রুদ্র অয়ন-এর কবিতাগুচ্ছ

ভালোবাসায় থাক কিছু অভিমান

শুধুই ভালোবাসা
শুধুই প্রেম দরকার নেই আমার।
থাক না কিছু অভিমান
কিছুটা হিংসে থাক,
থাক কিছু রাগ।
অভিযোগ থাক না হয় কিছু।

প্রেয়সীর যে চোখে
প্রেমের পদ্ম ফোটে
সেখানে মাঝে মাঝে
ভীষণ স্রোত বয়ে যাক,
সেই স্রোতে আমার হৃদয়
প্লাবিত হোক।
আমি ভেসে ভেসে
প্রেম কুড়োবো,
খন্ড খন্ড সুখ কুড়োবো।

কিছুটা অভিমান নিয়ে
সে কেঁদে ওঠুক,
আমি তাকে বুকে জড়িয়ে নিবো।
তার কান্নার জল থেকে
ভালোবাসার ঘ্রাণ শুঁকে
রচনা করবো প্রেমের উপাখ্যান।

হিংসে করে
আমাকে ছিনিয়ে নিক
অন্য সবার থেকে,
আমি তার হৃদয়ের গহীনে
তলিয়ে যেতে চাই।
আমাকে আগলে রাখুক
তার বুকের মাঝে।

তার বুকে আমি ছাড়া
আর কারও
জায়গা না হয় যেনো
ওর এমন একটা
সংকীর্ণ হৃদয় চাই আমি।

ভালোবাসুক
কিছুটা অবহেলাও করুক,
মাঝে মধ্যে তার
ভালোবাসার অভাব
আমাকে উন্মাদ করুক ;
তার অবহেলায়
আমিও ভালোবাসা খুঁজি।
বুঝতে চাই তার অবহেলায়
কতটা অস্থিরতা আমাকে কাঁদায়।
কতটা প্রেমে সে বেঁধেছে আমায়।

শুধুই ভালোবাসা
আর ভালোবাসা দরকার নেই
কিছুটা থাক রাগ -অভিমান।
কিছুটা না হয় থাক অভিযোগ
তার মাঝেই থাক না হয়
একটুখানি নিবিড় ভালোবাসা।

 

ভালোবাসার জলছবি

ভালোবাসি, বলিনি তোমায়
বলতে আজও অপারগ।

হয়তো আর
হবেও না বলা কোনো দিন।
অবরোধ যেন সে পথ!

তোমার মনে
হয়তো অন্য কেউ
অন্য কারও বসবাস।

ভালোবাসা খুব বেশি নয়,
ছিলো যৎসামান্যই
তুমিও বুঝোনি
আমিও বলিনি কোনও দিন।

ভালোবাসেছিলেম
ভালোলাগার প্রাণস্পন্দনে।
হেয়ালীপনার কাঠগড়ায়
একটু মায়া রয়েছে আজও।
বন্দি থাকনা সেটুকু
অপ্রকাশিত মনের জেলখানায়
নিছক ভালোলাগার মায়ায়।

নাইবা বুঝলে তুমি
আমার নিরব লাজুক ভালবাসা।

মনের রং তুলিতে
না হয় থাক আঁকা
অপ্রকাশিত ভালবাসার জলছবি।

 

দু’টি দেহে এক আত্মা

দু’জনের সম্পর্ক হোক
নকশী কাঁথার মতো,
সুতো বাঁধা দুই ফোঁড়েতে
প্রেমের বাঁধন শত।

থাকবে হাসি কান্নায় আঁকা
অনেক অনেক ছবি,
পূব আকাশে উঠবে না হয়
প্রেমময় এক রবি।

ইচ্ছে হয় তুমি আমি হবো
খরস্রোতা এক নদী!
আপন খেয়ালে ভালবেসে
বয়ে যাবো নিরোবধী।

ইচ্ছে যে হয় হবো দু’জন
নীল সমুদ্রের ঢেউ,
দু’জন দু’জনে রবো মিশে
ছেড়ে যাবোনাতো কেউ।

তোমায় নিয়ে বাঁধতে চাই
প্রেমের একটি ঘর,
দু’টি দেহে একই আত্মায়
কখনো হবোনা পর।

 

তুমি এসো নতুন দিনের ভোরে

প্রেয়সীতমা,
জুড়োয় না চোখ
কতদিন তোমার প্রান্তরে ;
কতদিন তোমার বুকে
মাথা রেখে হয়না শান্তির সন্ধ্যান।
নিঃশ্বাস নিঃশ্বাসে
বিলীন হয়না কত শতদিন
তোমার আমার আবেগী শরীর।

ভীষণ মনে পড়ে
তোমায় প্রেয়সীতমা,
নিঃসঙ্গ জানালায়
একাকীত্ব দীর্ঘশ্বাসে!

মনেপড়ে তোমায়-
গোধুলি আলোর
শেষ মিছিলের আলিঙ্গনে।

কত কিছুই না বলা রয়ে গেলো
সময়ের তাগিদে হলোনা বলা কিছুই।

তুমি হারিয়ে গেলে
ভালোবাসার অস্ত নিমিষে।

তারপর থেকেই
খুঁজি বেড়াই তোমার অস্তিত্ব,
গোধূলি লগ্নের আবছায়াতে ;
নতুন প্রভাতে
স্নিগ্ধ আলোর আধিপত্যে।

আজ বড়ই অসহায় আমি,
তোমাকে স্পর্শের আকাঙ্ক্ষায় ;
ভালবাসার ছোঁয়ায়
ব্যাকুল হয়ে ওঠছি!

যে ভালোবাসার অঙ্গিকারে
আমরা ছিলাম প্রতিজ্ঞাবদ্ধ,
সেই ভালোবাসার মাঝে
আজ অতিমাত্রায় দূরত্ব!

তবুও তোমায়
স্পর্শ করে যাই
অনুভবে
একান্তে
মনের কল্পনায়।

শুধু ভালোবাসার দিব্যিতে
আজও অপেক্ষায় প্রহরগুনি,
তোমার বুকে মাথা রাখার প্রত্যয়ে।

তুমি এসো প্রেয়সীতমা,
নতুন কোনও ভোরে
সূর্যোদয়ের নির্মল আলোতে।

– রুদ্র অয়ন
ঢাকা, বাংলাদেশ
______________________