ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড!

সম্পাদকীয়…

কঠোর এ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন হলেই ধর্ষণের ঘটনা থাকবে না বলে মনে করছি। সুশীল সমাজ এই আইনকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। চারিদিকে গ্রহণযোগ্য আলোচনার ঝড় উঠেছে, ব্যাপক সাড়া পড়েছে চারিদিকে এই সংবাদে। প্রিয় সময়ে ‘ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদ-ের বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’ প্রবাদটি আমরা সকলেই জেনেছি। এই কথাটির অর্থও আমরা বিশ্লেষণ করতে পারি না। সত্যিই সততার উপরে আরো কোনো কিছু থাকতে পারে না। এটিই সবার উপরে। প্রকৃত অর্থে নৈতিক শিক্ষাই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কিন্তু যদি নৈতিক শিক্ষা মানুষের মনকে পরিচালনা করতে না পারে, তখন সেখানে নৈতিক শিক্ষার মৃত্যু হয়। আর তখন মানুষ অনৈতিক কাজে জড়িত হয়ে পড়ে। যদি সুন্দর উপদেশে কাজ না হয়, তখন সেখানে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করতে হয়। মানুষের মধ্য থেকে নৈতিকতা উঠে গেছে, তাই একে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে কঠোর আইন বাস্তবায়ন দরকার হয়ে পড়েছে। আর কঠোর আইনই পারে দমন করতে। ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনাগুলোর শাস্তি যদি হয় হাল্কা, তখন অন্যরা পরোয়া করে না। কিন্তু যদি কঠোর আইনের মাধ্যমে মৃত্যুদ-ের মতো শাস্তি বাস্তবায়িত হয় তাহলে ধর্ষণ রোধ করা সম্ভব।

আমরা আশা করছি, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যদি হয় মৃত্যুদণ্ড তাহলে ধর্ষণের মতো ঘটনার খবর আর শুনতে হবে না বলে আশা করছি। অন্তত এ ধরনের ঘটনা থেকে আমরা মুক্তি পাবো, নারীরা মুক্তি পাবে, নারী-পুরুষ উভয়ই সম্মানের সাথে বাঁচতে পারবে। সমাজ বাঁচবে, সমাজ কলুষিত হবে না।

কিছু ব্যতিক্রমও হতে পারে বলে মনে করছি। তা হলো, অনেক সময় উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা আবেগের বশে কুকাজ করে ফেলতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের কী ধরনের বিচার হবে সেটাও বিবেচ্য বিষয় বলে মনে করছি। কেননা ঐ বয়সে ভুল করে ফেলাটা স্বাভাবিক-এটা সবাই মনে করেন। সুতরাং সেক্ষেত্রে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে যদি যৌনতায় মিলিত হয় তখন সেটা ধর্ষণের মতো বিষয় হবে কিনা-সেটা একটা বড় প্রশ্ন! কেননা একসময় মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারে-সেক্ষেত্রে কীভাবে প্রমাণিত হবে ধর্ষণের মতো ঘটনাটি। অপরদিকে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে মিথ্যা অভিযোগও যদি চলে আসে, তাহলে তা’ ভালোভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করি। তবে আমরা মনে করি, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদ- হলে নারীরা রক্ষা, সমাজ রক্ষা পাবে, দেশ রক্ষা পাবে। এ বিষয়টি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে শুনে আমরা সাধুবাদ জানাই। কেননা এ দাবি জনগণের! জনগণ মনে করেন, ধর্ষকদের শাস্তি মৃত্যুদ- হলে অপরাধ কমে আসবে নিশ্চিত! মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, দেশজুড়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে। আর এর প্রতিবাদে চারিদিকে ধ্বনিত হচ্ছে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড! সিলেটে এমসি কলেজের ধর্ষণ, নোয়াখালীতে গৃহবধু নির্যাতনের ঘটনায় আমরা মর্মাহত হয়েছি। অনেক সময় দেখা গেছে, যাবজ্জীবন কারাদ- হলে জেল থেকে বেড়িয়ে একই অপরাধে জড়ায় অপরাধীরা। সুতরাং সেক্ষেত্রে মৃত্যুদ- অপরাধের মাত্রা নির্মূল করবে বলে মনে করছি।

আজ ‘মৃত্যুদণ্ড’এর মতো এই কঠিন আইনের প্রস্তাব চারিদিকে ধ্বনিত হচ্ছে শুধুমাত্র ধর্ষণকারীদের কারণেই। যদি সভ্যতা, মনুষ্যত্ববোধ থাকতো তাহলে এ ধরনের আইনের হতো না। এ নিয়ে চারিদিকে তোলপাড় ও আন্দোলন হতোই না। কিন্তু দুষ্টদের দমন করতে হলে এ ধরনের আইনের অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে। সাধুবাদ জানাই এ আইনের।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

১২ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ২৭ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৪ সফর ১৪৪২ হিজরি, সোমবার