লোভী জেলেদের এমনই শাস্তি হওয়া উচিত

সম্পাদকীয়

আমরা জানি ‘চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী’। কিন্তু জেলেরা তো অন্তত ভালো-মন্দ দিকটি বোঝে। তারা কেনো বার বার আইন অমান্য করে, অথবা তারা কেনো নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বার বার নদীতে গিয়ে ইলিশ শিকার করে! তাদেরকে অনেকভাবে বোঝানো হয় ইলিশের সম্পর্কে। তাদেরকে বোঝানো হয়, জাটকার পরিবর্তে বড় ইলিশে লাভ বেশি হয়। তবুও তারা সেটা বুঝতে চায় না। নগদে যা পাবে তাতেই তাদের লাভ-এই চিন্তায় তারা বার বার নদীতে গিয়ে ইলিশ সংরক্ষণ করে। কিন্তু তাদের গোঁয়ারতুমীর কারণেই তাদেরকে দারুণভাবে শাস্তিভোগ করতে হয়। তেমনই ঘটনা ঘটেছে ভোলায় ১৩৭ জেলের কপালে।

প্রিয় সময়ে ‘ভোলায় ১৩৭ জেলের জেল-জরিমানা’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি হতভাগ্য অবাধ্য জেলেদের দুর্দশনার কথা। তাদেরকে এভাবে শাস্তি দেয়াটা যথার্থই বলতে হবে। সুতরাং এতেও অন্তত যদি তাদের শিক্ষা হয় ও বোধ জেগে উঠে। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ঐ জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা-তেঁতুরিয়া নদীতে ইলিশ শিকার করেছে। এজন্যে ১০ দিনের মধ্যে ১৩৭ জন জেলের কারাদÐ ও জরিমানা করা হয়েছে। তখন জেলেদের কাছ থেকে এক হাজার ৯৫২ কেজি ইলিশ ও দুই লাখ ৮৩ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। আর সেগুলো প্রশাসনের উপস্থিতিতে আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা অন্যায়। ইলিশ শিকার করা অন্যায়। আর এজন্যে আটক হওয়া ও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদÐ ভোগ করা লজ্জার বিষয়। সেই সাথে ৪৩ জনের কাছ থেকে দুই লাখ ৪৬ হাজার টাকা জরিমানা হওয়া তাদের জন্যে উচিত শিক্ষা। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে জব্দকৃত ট্রলার ও নৌকা এক লাখ ৩৬ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করা অন্যরকম শাস্তি। এতে যদি ঐ দুষ্ট জেলেদের উচিত শিক্ষা হয় তাহলে তো তাদের জন্যে ভালো।

আমরা জানি, ইলিশ রক্ষায় আমরা সকলেই সচেতন ও সমর্থন জানাই। এ বিষয়ে সকলেই পরস্পরকে সচেতন করে আসছেন। আর জেলেদেরও বিভিন্নভাবে সচেতন করা হচ্ছে। ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। কিন্তু তবুও তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করছে বার বার। আর মৎস্য সম্পদ রক্ষায় মৎস্য বিভাগ কোস্টগার্ড, পুলিশ ও নৌপুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছেন।

নিষেধাজ্ঞার সময় ভোলার সাত উপজেলায় এক লাখ ৩৯ হাজার ৩৮ জেলের মধ্যে ৭৮ হাজার জেলেকে ৪০ কেজি করে চারমাস খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল বিতরণ করা হবে বলেও তাদেরকে জানানো হয়েছে। তবুও তারা এতেও তৃপ্ত নয়। তারা আরো বেশি লাভের আশায় লোভের বশবর্তী হয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে। আমরা মনে করি, এ ধরনের লোভী জেলেদের এমনই শাস্তি হওয়া উচিত। তাহলে সম্পদ রক্ষা পাবে। এজন্যে প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে।