দ্রুত ‘ধর্ষণ’ নামক পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরা দরকার

সম্পাদকীয়…

দেশে বেড়ে চলেছে নারী ও শিশু ধর্ষণ! প্রতিদিনই এমন ঘটনা আমরা শুনছি। এভাবেই প্রতিদিনই আমাদের শুনে যেতে হবে। থামবে না মোটেও যদি পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে না ধরা হয়। আমরা মানবতাকে মাটি চাপা দিয়ে, লজ্জাকে জলাঞ্জলি দিয়ে নারী ও শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো শুনেই যাবো শুধু। আমরা সভ্যতা হারাতে বসেছি। সুতরাং সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতেই হবে। তাই তো শুরু হয়েছে ‘চরভদ্রাসনে নারী ও শিশু ধর্ষণ বন্ধে ও ন্যায় বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল’। এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল যদি ঘরে ঘরে হয় তাহলে প্রতিটি পরিবারই রক্ষা পাবে। আর কোনো নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হবে না।

ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের সামনে চরভদ্রাসনের সর্বস্তরেরর ছাত্রছাত্রীরা নারী ও শিশু ধর্ষণ বন্ধ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে জানান দিয়েছে যে, তারা এই অন্যায় আর হতে দেবে না। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে প্রতিটি ক্ষেত্রে। সর্বস্তরে নারীর সম্মান ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের চেতনাবোধকে জাগিয়ে তুলতে হবে। তাহলে নারীরা তাদের যোগ্য সম্মান পাবে ও শিশুরাও সুরক্ষিত থাকতে পারবে।

শুধু চরভদ্রাসন কেনো-ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি উঠুক প্রতিটি মানুষের মনে, প্রতিটি পরিবারে, প্রতিটি গোষ্ঠীতে, প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায়, প্রতিটি গ্রামে গ্রামে। তাহলেই সর্বোচ্চ শাস্তি বাস্তবায়িত হবে বলে প্রত্যাশা করছি। আজ এই বক্তব্য শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীরা নয়, প্রতিটি মা বাবাদেরও হওয়া উচিত। প্রতিটি চায়ের দোকানে, হাটে বাজারেও বক্তব্য উঠে আসুক নারী ও শিশু ধর্ষণ বন্ধ ও ন্যায় বিচার এবং ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে।

আমরা প্রিয় সময় সংবাদ মাধ্যমে আরো জেনেছি ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, সহিংসতা প্রতিরোধের দাবিতে শেরপুরে প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগেযৌথভাবে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। ঘন্টাব্যাপী ওই মানববন্ধনে ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি), হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরাম, উদীচী, কলেজ শিক্ষক ফাউন্ডেশন, সাংবাদিক বিপবী রবি নিয়োগী সভাকক্ষ, বর্মন ছাত্র পরিষদ, নারী রক্তদান সংস্থা, শেরপুর ডিস্ট্রিক্ট ডিবেট ফেডারেশন, অদম্য শেরপুর, আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, রক্তসৈনিক বাংলাদেশসহ প্রায় ২০টি সংগঠন অংশ নেয়। জনউদ্যোগ শেরপুরের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নাসরিন রহমান, অধ্যাপক শিব শঙ্কর কারুয়া শিবু, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা, শিক্ষক নেতা মুহসীন আলী আকন্দ, নারীনেত্রী আঞ্জুমান লিপি, আইরিন পারভীন, মানিক পাল, রজত সাহা অন্তু, সৌরজিৎ রায়, তাশফিয়া তারান্নুম তিফা প্রমুখ। এসময় বক্তারা নারী- শিশুদের উপর নির্যাতন বন্ধে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার দাবিসহ জড়িতদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।’

প্রিয় সময়ে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আরো জানা গেছে, ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর দুমকি উপজেলা ছাত্রলীগের আলোক প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত’ হলো। ‘নোয়াখালীর নারী নির্যাতনের ঘটনাসহ সকল ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনায় সম্পৃক্ত পৃষ্ঠপোষকদের দ্রুত গ্রেপ্তার, বিচার এবং নারীর প্রতি সহিংসতার স্থায়ী অবসানের দাবীতে আলোক প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে দুমকি উপজেলা ছাত্রলীগ ।

আমরা আশা করি, দেশের প্রতিটি মানুষ যদি সোচ্চার হয় তাহলে নারী ও শিশু ধর্ষণের মতো বদনাম আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে না। পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতে পারলেই, সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকার পাতা উল্টাতেই চোখে পড়বে না ধর্ষণের মতো নোংরা সংবাদ। অথবা টিভি খুললেই আর দেখতে হবে না ধর্ষিতা মেয়ের করুণ মুখ খানি। ধর্ষিতা গৃহবধূর করুণ কাহিনী আর শুনতে হবে না। সুতরাং এই আন্দোলন সবার মধ্যেই জেগে উঠুক-আমরা সেই প্রত্যাশাই করছি।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

১৩ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ২৮ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৫ সফর ১৪৪২ হিজরি, মঙ্গলবার