মনপুরায় ভারী বৃষ্টিতে `পাকা ধানে মই’

রাকিবুল হাসান, মনপুরা প্রতিনিধি।
ভোলার মনপুরা উপকূলে ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদের প্রভাবে হঠাৎ ভারী বর্ষণে বৃষ্টির পানি জমে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দিগন্ত জোড়া ফসলের ক্ষেত।কৃষকের পাকা ধানে মই দিল টানা বৃষ্টি।ভারী বর্ষণে বহু স্থানে পাকা ধান কাদামাটির সঙ্গে লেপ্টে গেছে। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসলের এমন দৃশ্যে নির্বাক কৃষক। অসময়ে অগ্রহায়ণ এর অবিরাম বৃষ্টি শীতের আগাম সবজিও ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবে কৃষি অফিস বলছে, আমন ধানের বড় ধরনের ক্ষতি হবে না।তবে আমন ধান কৃষকে ঘরে তুলতে অনেক শ্রমিক ও খরচ বহন করতে হবে।

এদিকে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ভোর রাত থেকে ভারী বর্ষণে বৃষ্টির পানিতে ডুবে দুই হাজার একশত পাঁচ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। এই দিকে (৭ডিসেম্বর) সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেরীতে রোপন করা পাকা আমান ধানের ক্ষেতের ফসল বৃষ্টির পানিতে ডুবে রয়েছে।

কৃষক আবদুর রহমান বলেন, ফসলহানি কৃষকের মেরুদ ভেঙে দিয়েছে বৃষ্টি । এখন ধারকর্জ করে আবাদ করা আমন ফসল নষ্ট হওয়ায় সেই ঋণ কীভাবে পরিশোধ করবো,তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।

বৃষ্টিতে ধানের পাশাপাশি সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় সবজির দাম দুই থেকে তিনগুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্নিষ্টরা।কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভারী বর্ষণে জমিতে বৃষ্টির পানি জমে পাকা আমন ধান ২ হাজার হেক্টর, খেসারি ডাল ৫০ হেক্টর, শাক-সবজি ৫০ হেক্টর, গোল আলু ২ হেক্টর, গম ১ হেক্টর ও সরিষা ২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি হয়েছে।

সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এবার আমন চাষের লক্ষ্যে মনপুরা কৃষকদের কে নানা ধরনের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

এবার কৃষকরাও আমনে নজর দিয়েছেন। ফলে আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ধান ঘরে তোলার আগমূর্হূতে অতিবৃষ্টি কৃষকদের হতাশ করেছে।

মনপুরা উত্তর সাকুচিয়া চরগোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক ফকরুদ্দিন বলেন, ধানের দাম বেশি থাকায় এবার বেশি জমিতে আমন করেছেন তিনি। ধান কাটার কামলাও ঠিক করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার ধান কাটার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে সব ধান তলিয়ে গেছে।

এই ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী জানান, বৃষ্টির পানিতে দুই হাজার একশত পাঁচ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়। বিষয়টি উধ্বর্তন কর্মকতাদের অবহিত করা হয়েছে। কৃষি প্রণোধনা এলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া হবে।