এর চেয়ে বড় প্রতারক আর হতে পারে না!

সম্পাদকীয়

বিস্মিত হওয়ার মতো একটি ঘটনা। একজন মেয়ে মানুষ কীভাবে ছেলে সেজে থাকতে পারে! অবশ্য বাস্তবে তাই হয়েছে নাটোরে। দুঃখজনক বিষয় হলো ছেলে সেজে মেয়েদের সঙ্গে সমকামিতায় লিপ্ত ছিলো অনেকদিন। সেই প্রতারক রূপাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছেলে সেজে মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে সমকামিতায় বাধ্য করা ও মৌ নামে এক স্কুল ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

প্রিয় সময়ে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি যে, এই রূপা একজন ধুর্ত প্রকৃতির মেয়ে। সে বন্ধুদের বাইক ও ক্যামেরা ধার করে টিকটক ভিডিও তৈরি করতো। সে নিজেকে একজন রূপস ভাই বলে পরিচয় দিতো সবার কাছে। সত্যিকারে এই ব্যক্তি নিজেকে নাটোরের টিকটক আপু ভাই বলে প্রকাশ ব্যক্তিটি আসলেই একজন নারী। আর নারী হয়ে ছেলে সেজে অভিনয় করার খবর পেয়ে সকলেই বিস্মিত হয়ে যায়!

আমরা আরো জেনেছি যে, অতি চালাক এই রূপা খাতুন নামের মেয়েটির মূল উদ্দেশ্য ছিলো ছেলে সেজে নিজেকে সুদর্শন পুরুষ দাবি করে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের প্রেমের ফাঁদে ফেরার জন্যে প্রস্তাব দেয়া। সে নিজেকে একজন ধনীর সন্তান হিসেবে উপস্থাপন করতো। আর দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিলাসী জীবনের স্বপ্ন দেখাতো। অতি মধুর কথা বলে, গরীব অসহায় মেয়েদের প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। আরো আশ্চর্যের বিষয় যে, সে নিজেকে বাংলাদেশ জুটমিল কর্পোরেশন বিজেএমসি অফিসার হিসেবে পরিচয় দিতো। এতেও যদি কোনো মেয়ে কোনোভাবেই তার প্রেমের ফাঁদে না জড়াতে তাহলে সেই মেয়েটি নিজের দুই হাত কাটতো এবং বিষ খেয়ে প্রমাণ দেয়ার চেষ্টা করতো যে, সে একজন সত্যিকারে খাঁটি প্রেমিক। তার মধ্যে কোনো ছলচাতুরী নেই! এছাড়াও প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানা গেছে যে, সে প্রতিদিন শহরের স্কুল ও কলেজ ছুটির সময় কয়েকজন বখাটে বন্ধুদের নিয়ে মেয়েদের উত্যক্ত করে বেড়াতো। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া, উন্মুক্ত স্থানে সিগারেট খাওয়া, তার হাঁটাচলা সব কিছুই ছিলো তার পুরুষের মতোই। বিশ বছর বয়সী রূপস বন্ধুদের সঙ্গে মিশে প্রথমে ইয়াবা, গাঁজা সেবন করা শুরু করে। এভাবেই একপর্যায়ে সমকামিতায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এভাবেই তার জীবন সম্পূর্ণভাবে ছেলেদের মতোই করে ফেলেছিলো।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানা গেছে, তার কারণেই সাদিয়া নামে একটি মেয়ে অনেক অত্যাচারিত হয়ে মারা গেছে। তার নামে একটি হত্যা মামলাও রেকর্ড করা হয়েছে। এই মামলায় ছেলে সেজে থাকা রূপাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

যদিও ঘটনাটি বিচিত্র, তবুও আমাদের কথা হলো যখন রূপা নামের মেয়েটি ছেলে সেজে থাকতো তখন অন্তত তার পরিবার ও নিজস্ব আত্মীয়স্বজন বিষয়টি জানতো। এভাবে একটি মেয়ে ছেলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার মতো সুযোগ কেনই বা পাবে? প্রশ্ন হলো, তারা কেন এ বিষয়টিকে প্রশ্রয় দিয়েছে সেটাই হলো সবচেয়ে বড় বিষয়! সমাজ কোনোভাবেই এমন পরিস্থিতি ও নোংরা বিষয় মেনে নিতে পারে না। কেননা এর চেয়ে বড় প্রতারক আর হতে পারে না! আমাদের প্রত্যাশা হলো, তাকে কঠোর আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।