রায়পুরের ২১ পয়েন্টে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

মোঃ হৃদয় হোসেন, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলে স্থানীয় প্রশাসনের দূর্বল অভিযান ও যোগাযোগ ব্যবস্থ্যা অনুন্নতের সু‌যো‌গে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদী এবং তার সংযোগ খাল থেকে ২১টি স্থানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে নদীর ও খালের তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গনের ফলে নদীর তীরে থাকা ফসলি জমি ও ভিটেমাটি বিলীন হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ কথিত ফেসবুক নামধারী সাংবাদিকরা প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে ও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে বালু উত্তেলন জোরদার করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও বন্ধের কোনও উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন বলেন চরবংশীর আঃমতিন নামে একজন শিক্ষক। তাছাড়া অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী কয়েকবার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) জানিয়েছে। কিন্তু তারপরও বালু উত্তোলন বন্ধে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না ইউনিয়ন গুলোর ভূমি ও ইউপি প্রশাসন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চরআবাবিল ইউনিয়নের ‌মেঘনা বাজারের বালু ব্যবসায়ী সো‌হেল , সাজু মেল্লার ঘাট চরবংশী, ইউপির আলতাফ মাস্টার ঘাট এলাকার জুলহাস হাওলাদার, বিল্লাল ক‌বিরাজ, খা‌সের হাট এলাকার মোহাম্মদ আলী খায়ের, হাজীমারা সুইজগেট মো:জালাল ,আবু তাহের ,জা‌লিয়ার চর আলা‌মিন ছৈয়াল। সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতদিন চলছে বালু তোলা হচ্ছে।

অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তেলনকারী জালাল বলেন, বালু তো কন্ট্রাক্ট করে উঠাই।প্রশাসন, নেতা ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে এই ব্যবসা করি। বর্তমানে কিছু সাংবাদিকদের ও এলাকার ছেলেদের টাকা পয়সা না দেওয়ায় ভয়ে মেশিন বন্ধ করে রেখিছি।

বালু উত্তোলনের পর বিক্রির জন্য শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রাক্টর যোগে আনা-নেওয়ার ফলে এলাকার রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার বেশ কিছু আবাদি জমি ও বসতভিটে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে । বালু উত্তোলনের কারণে ইতিমধ্যে গ্রামের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেঁষে ১০-১৫ বিঘা জমি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে বলে দাবী করেন আঃরহিম নামে একজন কৃষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ‘মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীতে ১০টি স্থানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন এসব বালু উত্তোলনের পর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করাসহ পুকুর ও জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে।’ এরা এতোটাই প্রভাবশালী কোন ব্যাক্তি প্রতিবাদ করলে অপমান অপদস্থসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে।

এ বিষয়ে উত্তর চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন আহাম্মদ, দক্ষ্মিন চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজি, উত্তর চরআবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ উল্লাহ ও দক্ষিন চরআবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন বলেন, নদী থেকে বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে বলা হয়েছে। তারা আইনি ব্যবস্থা না নিলে আমাদের কিছুই করার নেই।

রায়পুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আক্তার জাহান সাথী বলেন, আমি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। অভিযান করার আগেই অপরাধীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা সহযোগিতা না করলে এদের ধরা অসম্ভব। তবে প্রভাবশালীরা যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন কোন ছাঁড় নেই।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরীন চৌধুরী বলেন,কয়েকবার অভিযান চালিয়ে ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। দ্রুত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ৪ই অক্টোবর দুপুর থেকে রায়পুর উপজেলার ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের আখন বাজার সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদী এবং মোল্লারহাট বাজার সংলগ্ন মেঘনা নদীর মোহনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে কোন অপরাধীকে পাওয়া যায়নি। তবে নদীগর্ভ হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য প্রায় দেড় কিলোমিটার ব্যাপী স্থাপিত পাইপ ধ্বংস করা হয়।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

আরো পড়ুন : মেহ প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের কার্যকরী সমাধানসমূহ

আরো পড়ুন : গেজ, অশ্ব,পাইলসের সহজ চিকিৎসা