টাঙ্গাইলের সখীপুরে মা হীন বাছুর বকনা গরুর দুধ খেয়ে বেড়ে ওঠছে!

মেহেদী হাসান রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :

বাচ্চা প্রসব ছাড়াই বকনার দুধ দেওয়ার ঘটনায় বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিলেন মালিক খোরশেদ আলম। দুধ পরিবারের কেউ খেতে চায় না। বাজারে নিয়ে বিক্রি করতেও মন সায় দেয় না। দুধ ফেলে দিতে হয়। কুকুর-বিড়ালকেও দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি মৃত গাভির বাছুর খুঁজতে থাকেন। প্রায় ১৫ দিন আগে পেয়েও যান। এখন সেই দুধ খাচ্ছে বাছুরটি।

ঘটনাটি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গড়গোবিন্দপুর গ্রামের। খোরশেদ আলম জানান, ১৫ দিন আগে খবর পান, পাশের কোকিলাপাবর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর একটি গাভি বাছুর প্রসব করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। গাভির ওলানের দুধ শুকিয়ে গেছে। বাছুর দুধ খেতে গেলে গাভিটি লাথি মারে। দুধের অভাবে বাছুরটি কাহিল। তিনি আট হাজার টাকায় বাছুরটি কিনে নেন।

খোরশেদ আলম বলেন, ‘বকনার দুধ নিয়ে বিপদেই পড়েছিলাম। অন্যদিকে পাশের গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ১৫ দিনের বাছুরটি মায়ের দুধ না পেয়ে কাহিল হয়ে পড়েছিল। তিনিও চিন্তায় পড়েছিলেন তাঁর বাছুরকে নিয়ে। এ অবস্থায় দুইজনেরই উপকার হয়েছে। বাছুরটি আগামী ৬ মাস দুধ খেতে পারলে তার মূল্য হবে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।’

অবশ্য এ ধরনের ঘটনায় আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই বলে জানালেন সখীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল জলিল।

তিনি বলেন, হরমোনের কারণে এমনটা হয়। তবে এমন ঘটনাও বিরল। একটি বকনা বাছুর প্রসব ছাড়াই আপনা-আপনিই দুধ দিচ্ছে। অন্যদিকে আরেক বাছুর জন্ম নিয়েও মায়ের দুধ পাচ্ছে না। খোরশেদ আলম একটি ভালো কাজই করেছেন। দুই বাছুরেই উপকার হয়েছে। সবই সৃষ্টির রহস্য।

সোমবার সকালে খোরশেদ আলমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, এক মাসের ওই বাছুর মায়ের মতোই বকনার দুধ খাচ্ছে। খোরশেদ আলমের স্ত্রী মর্জিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মায়ের মমতা, আদর ও ভালোবাসা পেয়ে যেমন একটি শিশু আস্তে আস্তে বড় হয়, তেমনি কেনা বাছুরটি বকনার দুধ খেয়ে বড় হচ্ছে। আগে গরুর ওলান থেকে দুধ সংগ্রহ করে কুকুর-বিড়ালকে খাওয়াইছি। এখন আর ওলান থেকে দুধ দোয়াতে হয় না।

ছোট বাছুরটিই বকনার দুধ পান করছে। এখন আমার খুব ভালো লাগছে, আনন্দ লাগছে।’খোরশেদ আলমের স্ত্রী মর্জিনার ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে তিনি গাভি পালন করছেন। ১৩ মাস আগে তাঁর পালিত বিদেশি জাতের গাভিটির বাছুর হয়। আর সেই বাছুরকে লালন-পালন করে আসছেন তিনি। তিন মাস আগে ১০ মাস বয়সী বাছুরকে গোসল করাতে গেলে গরুটির ওলান ফোলা দেখে ধারণা করেন, এতে দুধ জমেছে। তিনি তাৎক্ষণিক গরুটির ওলান থেকে দুধ সংগ্রহ করেন। প্রথম কয়েক দিন আধা লিটার দুধ পান তিনি। এরপর দুধের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ওই সময় বকনাটিকে দেখতে মানুষ ভিড় করে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী বাদল বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই এ ঘটনা। বাছুর জন্ম দেওয়া ছাড়াই বকনা বাছুরটি দুধ দিচ্ছে, এমন ঘটনা দেখতে উৎসুক মানুষ খোরশেদ আলমের বাড়িতে ভিড় করে। এখন আবার ছোট একটি বাছুর ওই বকনার দুধ খেয়ে বড় হচ্ছে।’

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

আরো পড়ুন : মেহ প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের কার্যকরী সমাধানসমূহ

আরো পড়ুন : গেজ, অশ্ব,পাইলসের সহজ চিকিৎসা