এমন দুলাভাইয়ের কঠিন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক

সম্পাদকীয়….

এটা শিশু ধর্ষণ

শিশু কারা? এই প্রশ্নের উত্তর হলো-শূন্য (০) থেকে আঠারো (১৮) বছরের নিচে সবাই শিশু। এটা শিশু অধিকার সনদ মতে। অতএব, ১২ ছরের একটি মেয়ে তো শিশুই। আর আমাদের দেশে শিশুদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলে আমরা দেখতে পাই, প্রতিদিন যেভাবে শিশু নির্যাতন হচ্ছে তাতে মনে হয় এই ধারাবাহিকতা আর ধামবে বলে মনে হয় না। যদি না এর লাগাম টেনে না ধরা যায়। শিশুরা অবুঝ ও সহজ সরল। তারা সহজেই দূরের অথবা কাছের মানুষকে বিশ^াস করে বেশি। আর এই বিশ^াসের সুযোগই গ্রহণ করলে দুষ্ট লোকেরা। সবচেয়ে বড় কথা হলো মেয়ে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় বেশিই ভুগছে। এসব বিষয়ে মেয়ে শিশুদের অভিভাবকদেরই সবচেয়ে বেশি সচেতন থাকতে হয়। মেয়ে শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বেশি। সবচেয়ে বেশি শিকার হয় কাছের মানুষের দ্বারাই। যৌন লালসার শিকারে পরিণত হয়ে নির্যাতিত হচ্ছে আমাদের কোমলমতি মেয়ে শিশুরা। প্রিয় সময়ে প্রকাশিত ‘দোহারে শালীকে ধর্ষণের ঘটনায় দুলাভাই কারাগারে’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, একটি সহজ সরল মেয়ে শিশুরা যার বয়স মাত্র ১২ বছর সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে নিজের কাছের মানুষের দ্বারা। নিজের দুলাভাই ফুসলিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে। মাত্র ১২ বছরের একটি মেয়ে অনেকটাই অবুঝ। সে এখনো ভালো মন্দের পার্থক্য বুঝতে পারে না। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখানোটা বড় অন্যায়। আর সে ধরনেরই প্রলোভন দেখিয়েছে দুলাভাই।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, শনিবার (২৯ মে) সকালে আদালতে প্রেরণ করেছে দোহার থানা পুলিশ। ধর্ষক আব্দুর রাজ্জাক উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের বড় রামনাথপুর গ্রামের জয়নাল বেপারীর ছেলে। সে তার কিশোরী শালী (১২) কে মুঠোফোনে কথা বলে ডেকে এনে দু’জনে পালিয়ে যায়। এরপর তাকে খুঁজে না পেয়ে মেয়েটির মা বাবা দোহার থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করে। এরপর ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ তাদের খুঁজে পায়নি। পরবর্তীতে মানবাধিকার কমিশন ঢাকা জেলা দক্ষিণের সাহায্যে উপজেলার মাঝিরকান্দা এলাকায় তাদের খোঁজ পেয়ে সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে ধর্ষণের মামলা দিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে আদালতে প্রেরণ করে দোহার থানা পুলিশ।

আমাদের কথা হলো, একটি মেয়ের সরল বিশ^াসের সুযোগ নেয়া হয়েছে এবং তার সর্বনাশ করা হয়েছে। বলা চলে দুলাভাই নিশ্চয় কাছেরই আত্মীয়। কিন্তু এমন ঘটনা আমাদের আরো সতর্ক করে দিচ্ছে। যে পরিবারে মেয়ে শিশু রয়েছে তাদের আরো সতর্ক হওয়া দরকার। খুব কাছের মানুষ হলেও এতো বিশ^াস করা মোটেও উচিত নয়। যৌন লালসা হিং¯্র পুরুষ জাতিকে আরো ািনর্মম করে তোলে। তখন বোনের সমতুল্য শালীকেও নষ্ট করতে বা তার ক্ষতি করতে দ্বিধা করে না। বিবেকে একটুও বাধে না। মানবতা তখন হারিয়ে যায়। আর পশুত্ব জেগে উঠে যৌন লিপ্সায় ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজের চরিত্র কলুষিত করে তোলে। নিজের বড় বোনের স্বামীকে নিয়ে শ্যালক শ্যালিকারা অনেক আনন্দ করে, বলা চলে রসিকতা করে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে পাপে লিপ্ত হওয়া কোনো মতেই ক্ষমার যোগ্য কাজ করা পশুত্বেরই সামিল। আর দুলাভাই হয়ে বোনতুল্য শালীকে ধর্ষণ করা হিং¯্রতারই লক্ষণ। নিজের সম্মান ও স্ত্রীর সম্মানের কথা না ভেবে শালীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া এবং একটি ভাড়া বাড়িতে রেখে প্রতি রাতে শারীরিক সম্পর্ক করা অবৈধ।

আমরা মনে করি, মেয়েদের আরো সতর্ক হওয়া উচিত। সেই সাথে পরিবারকেও মেয়ে শিশুদের প্রতি গুরুত্ব দেয়া দরকার। চোখের আড়াল হতে দেয়া উচিত নয় মেয়ে শিশুদের। খুব কাছের হলেও মেয়েদের কোনো পুরুষের সাথে কোথাও যেতে দেয়া উচিত নয়। এতে বিপদ হয়ে যেতে পারে, যে বিপদের জন্যে চিরজীবন দুঃখের বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে।

আমরা চাই, এমন দুলাভাইয়ের কঠিন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তাছাড়া শিশু ধর্ষণের মামলাও তার বিরুদ্ধে করা যেতে পারে এবং আইনের আওতায় নিয়ে তার জেল ও জরিমানা করা যেতে পারে।