রাজবাড়ীর কালুখালীতে কবরস্থানের সম্পত্তি রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন

 

শাকিল আদনান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি :
রাজবাড়ীর কালুখালীতে মৃগী ইউনিয়নের ৪৫ বছরের পুরাতন কবরস্থানের সম্পত্তি রক্ষায় কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ মানববন্ধন করেছে।

শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০ টায় কবরস্থান প্রাঙ্গণে মৃগী ইউপির বানজানা, চষাবিলা, ছোট ঘিকমলা, বাজেগড়িয়া ও বিল কাতলি গ্রামের বাসিন্দারা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে। এসকল গ্রামে ২০-২৫ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের মানুষের দাফন কার্য্য এই একটি কবরস্থানেই সম্পন্ন হয়।

মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান, এসময় তিনি বলেন, জনস্বার্থে ১৯৭৬ সালে কবরস্থানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তৎকালীন কবরস্থান পরিচালনা কমিটি জনৈক বজলুর রহমান গং এর নিকট থেকে ২৪ শতাংশ জমি ক্রয় করে। চষাবিলা গ্রামের ইসমাইল মন্ডল ও বাছের মন্ডল মারা গেলে তাদের দাফন এই কবরস্থানে করা হয়। মৃত ইসমাইল মন্ডল এর পুত্র হাবিবুর রহমান, একদিল হোসেন, শাহাদৎ হোসেন ও আব্দুস সাত্তার বজলুর রহমান এর নিকট ক্রয়কৃত জমি রেজিষ্ট্রি না করার সুযোগে কবরস্থান কমিটি বাঁধা প্রদান সত্ত্বেও হাবিবুর রহমান গং ক্রয় ও রেজিঃ করে।

এরপর থেকেই কবরস্থান কর্তৃপক্ষের সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। ২০০১ সালে কবরস্থান কমিটি পুনঃবিন্যাস হলে সীমানা চিহ্নিত করে। এসময় এলাকাবাসী কবরস্থানের সীমানার মধ্যে গাছপালা রোপন করে। ২০১৬ সালে পাকা সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য কয়েক লক্ষ টাকার ইট,বালু সিমেন্ট সহ যাবতীয় মালামাল ক্রয় করে। প্রাচীর নির্মাণকালীন সময়ে একদিল হোসেন সীমানা অস্বীকার করেন পুনরায় সার্ভেয়ার দিয়ে সীমানা র্নিধারণ করা হয়।

পরে হাবিবুর রহমান গং পাংশা সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ৩৮/২০১৭ নং চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মামলা করে। পরে সীমানা নির্ধারণে সার্ভেয়ার দ্বারা সঠিক সীমানা প্রকাশ পায় এবং ৫০ হাজার টাকা কবরস্থান কমিটির নিকট প্রদানের প্রতিশ্রুতিতে মিমাংশা হয়। পরে তারা আবার বর্তমান কমিটি সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের নামে কবরস্থানের ভূমি আত্মসাৎ ও তদস্থিত গাছপালা কর্তনের লোভে পাংশা সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ৩৮/২০১৭ মামলার প্রতিশ্রুত বিষয়ে গোপন রেখে একই সম্পত্তিতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা মতে মামলা করেছে এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের হয়রানী করছে। বর্তমানে এলাকাবাসীর জোর দাবি দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা তুলে নিবেন এবং পুলিশি হয়ারানী বন্ধ করতঃ ৫/৬ গ্রামের একমাত্র কবরস্থান ও তদউপরিস্থিত গাছপালা ভূমিখেকোর হাত থেকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এছাড়াও মানবন্ধনের বক্তব্য রাখে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ সরদার, সাধারণ সম্পাদক এছেম আলী মন্ডল, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বার শেখ, ইউপি সদস্য মোঃ কলিম উদ্দিন, সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জহুরা খাতুন, আব্দুর রব দুলাল, তুহিন সরদার, ইয়াহিয়া ইসলাম সুইট ও কেরামন মন্ডল প্রমূখ।

কবরস্থান কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোঃ ফারুক শেখ এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।