রায়পুরে টমেটোর কেজি ৩ টাকা, দাম না পেয়ে হতাশ কৃষকরা

মোঃ হৃদয় হোসেন, রায়পুর প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও দাম না পেয়ে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। প্রতি কেজি টমেটো এখন ৩ টাকা থেকে ৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।ক্ষেতের টমেটো এখন ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। বাজারে টমেটো বিক্রি করতে এসে অনেক কৃষক দাম না পেয়ে এগুলো ফেলে দিচ্ছেন।সরেজমিনে উপজেলার উত্তর চরবংশী মেঘনা বাজারে গিয়ে দেখা যায় টমেটো বিক্রি করতে এসে অনেক কৃষক দাম না পেয়ে এগুলো ফেলে দিচ্ছেন স্থানীয় মেঘনা নদীতে ও বিভিন্ন স্থানে।

প্রতি একর জমিতে টমেটো চাষ করতে ওই এলাকার কৃষকদের প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বিশাল এলাকায় টমেটোর চাষ ও অধিক উৎপাদনের ফলে ন্যায্য দাম পাচ্ছে না কৃষকরা।মৌসুমের শুরুতে শতাধিক কৃষক টমেটো বিক্রি করে লাখপতি হয়ে ভাগ্য বদল করলেও বর্তমানে কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। বর্তমানে মোল্লারহাঁটের চরকাছিয়া, উত্তর চরবংশীর চরইন্দুরিয়া, মেঘনাবাজার, হায়দারগঞ্জে, চরমোহনা বাবুরহাঁট রাখালিয়া, মিতালি বাজারসহ প্রায় সবগুলো বাজারেই প্রতি মণ টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০থেকে ২০০’ টাকা।

জমি থেকে টমেটো উত্তোলনের পয়সাও সংগ্রহ করতে পারছে না কৃষকরা। উৎপাদন খরচ তো দূরের কথা। আবার কোনো কোনো কৃষক বাজারে নিয়ে আসার পরে জমা খরচের পয়সা দেয়ার ভয়ে টমেটো ফেলে চুপিসারে চলে যাওয়ার আলামতও দেখা গেছে।এছাড়া জমিতেই পচে নষ্ট হচ্ছে শত শত মণ টমেটো।মৌসুমের শুরুতে ওই এলাকায় টমেটোর চাষিরা প্রতি কেজি টমেটো ১শ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করলেও বর্তমানে ১৬০থেকে ২০০ করে মন প্রতি টমেটো এখন বিক্রি হচ্ছে। টমেটো চাষি ইউপি সদস্য রোকন দেওয়ান কৃষক অলি মিয়া জানান, অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় ঋণ করে টাকা এনে টমেটোর চাষ করেছেন। কিন্তু বর্তমানের গরু ও সামান্য স্বর্ণালঙ্কার বিক্রয় করে ঋণ পরিশোধ করছেন।

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, রায়পুরে টমেটো আবাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে টমেটোর দাম বেশ চড়া ছিল। বর্তমানে টমেটোর দাম কমে যাওয়ায় টমেটো চাষিরা কিছুটা লোকসানের মধ্যে পড়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও দাম না পেয়ে কৃষকরা হতাশ হয়েছেন।