মুখে উচ্চারিত একটি শব্দের জন্য অশান্তিতে ভরে যেতে পারে পরিবেশ

কথিকা : বিষয় –  একটি শব্দ

ক্ষুদীরাম দাস :

একটি শব্দ কখনো কখনো আমাদের মুখ থেকে বিষের মতোই বের হয়। আমরা অনেক সময় আমাদের মুখ থেকে রূক্ষ শব্দ বের করি। যে শব্দটিতে অন্য একজনের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়ে যেতে পারে। যে ক্ষত দীর্ঘদিন তার হৃদয়ে গেঁথে থাকে। সেখান থেকে হয়তো রক্তক্ষণ হতেই থাকে। এতে করে তার হৃদয়ে ঘৃণার জন্ম নিতে পারে। সম্পর্কে ফাঁটল ধরতে পারে। অশান্তিতে ভরে যেতে পারে পরিবেশটি। আমাদের মুখ থেকে এ ধরনের শব্দ বের হয় তখন আমরা কোনোভাবেই সামনে থাকা মানুষটির কষ্ট পাওয়ার কথা ভাবি না। চিন্তাও করি না যে, আমার এই শব্দের কারণে সে কতখানি যাতনায় ভুগছে।

আবার কখনো কখনো আমাদের মুখ থেকে অমৃতের মতো শব্দ বের হতে পারে। যে শব্দটি আমরাও প্রত্যেকের কাছ থেকে আশা করি। যে শব্দের মাধ্যমে একজনের দু:খ দূর হয়ে যেতে পারে। মনটাও প্রশান্তিতে ভরে যায়। এসব শব্দের কারণে পরস্পরের সাথে সুসম্পর্ক আরো মজবুত হয়। সৃষ্টি হয় আনন্দ উচ্ছল নির্মল পরিবেশের। এসব শব্দ যে কতো মধুর লাগে, যে শব্দগুলো আমরা যাদের সাথে ব্যবহার করবো। কিন্তু আমাদের শব্দগুলো যদি রুক্ষ হয় তাহলে তার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলে কতোই না নিষ্ঠুর চিত্র ফুটে উঠে। আবার যার উদ্দেশ্যে এমন নিষ্ঠুর শব্দ ব্যবহার করা হবে তার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে তার মনের অবস্থা। অনেক সময় আমরা নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে ক্ষমতা দেখাই ও খারাপ শব্দ ব্যবহার করি। যা’ হয়তো আমাদের করা মোটেও উচিত নয়।

একটি খারাপ শব্দ যার সাথে আপনি করছেন, সেটা হয়তো আপনি সহজে ভুলে যাবেন। কিন্তু সে যেহেতু খারাপ শব্দের কারণে আঘাত পেয়েছে, দীর্ঘদিন তার মনে থাকবে। সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে হয়তো এমন এক সময় আসবে এর জন্যে আপনাকে কঠিন মূল্য দিতে হতে পারে, সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আমাদের সবারই মনে রাখা দরকার যে, ‘কথার বুলি; আর বন্দুকের গুলি’ আর ফিরে আসে না। আমাদের কিছু কিছু খারাপ শব্দের কারণে অনেক মধুর সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়। যে সম্পর্ক কোনোদিনই হয়তো আর জুড়ে দেয়া যাবে না। সুতরাং আমাদের প্রত্যেকের উচিত শব্দ ব্যবহারের দিকে খেয়াল রাখা। ভালো শব্দ ব্যবহারের দিকে আমাদের বিশেষ নজর দেয়া দরকার। অবশ্য এটা অভ্যাসেরও একটি বিষয়। সুতরাং আমাদের শিশুদের দিকেও নজর দিতে হবে; যেন তারা এখন থেকে ভালো ভালো শব্দ ব্যবহার করতে পারে। যে শব্দগুলো মুখ থেকে বের হলে যেন অন্যরা খুশি হতে পারে; যেন দু:খ না পায়।