নারী গণধর্ষণকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া দরকার

 

প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, ১২ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৭ মুহররম ১৪৪২ হিজরি, বৃহস্পতিবার

সম্পাদকীয় …

প্রিয়সময়ে প্রকাশিত ‘নারায়ণগঞ্জে বাসায় ফেরার পথে নারীকে গণধর্ষণ’ শিরোনামে সংবাদটির মাধ্যমে আরেকবার প্রমাণিত হলো যে, মেয়েরা এখনো স্বাধীনভাবে চলতে পারবে না, স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারবে না, আমাদের সমাজ সেই স্বীকৃতি এখনো তাদের দেয়নি, নারীদের জন্যে সময় এখনো হুমকির মধ্যে রয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে এটা পরিস্কার যে, নারীরা রাতে অবাদে চলতে পারবে না। রাত নারীদের জন্যে ভয়ঙ্কর, দুর্ঘটনার প্রতীক। রাতের আঁধারে নারীদের জন্যে জীবন হারানোর ভয়ঙ্কর পুরুষ নামক নেকড়ে অপেক্ষা করছে। নারীর জন্যে রাত নয়, তাই দিনে দিনে সবকিছু যেন শেষ করা চাই। ঘর থেকে নারীদের রাতে বের হওয়া যেন নিষিদ্ধ! কিন্তু কেনো? এই কেনোর উত্তর আমরা আজো নারীদের দিতে পারর্ছি না। কবে দিতে পারবো?

কবে বলতে পারবো (?), হে নারী! তোমার জন্যে দিন-রাত সমান! তুমি অবাধে ঘুরে বেড়াও। তোমার মনে কোনো সংশয় থাকবে না, তোমার জন্যে কোনো ভয়ঙ্কর পুরুষ নামক নেকড়ে অপেক্ষায় নেই, তুমি অবাধে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে থাকো। কেউ তোমাকে কিছু বলবে না, তোমার জীবন তুমি ইচ্ছামতো চালাও।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জেনেছি, ‘নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় এক পোশাককর্মী (১৮) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন।’ পাঁচজন নরপশু সেই পোশাককর্মীকে ধর্ষণ করেছে। মেয়েটি অভাবের তাড়নায় হোক, আর সংসারের প্রয়োজনেই হোক সে চেয়েছিলো সংসারের খরচের দায়িত্ব নিতে। সে চেয়েছিলো সংসারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার জন্যে আরো কিছু টাকা আয় করতে। তাই কাজের পরেও আরো টাকা আয় করার জন্যে ওভার টাইম করছিলো। প্রতিদিনের মতো সে ফিরছিলো বাড়িতে, কিন্তু সেই দিনটি তার জন্যে কালো হয়ে গেলো।

আমরা অতীতে দেখেছি, কোনো কোনো ঘটনায় ধর্ষণকারীরা যে কোনোভাবেই হোক পার পেয়ে যায়। হয়তো এ কারণেই অন্যেরা সাহস পায় এ ধরনের অন্যায় কাজ করার জন্যে। তারাও ভাবে, আমরা তো যেভাবেই হোক রক্ষা পাবো। যদি এ ধরনের ঘটনায় আইনের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হতো, যা দৃষ্টান্তমূলক; তাহলে অন্যেরা ভয়ে সংযত হয়ে যেতো। সাহস পেতো না এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর জন্যে।

ঘটনার দিন দুই নারীকে তুলে নিলেও একজন দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। নিজেকে প্রাণে বাঁচাতে পারছে। কিন্তু ঐ মেয়েটিকে নির্জন স্থানে নিয়ে ছয় যুবক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। নির্লজ্জতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় মানুষরূপী নেকড়ের দল। এখন আমাদের সমাজের কী জবাব দেয়ার রয়েছে মেয়েটি? কীভাবে তাকে সান্ত¡না দেয়া যায়? আমরা কোন ভাষায় মেয়েটির জীবনের মূল্য দিতে পারবো? অথবা আমাদের সমাজই বা ঐ পশুদের কী শাস্তি দিয়ে বোঝাবে যে, এটা তোমাদের জঘন্য কাজ হয়েছে? আর তাদের শাস্তি পেয়ে অন্যদেরও হুঁশিয়ার করা হবে-তোমরা এমন করতে এগিয়ে যেওনা। তাহলে তোমাদেরও এমন ভয়ঙ্কর শাস্তি হবে।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জেনে ছি যে, ধর্ষণকারীরা ধরা পড়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদেরকে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষা যে ওদের দৃষ্টান্তমূলক কী শাস্তি হয়! আমরা প্রত্যাশা করবো, ওই যুবকদের কঠোর শাস্তি হোক।

 

প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, ১২ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ০৭ মুহররম ১৪৪২ হিজরি, বৃহস্পতিবার