প্রকৃতি আমাদের উপর প্রতিশোধ নেবে!

সম্পাদকীয়…

প্রকৃতিকে তার মতো থাকতে দেয়া উচিত। তাহলে প্রকৃতি আমাদের বেঁেচ থাকার উপকরণ উপহার দেবে। সেটা বরং আমাদের জীবনের জন্যে প্রয়োজনীয়। কিন্তু আমরা প্রকৃতির কাছ থেকে আরো কিছু পেতে চাই। তাই তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাই আরো কিছু। জোর করে আদায় করতে গিয়ে তার গতিবিধিতে আমরা বাধা দিয়ে বসি। এতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রকৃতি আমাদের উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে।

নদী প্রকৃতির সম্পদ। মানব জীবনের জন্যে অপরিহার্য সম্পদ। নদী আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে। নদী ছাড়া পানির বিকল্প কল্পনা করা যায় না। কিন্তু নদীকে যদি আমরা আঘাত করি তাহলে সেও আমাদের পাল্টা আঘাত করবেই। আর এর প্রভাব অনেককেই ভুগতে হবে।

প্রিয় সময়ে ‘দোহারে অবৈধভাবে বালু উওোলনের দায়ে ড্রেজার ব্যবসায়ীকে জরিমানা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি নদীর গতিবিধিতে বাধা প্রদান করা হচ্ছে।

অর্থাৎ নদীকে তার নিজ গতিতে চলতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা জেনেছি, নির্বিচারে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদী তার নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। স্বাভাবিকভাবে নদীর পাািন চলাচল করতে পারছে না। যারা এর সাথে জড়িত তাদেরকে বালু উওোলনের দায়ে জরিমানা করা হয়েছে, যেন এই শাস্তি মনে রেখে পরবর্তীতে আর বালু উত্তোলন না করে। এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবি করার মতো। কিন্তু এ রকম আরো অনেকেই আছে, যারা বিভিন্ন সময়ে প্রভাব খানিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে চলেছে।

যারা ড্রেজার ব্যবসায়ী তারা প্রশাসনকে গুরুত্ব দেয় না। তারা সন্ত্রাসী কায়দায় নদী থেকে বালু উত্তোলন করে দুঃসাহসের পরিচয় দিয়ে থাকে। এরা প্রভাবশালীদের মদদে চলে থাকে। ফলে তারা দিনের পর দিন নির্ভয়ে এভাবে অন্যায় কাজ করে থাকে।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি যে, ‘গত ২৫ জানুয়ারী সোমবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুকসুদপুর ইউনিয়নের পদ্মানদী হতে বালু উওোলনের সময় হাতেনাতে আটক করা হয় ড্রেজার ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানকে এবং প্রায় ২০০ মিটার পাইপ ধ্বংস করা হয়। পরে বালু ব্যবসায়ী মিজানুরকে মোবাইল কোটের মাধ্যমে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর আইনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’

এক্ষুণি যদি বালু উত্তালনকারীদের নিভৃত্ব করা না হয় তাহলে প্রকৃতি আমাদের উপর প্রতিশোধ নেবে অবশ্যই!

আমরা চাই, এভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা যেন অব্যাহত থাকে। আর সেই সাথে যারা নদীতে বালু উত্তোলন করছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক। তাহলে তারা আর ভয়ে এভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করবে না। সেই সাথে আমরা আশা করবো, সচেতনমহল নদী রক্ষায় জেগে উঠবে এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের সচেতন করে তুলবে ও তাদেরকে নিভৃত্ব করতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে।