স্বরূপকাঠির বরছাকাঠিতে রেকর্ডিয় খাল ভরাট : পানিবন্ধি অর্ধশতাধিক পরিবার

মোঃ মাসুদুল আলম অপু
স্বরূপকাঠী প্রতিনিধি :

স্বরূপকাঠির বরছাকাঠি এলাকার রেকর্ডিয় খাল ভরাট করে বাড়ীঘর নির্মাণ করায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম দুরাবস্থায় পড়েছে অর্ধশতাধিক পরিবার। মোহনা থেকে শুরু করে কয়েক স্থানে ভরাট করে ফেলায় খালের বাকি অংশে জমে থাকা পানি এখান ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালে জমে থাকা পানি আর বৃষ্টির পানির মধ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে পানি আবর্জনা পঁচে সৃষ্ট অসহনীয় দুর্গন্ধ মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বেড়ে গেছে মশা-মাছির উপদ্রব।

সরেজমিনে উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের বরছাকাঠি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বরছাকাঠি কাঠের বাজারের মাঝখান দিয়ে পশ্চিম দিকে একটি খাল মরহুম হাজী মোসলেম আলী মিয়ার বাড়ী হয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কালীবাড়ি খালের সাথে মিশেছে। এর কোনও কোনও স্থানে বালু ভরাট করে সেখানে বাড়ীঘর নির্মাণ করেছেন কেউ কেউ। খালের মোহনার দিকে (কাঠ বাজার সংলগ্ন) দুই তৃতীয়াংশ ভরাট করেছেন হালিম সাহেবের ছেলে রাইসুল। তার সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

এসময় খালের দক্ষিণ পাড়ে বাড়ীর মো. জামাল বলেন, ওপারের লোকজন খালের মধ্যে তাদের জমি দাবী করে ভরাট করছে। শাহশের আলী (শাসু) মিয়ার বাড়ীর পশ্চিম পাশে বারেক মিয়ার মেয়ে তহমিনা কালভার্টের মুখ আটকিয়ে খালের মধ্যে বালু ভরাট করেছেন। শাহশের আলী মিয়ার ছেলে বেলায়েত হোসেন বলেন, এ খাল দিয়ে বড়বড় নৌকা চলত। ভাড়ানী খাল হিসেবে এ খালটি বেশি ব্যবহার করত। কাঠামী নৌকা ঢুকে কাঠ ও গোলপাতা ওঠানো নামানো হত।

এসময় উপস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর কবির লাল বলেন, বাড়ীঘর নির্মাণকারীদের বার বার অনুরোধ করা হলেও তারা তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামত কাজ করে চলছেন।

তিনি বলেন, এখানে বরছাকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাসুন্নাহার হালিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিবছর বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার কারনে ওই মৌসুমে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যায়। মৌসুম শেষ হলেও দু‘একমাস পর্যন্ত প্রচন্ড দুর্গন্ধ শিক্ষার্থীদের অতিষ্ঠ করে তোলে।

সমাজ সেবক মাসুদ করিম জানান, সরকারী বিভিন্ন জরিপে (আর এস,এস এ ও বি এস) খালটি নকশা ভুক্ত রয়েছে। যার প্রশস্থ ২১ লিং। বরছাকাঠি খাল নামে পরিচিত ওই খাল দিয়ে অসংখ্য বড় বড় নৌকা চলাচল করত। প্রভাবশালীরা যে যার মত করে খালটি ভরাট করে ফেলায় অনেক স্থানে খালের কোন নমুনাই নেই। খালের মোহনা ভর্তি করে ফেলায় ভেতরের পানি বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। ফলে ওই দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বশির গাজী‘র সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তিনি কিছু দিন হয় নেছারাবাদে যোগদান করেছেন। যেটুকু দেখেছেন তাতে উপজেলার অনেকগুলো খালই দখল হয়েগেছে। বরছাকাঠি এলাকায় আগামী দিন যাবেন। সরেজমিনে দেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

তিনি বলেন, এ উপজেলা অসংখ্য খাল দিয়ে পরিবেষ্ঠিত। খালগুলো রাট করায় কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অচিরেই খাল উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে বলে তিনি জানান।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

২৮ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ১২ কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪২ হিজরি, বুধবার