আ.লীগ ও বিদ্রোহীতে জমে উঠেছে পাংশার নির্বাচন

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :

নির্বাচন মানেই উৎসবের আমেজ। ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় রাজবাড়ীর পাংশা পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও যুবলীগ নেতা (স্বতন্ত্র) মেয়র পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূলত ভোটের লড়াই হবে আওয়ামী লীগের ওয়াজেদ আলী মণ্ডল (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগ নেতা মো. ফজলুল হক ফরহাদ (জগ) প্রতীকের মধ্যে।এমনটাই মনে করছেন ভোটার ও নেতাকর্মীরা। তাছাড়া মাদক, সন্ত্রাসরোধ ও রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা।

এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ওয়াজেদ আলী (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী রইচ উদ্দিন খান (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. ফজলুল হক ফরহাদসহ (জগ) তিন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১১ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।পৌর নির্বাচন উপলক্ষে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো। গণসংযোগের পাশাপাশি চলছে মাইকে প্রচারণা। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রার্থী, সমর্থক ও কর্মীরা যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এবং মন জয় করতে দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি এদিকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে প্রচারণা চালাচ্ছে সাবেক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুল হক ফরহাদ। আর নামেই রয়েছে বিএনপির প্রার্থীর প্রচারণা। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী, দুজনের রয়েছে পাল্টপাল্টি অভিযোগ।

অপরদিকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী যুবলীগ রাজবাড়ী জেলা শাখা পাংশা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. ফজলুল হক ফরহাদকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু বলেন, সকল স্তরের নেতাকর্মীরা নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে কাজ করছে এবং ভোটারদের মধ্যেও বেশ উৎসাহ বিরাজ করছে। নির্বাচনে পার্টির কোনো নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারবে না। যে দাঁড়িয়েছে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে জানানো হয়েছে।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী পাংশা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. ফজলুল হক বলেন, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীও হলে তিনি যুবলীগের আহ্বায়ক। জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকার প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের পর তিনি প্রার্থী হয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে তার নেতাকর্মীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারপরও তিনি আশাবাদী জনগণের ভালবাসায় বিপুল ভোটের জয়ী হবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আজ যারা নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন, বিগত দিনে তারই আপন দুই ভাই নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেছেন। এগুলো তো তাদেরই শেখানো। আগে তাদের বিচার হোক, তারপর সকল বিচার তিনি মেনে নেবেন। নির্বাচতি হলে পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ আধুনিক ও ডিজিটাল পৌরসভা তৈরির জন্য সকল কিছু করবেন।আওয়ামী লীগ মনোনীত ওয়াজেদ আলী জানান, নৌকা প্রতীক নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। জনপ্রিয়তা ও যোগ্যতা আছে বলেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এবং তিনিই জয়ী হবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে যুবলীগ নেতাকে দাঁড় করানো হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। যত ষড়যন্ত্রই করুক ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনে তিনি জয়ী হবেন। অতীতেও তিনি মেয়র ছিলেন। এখানে জলাবদ্ধতাই বড় সমস্যা। ফলে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরির মাধ্যমে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করবো।

জেলা নির্বাচন ও পাংশা পৌরসভা নির্বাচন রিটানিং অফিসার মাসুদুর রহমান বলেন, পাংশায় নির্বাচনের পরিবেশ অনেক ভালো। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাননি। প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আচরণবিধি দেখার জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দ্বায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও পরের দিন প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দ্বায়িত্বে থাকবেন। ফলে আশা করছি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে।