ঘাট স্থানান্তরের পর ফলের দোকানে বিক্রি কমে

রোমান শিকদার, স্টাফ রিপোর্টার :

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের বাংলাবাজার ঘাট। ঘাটের লঞ্চ টার্মিনালের ফলের দোকানগুলো বাহারি ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছে। দোকানে সাজানো ফলের শোভা থাকলেও ক্রেতা কমে গেছে। গত প্রায় দেড় মাস ধরে নতুন ঘাটে আসা এসকল দোকানে পূর্বের তুলনায় বিক্রি খুবই কম। লঞ্চঘাটে নির্দিষ্টস্থানে লঞ্চ না ভিড়ার কারণে বিক্রি কমেছে বলে ফল বিক্রেতারা জানান।

ঘাটের ফল বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করলে জানা যায়, কাঁঠালবাড়ীতে যখন ঘাট ছিল তখন পন্টুনে যাত্রী নেমে নির্দিষ্ট টার্মিনাল দিয়ে আসা-যাওয়া করতো। যাত্রীদের চলাচলের পথেই ছিল ফলের দোকানগুলো। বর্তমানে ঘাট সরিয়ে বাংলাবাজারে স্থানান্তরের পর লঞ্চের একাধিক ঘাটেই লঞ্চ এসে ভিড়ে। যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নেমে বিভিন্ন দিক দিয়ে টার্মিনাল পার হয়। একারনে ফলের দোকানগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় বিক্রি কমেছে। একই সাথে ঘাট স্থানান্তরের পর মৌসুমী ফল বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। নতুন ঘাটে আসার পর ঘাটকেন্দ্রিক এলাকার লোকজনের নতুন নতুন দোকান বেড়েছে। বর্তমানে বাংলাবাজার ঘাটে ফলের দোকানের সংখ্যা রয়েছে ৬১ টি। পূর্বের ঘাটে ছিল মাত্র ৩১ টি। দোকান বৃদ্ধিও বিক্রি কমে যাওয়ার একটি কারণ বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

সরেজমিনে মঙ্গলবার(১২ জানুয়ারি) বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, লঞ্চের দুটি টার্মিনালসহ আশেপাশের দোকানগুলোতে ফল সাজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। তবে ক্রেতার সংখ্যা খুব একটা নেই। ঘাটে নেমে যাত্রীরা ভিন্ন ভিন্ন টার্মিনাল দিয়েই আবার গন্তব্যের গাড়ির স্ট্যান্ডে যায়। এক টার্মিনালে নেমে ফল কিনতে অন্য টার্মিনালে মূলত আসা হয় না যাত্রীদের। তাছাড়া স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি অস্থায়ী দোকানের সংখ্যা বাড়ায় সব মিলিয়ে বিক্রির পরিমান কম বলে জানা গেছে।

মো. রেজাউল নামের ফল ব্যবসায়ী জানান,’কাঁঠালবাড়ী ঘাটে বিক্রি বেশি ছিল। গত এক মাস ধরে নতুন ঘাটে দোকান দিয়েছি। কিন্তু বিক্রি খুবই কম। এই মৌসুমে ফল বেশি বিক্রি হয়। অথচ এখানে আশানুরূপ দেখছি না।’

অপর দোকানদার মিরাজ হোসেন বলেন,’ আমরা কাওড়াকান্দিতে ঘাট থাকাকালীন ফলের ব্যবসায় করি। সেখানে বিক্রি সবচেয়ে বেশি হতো। কাঁঠালবাড়ীতে আসার পর মোটামুটি ভালোই বিক্রি হতো দৈনিক। কিন্তু বাংলাবাজারে ঘাট আসার পর বিক্রি কমে গেছে। এ এলাকায় নতুন দোকান বেড়েছে ৩০ টি। তাছাড়া ভ্রাম্যমান হকারদের সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে বিক্রি কমেছে।’

আব্দুল আলীম নামের অপর দোকানদার বলেন,’এখানে দৈনিক গড়ে ৮/১০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। পূর্বের ঘাটের তুলনায় খুবই কম।’

ফলের দোকান সূত্রে জানা গেছে, ফলের মধ্যে কমলা কেজি ১শত টাকা, আপেল ১শত ৩০ থেকে ১ শত ৪০ টাকা, আঙ্গুর ২শত ৮০ টাকা, মাল্টা ১ শত ৫০ টাকা, ডালিম ২ শত ৫০ টাকা, খেঁজুর ১ শত ৫০ টাকা, চায়না কমলা ১শত টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাট সূত্র জানায়, কাঁঠালবাড়ী ঘাটের চেয়ে বাংলাবাজার ঘাটের প্রশস্ততা বেশি। প্রতিটি ঘাট নির্দিষ্ট দূরত্বে রয়েছে। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দে ঘাট দিয়ে পারাপার হতে পারছে। টার্মিনালে যাত্রীদের চাপাচাপি করে আসা-যাওয়া করতে হয় না।