চাঁদপুরে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে ৮ জন আক্রান্ত

 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :
চাঁদপুরে করোনার নমুনা সংগ্রহকারী বেশ কয়েকজন এখন নিজেরাই করোনা আক্রান্ত। আক্রান্ত ৮ জনকে নিজ বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

এদিকে নতুন করে আরো ২০ জন মিলিয়ে চাঁদপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে এখন ২শ ৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে এই পর্যন্ত মারা গেছেন ২১ জন।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্তের চেয়ে মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবগত করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, মানুষের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে হেলথ টেকনোলজিস্ট, তাদের সহায়তাকারী এবং এম্বুলেন্স চালকও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে গুরুত্ব দিয়ে তাদের সবার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। নিজ নিজ বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের থেকে আলাদা রেখে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুরে করোনার বিস্তার শুরু হলে আব্দুল মালেক মিয়াজী নিজেই ৫ শতাধিক ব্যক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। গত ৫ দিন আগে একজনের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিজেই করোনা আক্রান্ত হন তিনি। আব্দুল মালেক মিয়াজী সিনিয়র টেকনোলজিস্ট পদে কাজ করছেন ২৫০ চাঁদপুর শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে।

তার মতো দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জেলা বক্ষ-ব্যাধি হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট শাখাওয়াত হোসেন এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহিদুল ইসলামসহ আক্রান্ত হন ৮ জন।

চাঁদপুরে করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদৌলা রুবেল জানান, মূলত নানাধরনের রোগীর নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ করেন থাকেন হেলথ টেকনোলজিস্টরা। এটি তাদের জন্য প্রচণ্ড ঝুঁকি বটে। তারপরও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে নিজেরাই আক্রান্ত হচ্ছেন।

এই বিষয় বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এসোসিয়েশন (বিএমটিএ) চাঁদপুর শাখার সহসভাপতি মাসুদ হাসান বলেন, জীবনের ঝুঁকি আছে। এমনটা জেনেও ধৈর্য্য এবং সাহসিকতার সঙ্গে হেলথ টেকনোলজিস্টরা করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন। সময়ের এই সাহসী করোনাযোদ্ধাদের প্রতি সুদৃষ্টি রাখতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান, সংগঠনের নেতা মাসুদ হাসান।

অন্যদিকে, জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটের শয্যা সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে। এই নিয়ে জেলার ৭ উপজেলা মিলিয়ে মোট শয্যা সংখ্যা ১৭৫।

প্রসঙ্গত, গত মার্চের মাঝামাঝি থেকে এই পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয় নানা বয়সী ৫৩ জন মারা গেছেন। যাদের মধ্যে ২১ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। ২২ জনের নেগেটিভ এবং অবশিষ্ট ১০ জনের নমুনার রিপোর্ট এখনো পৌঁছায়নি জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে।