈশাচিক নির্যাতন।

শারীরিক নির্যাতন সহ্য করেও স্বামীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে ওই গৃহবধূর মাথার সমস্ত চুল কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলে দেয় তার পাষণ্ড স্বামী। এসময় তাকে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় এবং ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকিধামকি দেওয়া হয়। এ ঘটনা জানাজানি হলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তার স্বামী ও শাশুড়ি।

স্বামী ও শাশুড়ির হুমকির প্রেক্ষিতে নিজের প্রাণ হারানোর ভয়ে ঘটনাটি তিনদিন ধরে গোপন রাখে ওই গৃহবধূ। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই গৃহবধূ পুকুর ঘাটে গেলে এলাকাবাসীর মাঝে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এরপর থেকেই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়ি পালাতক রয়েছে। গৃহবধূ জেসমিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁনপুর সাহেব গ্রামের নূরল ইসলামের মেয়ে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গৃহবধূর শ্বশুর ও রফিকুল ইসলামের বাবা হোসেন আলী বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ, আমার ছেলে ও স্ত্রীর এমন অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকেও বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হতে হয়। এ কারণে তাদের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে উঠতে পারিনি।

ঘটনাটি জানাজানির পর মঙ্গলবার দুপুরে সাপাহার থানা পুলিশের উপ-পরির্দশক (এসআই) ইমরান হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান সাপাহার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই নিউটন।